বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ

খালেদের তোপ সামলে জয়ের কাছাকাছি ওয়েস্ট ইন্ডিজ

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 20:37 শনিবার, 18 জুন, 2022

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে ৮৪ রানের বেশি লক্ষ্য দিতে পারেনি বাংলাদেশ। এই অল্প পুঁজি নিয়েই দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ যেভাবে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছে তা প্রশংসাযোগ্য। বিশেষ করে খালেদ আহমেদের বোলিংয়ের রেশ চোখে লেগে থাকার মতোই। ১১ বলের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ক্যারিবীয়দের নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছিলেন খালেদ। অবশ্য শেষদিকে জার্মেইন ব্ল্যাকউড ও জন ক্যাম্পবেলের জুটি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয়ের পথে নিয়ে গেছে অনেকখানি।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দিন শেষ করেছে ৩ উইকেটে ৪৯ রান নিয়ে। জয় পেতে চতুর্থ দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ৩৫ রান। দ্বিতীয় ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাফল্য পায় বাংলাদেশ। খালেদ তার প্রথম ওভারেই ক্যারিবীয় অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন। ফলে ১ রান করেই ফিরতে হয় তাকে।

এরপর নিজের পঞ্চম বলে রেমন্ড রেইফারকে ফেরান খালেদ। এই পেসারের বুক সমান বাউন্স ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন রেইফার। যদিও বল তার গ্লাভসে লেগে নুরুল হাসান সোহানের হাতে জমা পড়ে। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে এনক্রুমা বোনারের বিপক্ষে কট-বিহাইন্ডের জোড়ালো আবেদন করেছিলেন খালেদ।

যদিও আম্পায়ার সাড়া দেননি। রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। তবে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বল ব্যাটে লাগেনি। এর এক বল পরেই দারুণ এক সিমিং ডেলিভারিতে বোনারকে বোল্ড করেন এই টাইগার পেসার। বাকি সময়টা সাবলীল হাতে সামলেছেন ব্ল্যাকউড ও ক্যাম্পবেল। ব্ল্যাকউড ১৭ ও ক্যাম্পবেল ২৮ রান করে অপরাজিত থেকে দিনের খেলা শেষ করেছেন।

এর আগে অ্যান্টিগায় বাংলাদেশ ২ উইকেটে ৫০ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিল। অবশ্য সকালের শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশ দলের। দিনের খেলা শুরুর আধা ঘণ্টা পরই ধৈর্য্য হারিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা এই ব্যাটার কাইল মেয়ার্সের বুকের উপরে ওঠা বাউন্স বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন ১৭ রান করে।

এরপর মুমিনুল হক বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তিনি মেয়ার্সের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছেন। যদিও রিভিউ নিয়েছিলেন তিনি। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বল মিডল স্টাম্পে হিট করে লেগ স্টাম্পে ছুঁয়ে গেছে। ফলে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। প্রথম ইনিংসে এই ব্যাটার আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে।

ইনিংসের ৪০তম ওভারে তৃতীয় বলে মাহমুদুল হাসান জয়ের সিঙ্গেলে বাংলাদেশের সংগ্রহ শতরান ছাড়ায়। এর পরের বলেই কেমার রোচকে কাট করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন ১৭ রান করা লিটন দাস। দিনের শুরু থেকেই দারুণ ধৈর্য্যশীল ব্যাটিং করেছেন জয়।

যদিও ব্যক্তিগত ৪২ রানে তিনি রোচের করা অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে বল খেলতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন। এরপর নুরুল হাসান সোহানকে নিয়ে লাঞ্চের আগ পর্যন্ত সামাল দেন সাকিব আল হাসান। দ্বিতীয় সেশনে এই দুজনে বাংলাদেশের ইনিংস টেনেছেন। 

বিরতির পর বেশ কয়েকবার জীবন পেয়েছেন বাংলাদেশের দুই ব্যাটার সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহান। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন দুজনই। তাদের ব্যাটে ভর করে দ্বিতীয় ইনিংস লিড নিশ্চিত করে টাইগাররা। সাকিব ৮১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। হাফ সেঞ্চুরি থেকে মাত্র এক রান দূরে থেকে চা পানের বিরতিতে যান সোহান। দ্বিতীয় সেশনে ২৭ ওভার খেলে কোনো উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশ যোগ করে ৯৫ রান।

বিরতি শেষে ১১০ বলে নিজের হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সোহান। দারুণ খেলতে থাকা সাকিব ব্যক্তিগত ৬৩ রানে রোচের বলে সোজা কাভারে ক্যাচ দিয়েছেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের হাতে। ফলে সোহানের সঙ্গে তার ১২৩ রানের জুটি ভাঙে। এরপর মুস্তাফিজুর রহমান দারুণ এক ছক্কা মেরেছেন রোচকে।

যদিও তাকে বেশিদূর এগোতে দেননি জোসেফ। তিনি মুস্তাফিজকে ৭ রানে বোল্ড করে ফিরিয়েছেন। এরপর ১ রান করা এবাদত হোসেনকে বোল্ড করে বাংলাদেশের ইনিংস ২৪৫ রানে গুটিয়ে দিয়েছেন রোচ। এর মধ্যে দিয়ে ৫ উইকেটের কোটাও পূরণ হয়েছে এই ক্যারিবীয় পেসারের।

দ্বিতীয় ইনিংস শেষে বাংলাদেশের লিড দাঁড়ায় ৮৩ রানের। এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানে থেমেছিল বাংলাদেশের ইনিংস। জবাবে ১৬২ রানের লিড নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে অল আউট হয়েছিল ২৬৫ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)- ১০৩/১০ (৩২.৫ ওভার) (তামিম ২৯, লিটন ১২, সাকিব ৫০, এবাদত ৩; সেলেস ৩/৩৩, জোসেফ ৩/৩৩, রোচ ২/২১)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ (প্রথম ইনিংস)- ২৬৫/১০ (১০২.৫ ওভার) (ব্র্যাথওয়েট ৯৪, ব্ল্যাকউড ৬৩, ক্যাম্পবেল ২৪, বোনার ৩৩; মিরাজ ৪/৫৯, খালেদ ২/৫৯)

বাংলাদেশ (দ্বিতীয় ইনিংস)- ২৪৫/১০ (৯০.৫ ওভার) (তামিম ২২, জয় ৪২, শান্ত ১৭, লিটন ১৭, সাকিব ৬৩, সোহান ৬৪; রোচ ৫/৫৩, জোসেফ ৩/৫৫)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ (দ্বিতীয় ইনিংস)- ৪৯/৩ (১৫ ওভার) (ব্ল্যাকউড ১৭*, ক্যাম্পবেল ২৮*; খালেদ ৩/১৪)