|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ম্যাচ জেতার সঙ্গে সিরিজে টিকে থাকার লড়াই অস্ট্রেলিয়ার। এমন সমীকরণের ম্যাচে শেষ ওভারে অজিদের প্রয়োজন ছিল ১৯ রান। অধিনায়কের হাতে কোনো অপশন না থাকায় প্রথম ওভারে ১৩ রান দেয়ার পরও শেষ ওভারে বল হাতে তুলে নেন দাসুন শানাকা। প্রথম বলটা অবশ্য দুর্দান্তই করেছিলেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক। আউট সাইড অফ স্টাম্পের বল ব্যাটেই লাগাতে পারেননি ম্যাথু কুনেম্যান। তবে দ্বিতীয় বলে শানাকার ফুলটস বলে পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারি ছাড়া করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।
পরের তিন বলে দুই চার ও এক ডাবলে নিয়েছেন আরও ১০ রান। তাতে শেষ বলে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল ৫ রান। এমন সমীকরণে শানাকার স্লোয়ার ডেলিভারিতে ভড়কে যান কুনেম্যান। ডানহাতি এই পেসারের স্লোয়ার ডেলিভারিতে কভার দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে চারিথ আসালঙ্কার হাতে ক্যাচ তুলে নেন ১২ বলে ১৫ রান করা এই ব্যাটার। তাতে ৪ রানের জয়ে ম্যাচের সঙ্গে সিরিজও জিতে নেয় শ্রীলঙ্কা।
কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ২৫৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। তৃতীয় ওভারে চামিকা করুনারত্নের ফুলার ডেলিভারিতে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন অ্যারন ফিঞ্চ। সম্প্রতি বেশকবারই এভাবে আউট হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের এই অধিনায়ক। এরপর অবশ্য খানিকটা প্রতিরোধ গড়ে তুলেন ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৬৩ রান। দুনিথ ওয়াল্লালাগের ছক্কা মারার পরের বলেই সাজঘরে ফেরেন মার্শ। ওয়াল্লালাগের অফ স্টাম্পের টসড আপ ডেলিভারিতে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ২৬ রানে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার। মার্শ দারুণভাবে সঙ্গ দিলেও এদিন ব্যর্থ হয়েছেন মার্নাস ল্যাবুশেন। জেফ্রে ভ্যানডারসের গুড লেংথ ডেলিভারিতে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন ডানহাতি এই ব্যাটার।
বল খানিকটা উঁচুতে থাকায় রিভিউ নিয়েছিলেন ল্যাবুশেন। তবে শেষরক্ষা হয়নি তার। ১৪ রানে ফিরে যেতে হয় তাকে। এর মাঝে অবশ্য ৪৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ওয়ার্নার। পাঁচে নেমে ভালো শুরুর আভাস দিলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি অ্যালেক্স ক্যারি। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার টসড আপ লেগ ব্রেক ডেলিভারিতে ডিপ স্কয়ারে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে করেছেন ২০ রান।
ক্যারি ফেরার পর শানাকার বলে চার মেরে ট্রাভিস হেডের সঙ্গে পঞ্চাশ রানের জুটি পূর্ণ করেন ওয়ার্নার। পঞ্চাশ রানের জুটির পরই অবশ্য ফিরেছেন হেড। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার দ্রুতগতির ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। হেডের ব্যাট থেকে এসেছে ২৭ রান। ব্যর্থতার পাল্লা ভারী করে ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও।
মাহেশ থিকশানার বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন এই অলরাউন্ডার। যদিও শুরুতে আউট দেননি আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে ১ রান করা ম্যাক্সওয়েলকে ফেরার থিকশানা। পরের ওভারে আউট হয়েছেন ওয়ার্নারও। তাতে সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। ধনাঞ্জয়ার বলে উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিং হয়েছেন ওয়ার্নার। তাতে ৯৯ রানে ফিরতে হয় তাকে।
শেষ দিকে প্যাট কামিন্স ৪৩ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেললেও তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে অস্ট্রেলিয়া অল আউট হয় ২৫৪ রানে। শ্রীলঙ্কার হয়ে এদিন দুটি করে উইকেট নিয়েছেন করুনারত্নে, ভ্যানডারসে এবং ধনাঞ্জয়া। এ ছাড়া একটি করে উইকেট নিয়েছেন হাসারাঙ্গা, ওয়াল্লালাগে, থিকশানা ও শানাকা।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ৪৯ ওভারে ২৫৮ রান তুলে অল আউট হয় শ্রীলঙ্কা। স্বাগতিকদের হয়ে সর্বোচ্চ ১১০ রান করেছেন আসালঙ্কা। এ ছাড়া ধনাঞ্জয়া ৬০ এবং হাসারাঙ্গা ২১ রান করেছেন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন কুনেম্যান, কামিন্স ও মার্শ।