ফিক্সিং

সাড়ে ৩ বছরের জন্য নিষিদ্ধ টেলর

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 19:59 শুক্রবার, 28 জানুয়ারি, 2022

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েও ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলকে (আইসিসি) দীর্ঘদিন না জানানোর কারণে সাড়ে তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন ব্রেন্ডন টেলর। ক্রিকেটের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে জিম্বাবুয়ের সাবেক এই অধিনায়ক তার শাস্তি মেনে নিয়েছেন।

টেলরের শাস্তি শুরু হচ্ছে ২৮ জানুয়ারি থেকে। তার বিরুদ্ধে চারটি অপরাধের জন্য শাস্তি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে  ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েও না জানানো, জুয়াড়িদের কাছ থেকে উপহার গ্রহণ ও অর্থ গ্রহণ এবং তাদের সেবা নেয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এর সঙ্গে আলাদাভাবে একটি অ্যান্টি-ডোপিং ধারা ভঙ্গের কারণে শাস্তি পেয়েছেন তিনি।

এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি টেলর এক টুইটের মাধ্যমে নিজের বিবৃতি প্রকাশ করেছিলেন। সেখানে ভারতীয় এক ব্যবসায়ী তাকে ব্ল্যাকমেইল করে ফিক্সিং করতে বাধ্য করেছিলেন বলে স্বীকার করেছেন সাবেক এই জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক।

মূলত স্পন্সরশিপ ও জিম্বাবুয়েতে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আয়োজনের আশ্বাস দিয়ে তাকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এর  বিনিময়ে তাকে ১৫ হাজার মার্কিন ডলার দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিল তারা। এর আগের ৬ মাস জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট থেকে কোনো টাকা পাচ্ছিলেন না তিনি। আর্থিক কষ্টের কথা বিবেচনা করে তিনি ভারতে যেতে রাজি হয়েছিলেন।

এই ঘটনার বিবরণ দিয়ে টেলর বলেছিলেন, ‘প্রায় দুই বছর ধরে এই বোঝা বয়ে নিয়ে চলেছি আমি। আমাকে অন্ধকার এক জগতে নিয়ে গেছে এটি, মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। সম্প্রতি কাছের বন্ধু ও পরিবারের কাছে এ ঘটনা খুলে বলেছি। তবে যে সমর্থন ও ভালোবাসা পেয়েছি, তাতে মনে হয়েছে শুরুতে অতিরিক্ত বিব্রত বোধ করেছিলাম।’

এই ঘটনার সুত্রপাত নিয়ে টেলরের ভাষ্য, ‘২০১৯ সালের অক্টোবরে ভারতীয় এক ব্যবসায়ী স্পনসরশিপ নিয়ে আর জিম্বাবুয়েতে একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট শুরু করার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করতে ডেকে পাঠান। এ ভ্রমণের বিনিময়ে আমাকে ১৫ হাজার মার্কিন ডলার দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।’

এরপর তাকে এক পার্টিতে কোকেইন অফার করা হয়েছিল। টেলর কোনো কিছু ভাবনা চিন্তা না করে সেই অফার গ্রহণও করেন। এরপর সেই ঘটনার ভিডিও নিয়ে তাকে স্পট ফিক্সিংয়ের জন্য ব্ল্যাকমেইল করা হয়। হোটেল রুমে তাকে ঘিরে ধরেছিলেন ৫ জন লোক।

নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে সেই জুয়াড়িদের দেয়া ১৫ হাজার ডলার গ্রহণ করেছিলেন টেলর। ফিক্সিংয়ের পর আরও ২০ হাজার ডলার দেয়ার কথা ছিল তাদের। দুই বছর ধরেই এই ঘটনা নিয়ে আত্মাপরাধে ভুগছিলেন টেলর। তাই নিজে থেকেই এই ঘটনা সবার সামনে এনেছেন তিনি।

এই ঘটনায় রাজি হওয়া প্রসঙ্গে টেলর বলেন, ‘দুশ্চিন্তা যে হয়নি, সেটি দাবি করব না। তবে সে সময়ে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট থেকে প্রায় ৬ মাসের বেতন পাইনি আমরা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ে খেলা চালিয়ে যেতে পারবে কি না—সেটাও প্রশ্নসাপেক্ষ ছিল। ফলে আমি ভারতে গেলাম, কথামতো আলোচনা হলো। হোটেলে শেষ রাতে ওই ব্যবসায়ী ও সহকর্মীরা আমাকে এক নৈশভোজে নিয়ে গেলেন।’

মাদক গ্রহণের কথা স্বীকার করে টেলর বলেন, ‘আমরা মদ্যপান করছিলাম, এমন সময় আমাকে প্রকাশ্যে কোকেন নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়, যেটা তারাও নিচ্ছিল। বোকার মতো রাজি হয়ে যাই আমি। অসংখ্যবার এরপর এটা নিয়ে ভেবেছি, সে রাতের ঘটনাপ্রবাহ মনে করে এখনো অসুস্থ বোধ করি—তারা আমাকে কীভাবে বোকা বানিয়েছিল!’