বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ২০২২

তামিমের চাওয়া পূরণে ব্যস্ত সিডন্স, বললেন 'সময়' লাগবে

আবিদ মোহাম্মদ

আবিদ মোহাম্মদ
প্রকাশের তারিখ: 17:21 শনিবার, 26 ফেব্রুয়ারি, 2022

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||

ঘটনা বাংলাদেশ-আফনিস্তানের দ্বিতীয় ওয়ানডের আগের দিনের। চলছিল গণমাধ্যমকর্মী ও রাসেল ডমিঙ্গোর প্রশ্ন-উত্তর পর্ব। বাংলাদেশের প্রধান কোচ সে সময় অবশ্য একটু কড়াভাবেই উত্তর দেয়ায় ব্যস্ত। কিন্তু এসব ছাপিয়েও দু চোখ তখন আটকে যায় জেমি সিডন্স ও তামিম ইকবালের নেটে। নবনিযুক্ত এই ব্যাটিং কোচের বিশেষ ক্লাসে ব্যস্ত ওয়ানডে দলপতি।

বাংলাদেশে পা রেখে সিডন্স বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) খেলা দেখতে গিয়েছেন মিরপুর ও সিলেটে। পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করা এই অস্ট্রেলিয়ান সিলেট থেকে ফিরে করোনা আক্রান্ত হন। এরপর সুস্থ হয়ে যোগ দেন চলমান ওয়ানডে সিরিজের ক্যাম্পে।

প্রথম দিন অনুশীলনে সিডন্স ব্যস্ত ছিলেন সবাইকে নিয়েই। টুকিটাকি সবাইকে সময় দিলেও চার সিনিয়র তামিম, মুশফিক মাহমুদউল্লাহ ও সাকিবের প্রতি বাড়তি মনোযোগী ছিলেন তিনি। সেদিনও ওয়ানডে দলপতিকে নিয়ে কাজ করেছেন দীর্ঘক্ষণ। যদিও প্রথম ওয়ানডেতে এর সুফল আসেনি।

তাই দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে তামিমকে নিয়ে আরও বেশি মনোযোগী ছিলেন সিডন্স। বিশেষ করে তার ফুটওয়ার্ক নিয়ে। কিন্তু টানা ২ ম্যাচের আগে কাজ করেও বড় সুফল আসেনি। তবে অস্ট্রেলিয়ান এই কোচ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এতো দ্রুত ফলাফল আশা করাও ঠিক না।

দুটি ওয়ানডেতেই তামিম আউট হয়েছেন ফজল হক ফারুকির বিপক্ষে। শুরুর ১০ ওভারের বাঁহাতি এই পেসারের সুইং বেশ ভুগিয়েছে তাকে। টানা দুই ম্যাচে আউট হয়েছেন লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে। ফারুকির ভেতরে আসা বলের লাইন মিস করে।

প্রথম ওয়ানডেতে এমনভাবে আউট হওয়ার পর ঐচ্ছিক অনুশীলনে এসে গুরুত্বের সঙ্গে ভুল শুধরানোর চেষ্টা করেন তামিম। প্রায় আধা ঘন্টার মতো টানা অনুশীলন করেছেন, যেখানে তিনি বাড়তি মনোযোগী ছিলেন মিডল অ্যান্ড অফ স্ট্যাম্পের বলগুলো নিয়ে।

এক পর্যায়ে এমনও দেখা গিয়েছে সিন্ডন্স স্ট্যাম্প দিয়ে মিডলে ডাগ কেটে তামিমকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন পা কোন দিকে যাবে আর কতখনি ফাঁকা থাকবে। তবে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে এর প্রতিফলন মাঠে ঘটাতে পারেননি ওয়ানডে দলপতি। এ জন্যই সিডন্স জানিয়েছেন, তামিমের এই সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন 'সময়'।

বাংলাদেশে আবারও এসে প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সিডন্স বলেন, 'তামিম চাইছে ওর সামনের পা আরও সোজা রাখতে। এটা তো একদিনে হবে না। এটা একটি দীর্ঘমেয়াদী কাজ। ওকে যদি আরও তিন-চার বছর খেলতে হয় তাহলে এই জিনিসটা ওকে ঠিক করতে হবে।'

'তাহলে সে আরও সফলতা পাবে। যদি সে এলবিডাব্লিউয়ে আউট না হয়, তাহলে প্রতিপক্ষের ওকে সাজঘরে ফেরাতে অনেক কঠিন হবে। তাছাড়া সে অনেক রানও করতে পারবে। আমি দেখতে পাচ্ছি সামনে আরও সুদিন অপেক্ষা করছে ওর জন্য, ওর সেরাটা সামনে আসবে', আরও যোগ করেন তিনি।

তামিম-সাকিবরা যখন জাতীয় দলে নতুন সে সময় বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ ছিলেন সিডন্স। ২০০৭ সাল থেকে ২০১১ বিশ্বকাপ পর্যন্ত তার অধীনেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বড় নাম হয়ে ওঠেন এই চারজন। নতুন দায়িত্ব কেন তিনি আবারও বাংলাদেশে ফিরলেন এর খোলাসাও করেছেন।

সিডন্স বলেন,'আমি কোচিং পদে আসার জন্য উন্মুক্ত ছিলাম। আর আমার বাংলাদেশের সাথে সবসময়ই যোগাযোগ ছিল। সেটা হোক বোর্ড মেম্বার বা ক্রিকেটার। তখন ব্যাটিং পরামর্শকের প্রস্তাবটা পাই। হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের সঙ্গে কাজ করতে হবে। সঙ্গে জাতীয় দলের জুনিয়র ক্রিকেটাররাও থাকবে।'

'এছাড়া আমি জাতীয় দলের সঙ্গে তো কাজ করতামই। সেটা সল্প মেয়াদে হোক বা দীর্ঘ মেয়াদে হোক। অনেক কিছুই নিশ্চিত ছিলাম না অবশ্য, তবে আমি এসবের তোয়াক্কা করিনি। আমি শেষবার এসেছিলাম তখন বাংলাদেশকে ভালোবেসেছিলাম। অনেকেই এটা বিশ্বাস করেনি। শেষ তিন বছর এখানে যখন কাজ করেছি। আমি সবসময়েই এখানে ফেরার সুযোগের জন্য মুখিয়ে ছিলাম, এখন এখানেই আছি', আরও যোগ করেন তিনি।