বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ

দুঃস্বপ্নের ব্যাটিংয়ের পর হতাশা বাড়ালেন ফিল্ডাররা

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 19:40 বৃহস্পতিবার, 16 জুন, 2022

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

অ্যান্টিগায় বাংলাদেশকে ১০৩ রানে গুটিয়ে দিয়ে রান তুলতে ঘাম ঝড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটারদের। ইনিংসের প্রথম ৫ ওভারে তো তারা রানের খাতাই খুলতে পারেনি। এরপর ১৫ ওভারে ১৫ রান নিয়ে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে গিয়েছিল তারা।

বিরতি থেকে ফিরে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন দুই ক্যারিবীয় ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেল। খানিক বাদেই ২৪ রান করা ক্যাম্পবেলকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেটের স্বাদ এনে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। ক্যাম্পবেল একটু এগিয়ে মুস্তাফিজের বল ডিফেন্স করেছিলেন।

যদিও তা ব্যাটের কানায় লেগে দুটি ড্রপ খেয়ে স্টাম্পে লাগে। ফলে আউট হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ক্যাম্পবেলকে। এক ওভারে পরে আরেকটি উইকেট যোগ হতে পারতো মুস্তাফিজের নামের পাশে। ১৬ রানে ব্যাট করা ব্র্যাথওয়েটের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল চলে গিয়েছিল স্লিপে।

সেকেন্ড স্লিপে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত ও থার্ড স্লিপে থাকা লিটন দাস বল হাতে জমাতে পারেননি ডাইভ দিয়েও। এর আগে ইনিংসের তৃতীয় ওভারেও একবার জীবন পেয়েছিলেন ব্র্যাথওয়েট। মুস্তাফিজের করা সেই বলে লেগ সাইডের বাইরে খেলতে চেয়েছিলে ব্র্যাথওয়েট। তবে বল চলে গিয়েছিল গালিতে। সহজ ক্যাচ নিতে পারেননি মুমিনুল হক।

দুইবার জীবন পাওয়ার পর ব্র্যাথওয়েট ৪১ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন। ১২ রান করে তার সঙ্গী এনক্রুমাহ বোনার। বাংলাদেশ বোলিং ইনিংসে দ্বিতীয় সাফল্যটি পেয়েছে এবাদত হোসেনের হাত ধরে। তিনি ১১ রান করা রেমন্ড রেইফারে ইনসাইডএজ করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন। ক্যারিবীয়রা দিন শেষ করেছে ২ উইকেটে ৯৫ রান নিয়ে।

দিনের শুরুতে টস জিতে আগে বোলিং নিয়েছিলেন ব্র্যাথওয়েট। ম্যাচ শুরুর পরই বোঝা যায় অধিনায়ক সিদ্ধান্ত ভুল নেননি। ১৬ রানের মধ্যে বাংলাদেশের টপ অর্ডারের তিন উইকেট তুলে নিয়ে সেশনটি নিজেদের করে নেয়ার আভাষ দিয়েছিলেন ক্যারিবীয় বোলাররা। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই কোনো রান না করে কেমার রোচের বলে স্লিপে বোনারের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন মাহমুদুল হাসান জয়।

এরপর নাজমুল হোসেন শান্তও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তিনি রোচের দ্বিতীয় ওভারে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন কোনো রান না করেই। দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর তামিমকে সঙ্গ দিতে পারেননি মুমিনুল। তিনিও কোনো রান করতে পারেননি। জেইডেন সিলেসের স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে জার্মেইন ব্ল্যাকউডকে ক্যাচ দেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।

লিটনকে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দেয়ার চেষ্টা করছিলেন তামিম। যদিও পানি পানের বিরতির পর ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারেননি তিনি। ব্যক্তিগত ২৯ রানে তিনি আলজারি জোসেফের লেগ সাইডের বাইরে বল তাড়া করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন।

লিটনকে আউট করেছেন কাইল মেয়ার্স। লিটন এগিয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন। যদিও বল ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক জসুয়া দা সিলভার হাতে। নুরুল হাসান সোহান নিজের খেলা দ্বিতীয় বলে এলবিডব্লিউ হয়েছেন সেই মেয়ার্সের বলেই। 

যদিও রিভিউ নিয়েছিলেন। তবে টিভি আম্পায়ার বহাল রাখেন ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকেই। ফলে কোনো রান না করেই ফিরতে হয় এই উইকেটরক্ষক ব্যাটারকে। লাঞ্চের আগে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে বিপর্যয় সামাল দিতে লড়েছে। বাংলাদেশ প্রথম সেশন শেষ করে ৬ উইকেটে ৭৬ রান নিয়ে।

বিরতির পর এক রান যোগ করেই মেহেদী হাসান মিরাজ উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন জেইডেন সেলেসের বলে। রানের খাতা খুলতে পারেননি মুস্তাফিজুর রহমানও। তিনি সেলেসের তৃতীয় শিকার হয়েছেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। এরপর এবাদত হোসেনকে নিয়ে ৬৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সাকিব। এর ফলে বাংলাদেশের সংগ্রহ একশো ছাড়িয়ে যায়।

হাফ সেঞ্চুরির পর অবশ্য বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি সাকিব। তিনি আলজারি জোসেফের ওপর চড়াও হতে গিয়ে লং অনে সীমানার কাছে ক্যাচ দেন রোচের হাতে। এর দুই বল পর জোসেফ খালেদের উইকেট তুলে নিলে বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়ে যায় ১০৩ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

বাংলাদেশ- ১০৩/১০ (৩২.৫ ওভার) (তামিম ২৯, লিটন ১২, সাকিব ৫০, এবাদত ৩; সেলেস ৩/৩৩, জোসেফ ৩/৩৩, রোচ ২/২১)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ- ৯৫/২ (৪৮ ওভার) (ব্র্যাথওয়েট ৪২*, ক্যাম্পবেল ২৪, বোনার ১২*; মুস্তাফিজ ১/১০, এবাদত ১/১৮)