বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজ

ম্যাথুসের সেঞ্চুরিতে দিনটা শ্রীলঙ্কার

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 09:35 রবিবার, 15 মে, 2022

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

দিনের শুরুতে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে মোমেন্টাম এনে দিয়েছিলেন নাঈম হাসান। সেই মোমেন্টাম অবশ্য পুরোটা দিন ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। কুশল মেন্ডিস আর ম্যাথুসের দারুণ জুটিতে দ্বিতীয় সেশনটা দারুণ কাটায় শ্রীলঙ্কা। দিনের শেষ সেশনের শুরুতে দুটি উইকেট তুলে নিলেও ম্যাথুসের সেঞ্চুরিতে পুরো দিনটা নিজেদের করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। মেন্ডিসের হাফ সেঞ্চুরি ও ম্যাথুসের সেঞ্চুরিতে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৫৮ রান।

টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নামা বাংলাদেশের সকালের শুরুটা হয়েছে রিভিউয়ে ব্যর্থ হয়ে। পেসার শরিফুল ইসলামের বল সরাসরি আঘাত হানে ওশাদা ফার্নান্দোর প্যাডে। বাংলাদেশ আবেদন করলেও তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার। স্বাগতিকরা রিভিউ নিলে বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায় শরিফুলের বল লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে। তাতে দিনের প্রথম রিভিউয়েই ব্যর্থ হয় টাইগাররা।

চট্টগ্রামে এদিন ব্যাটিংয়ে নেমে প্রত্যাশিত শুরু করতে পারেনি শ্রীলঙ্কাও। দলীয় ২৩ রানে নিজেদের প্রথম উইকেট হারায় সফরকারীরা। বোলিংয়ে এসে নিজের প্রথম ওভারে বাংলাদেশকে উইকেট এনে দেন নাঈম হাসান। ডানহাতি অফ স্পিনারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল কাট করতে গিয়ে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন দিমুথ করুনারত্নে।

নাঈমের ভেতরে ঢোকা বল কাট করলেও তা ব্যাটে লাগার আগে করুনারত্নের প্যাড ছুঁয়ে যায়। তাতে ৯ রানে সাজঘরে ফেরেন দারুণ ফর্মে থাকা লঙ্কান অধিনায়ক। করুনারত্নে ফিরলেও থিতু হয়ে গিয়েছিলেন ফার্নান্দো। তবে ফার্নান্দোকে ফিরিয়ে প্রথম সেশনটা নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশ।

নাঈমের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কট বিহাইন্ড হয়েছেন ফার্নান্দো। ৭৬ বলে ৩৬ রান করা ডানহাতি এই ব্যাটার ফিরলে ভাঙে কুশল মেন্ডিসের সঙ্গে জমে ওঠা ৪৩ রানের জুটি। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে নিয়ে মেন্ডিস যখন প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় তখন আরও একটি রিভিউয়ে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। 

শরিফুলের অফ স্টাম্পের বাইরের বল হুট করে ভেতরে ঢুকে ম্যাথুসের প্যাডে আঘাত করে। আম্পায়ার আউট না দেয়ায় রিভিউ নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মুমিনুল হক। ইম্প্যাক্ট অফ স্ট্যাম্পের বাইরে থাকায় বেঁচে যান ম্যাথুস, আর রিভিউ হারায় বাংলাদেশ। 

এরপর দ্বিতীয় সেশনের পুরোটা সময় দাপট দেখিয়েছেন ম্যাথুস ও মেন্ডিস। দলের বিপর্যয়ে দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করা মেন্ডিস এদিন হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ৯৩ বলে। মেন্ডিসের হাফ সেঞ্চুরির পর রিভিউ নিয়ে বেঁচেছেন ম্যাথুস। তাইজুল ইসলামের বলে ম্যাথুসকে কট বিহাইন্ড আউট দিয়েছিলেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান ডানহাতি এই ব্যাটার।

চা বিরতিতে যাওয়ার আগে ১১১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ম্যাথুস। দ্বিতীয় সেশনে ম্যাথুস ও মেন্ডিসের দাপটে কোনো উইকেট তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। দিনের দ্বিতীয় সেশনে উইকেটশূন্য থাকলেও চা বিরতি থেকে ফিরেই বাংলাদেশকে উইকেট এনে দেন তাইজুল। 

চা বিরতি থেকে ফেরার প্রথম বলেই তাইজুলকে উইকেট দিয়ে ফেরেন হাফ সেঞ্চুরিয়ান মেন্ডিস। বাঁহাতি এই স্পিনারের শর্ট ডেলিভারিতে মিড উইকেটে থাকা নাঈমের ক্যাচ দিয়ে ৫৪ রানে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার। হাফ সেঞ্চুরির পর জীবন পেয়েছেন ম্যাথুস। তাইজুলের টসড আপ ডেলিভারিতে এজ হয়ে বল স্লিপে যায়। তবে সেটা লুফে নিতে পারেননি মাহমুদুল হাসান জয়। 

সাকিব আল হাসানের লেংথ ডেলিভারিতে বল সরাসরি ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার প্যাডে আঘাত হানে। প্যাডে লাগা সেই বলে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন জয়। আম্পায়ার আবেদনে সাড়া না দেয়ায় তৎক্ষণাৎ রিভিউ নেন সাকিব। রিপ্লেতে দেখা যায়  বল ধনাঞ্জয়ার প্যাডে লাগার আগে বল ব্যাটে লাগে। তাতে ক্যাচ আউট হয়ে ফেরেন ৬ রান করা ধনাঞ্জয়া।

ডানহাতি এই ব্যাটার ফেরার পর বাংলাদেশের বোলাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করলেও উইকেট তুলে নিতে পারেনি। বরং সাকিব-তাইজুলদের দেখেশুনে খেলে সেঞ্চুরি তুলে নেন ম্যাথুস। পেসার শরিফুল ইসলামের লেগ স্টাম্পের ফুল অন ডেলিভারিতে মিড অন দিয়ে চার মেরে ১৮৩ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ম্যাসুথ। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাথুসের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি।

শেষ বিকেলে বাংলাদেশের বোলারদের বেশ ভালোভাবেই সামলেছেন ম্যাথুস ও দীনেশ চান্দিমাল। সেঞ্চুরি তুলে নেয়া ম্যাথুস প্রথম দিন শেষে অপরাজিত আছেন ১১৪ রান। ম্যাথুসকে দারুণভাবে সঙ্গ দেয়া আক্রমণাত্বক চান্দিমাল অপরাজিত ৩৪ রানে। বাংলাদেশের হয়ে নাঈম দুটি ও সাকিব-তাইজুল একটি করে উইকেট নিয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা- ২৫৮/৪ (৯০ ওভার) (ম্যাথুস ১১৪*, মেন্ডিস ৫৪, ফার্নান্দো ৩৬, চান্দিমাল ৩৪* নাঈম ২/৭১, তাইজুল ১/৭৩, সাকিব ১/২৭)