নিউজিল্যান্ড-বাংলাদেশ সিরিজ

শেষ বিকেলে দুর্ধর্ষ এবাদত, চালকের আসনে বাংলাদেশ

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 05:04 মঙ্গলবার, 04 জানুয়ারি, 2022

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডকে ৩২৮ রানে অল আউট করে দেয়ার পর, মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের চতুর্থ দিন ৪৫৮ রান করে থেমেছে বাংলাদেশ। ফলে প্রথম ইনিংসে ১৩০ রানের লিড পেয়েছে টাইগাররা। এই লিড অতিক্রম করেছে নিউজিল্যান্ড। যদিও এবাদত হোসেনের আগুনে বোলিংয়ে শেষ দিন সুবিধাজনক অবস্থান থেকেই শুরু করবে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে কিউইদের সংগ্রহ পাঁচ উইকেটে ১৪৭ রান, লিড ১৭ রানের।

নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম বলেই ফিরতে পারতেন কিউই অধিনায়ক টম লাথাম। তাসকিনের আহমেদের বল বাঁহাতি এই ব্যাটারের প্যাডে লাগলেও আউট দেননি আম্পায়ার। রিভিউয়ে দেখা যায় বলটি স্টাম্প মিস করায় বেঁচে যান কিউই অধিনায়ক।

শরিফুল ইসলামের শর্ট অব লেংথের বল ইনসাইড এজ হয়ে গালি এবং সেকেন্ড স্লিপের মাঝ দিয়ে চলে যাওয়ায় আরও একবার বেঁচে যান লাথাম। ১২০ রানে পিছিয়ে থেকে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় নিউজিল্যান্ড। বিরতি থেকে ফিরেই কিউই ওপেনার টম লাথামকে বোল্ড করে ফেরান তাসকিন আহমেদ। তারা দলীয় ২৯ রানে প্রথম উইকেট হারায়।

এরপর ডেভন কনওয়েকে নিয়ে বেশ ভালোই সামাল দিচ্ছিলেন উইল ইয়ং। যদিও চা পানের বিরতির আগে এবাদত হোসেনের বলে ব্যক্তিগত ১৩ রানে ফিরতে হয়েছে কনওয়েকে। এবাদতের ইনসাইড এজ হওয়া বল গালিতে ডাইভিং ক্যাচে মুঠোবন্দি করেছেন সাদমান ইসলাম।

তারপর ইয়ং এবং টেলরের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে সহজেই লিডের ছোঁয়া পায় নিউজিল্যান্ড। হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ইয়ং। ইয়ং-টেলরের ৭৩ রানের জুটি ভাঙেন এবাদত। ৬৯ রান করা ইয়ংকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন তিনি।

একই ওভারে হেনরি নিকোলসকেও বোল্ড করেন এবাদত। তিন বলের ব্যবধানে দুই ব্যাটারকে বোল্ড করে কিউইদের চেপে ধরেন তিনি। নিজের পরের ওভারে টম ব্লান্ডেলকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন টাইগার এই পেসার। নিকোলস ও ব্লান্ডেল দুজনই ফিরেন শুন্য রানে।

অভিজ্ঞ রস টেলর ৩৭ ও রাচিন রবীন্দ্র ৬ রান নিয়ে শেষ দিন শুরু করবেন। বাংলাদেশের হয়ে এবাদত চারটি ও তাসকিন একটি উইকেট লাভ করেন।

এর আগে ৬ উইকেটে ৪০১ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে খানিকটা ধীরগতির শুরু করে বাংলাদেশ। তবে নিউজিল্যান্ডের পেসাররা মেহেদী হাসান মিরাজ এবং ইয়াসির আলী রাব্বির মনোবলে চিড় ধরাতে না পারায় দারুণ ব্যাটিং করে টাইগাররা। অনায়াসে ব্যাটিং করলেও দুবার আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউ নিয়ে উইকেট বাঁচাতে হয়েছে মিরাজকে।

রবীন্দ্রর বলে সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি ডানহাতি এই ব্যাটার। তাতে নিউজিল্যান্ডের আবেদনে মিরাজকে আউট দেন ক্রিস ব্রাউন। তবে সতীর্থ রাব্বির সঙ্গে কথা বলে রিভিউ নেন মিরাজ। পরবর্তীতে দেখা যায় বল ব্যাটে না লাগলেও গ্লাভস স্পর্শ করে যায়। তাতে বেঁচে যান তিনি।

৬ বল পর আরও একবার লেগ বিফোরের ফাঁদে মিরাজ। পেসার নেইল ওয়েগনারের ভেতরে ঢোকা বলে আবেদন করলে সোজাসাপ্টা আঙুল তুলেন ক্রিস গ্যাফানি। তবে সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে রিভিউ নেন মিরাজ। বল প্যাডে লাগার আগে ব্যাটে লাগায় সেবার বেঁচে যান ডানহাতি এই ব্যাটার।

এরপর বেশ দেখেশুনে ব্যাটিং করেন মিরাজ এবং রাব্বি। এদিন সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ১ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মিরাজ। বাংলাদেশের ১৬তম ক্রিকেটার হিসেবে ১ হাজার রান করেছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। সেই সঙ্গে সাকিব আল হাসান এবং মোহাম্মদ রফিকের পর তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে ১০০ উইকেটের সঙ্গে ১ হাজার করেছেন মিরাজ। এমন রেকর্ডের দিনের আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে তাকে।

টিম সাউদির অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে উইকেট কিপার টম ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৪৭ রান করা মিরাজ। তাতে ৪৩৩ বল পর উইকেটের দেখা পান পেসার সাউদি। এরপর মাটি কামড়ে উইকেটে পড়ে থাকা ইয়াসিরও আউট হয়েছেন ২৬ রানে। কাইল জেমিসনের বলে ব্লান্ডেলকে ক্যাচ দিয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটার।

রাব্বি ফেরার পর তাসকিন আহমেদকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলে সাজঘরে পাঠান সাউদি। রিভিউ নিলেও শেষরক্ষা হয়নি তার। বাঁহাতি এই ব্যাটার করেছেন ১২ বলে ৫ রান। এদিকে ৭ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের বলে শরিফুল ইসলাম আউট হলে ৪৫৮ রানে অল আউট হয় বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

নিউজিল্যান্ড (প্রথম ইনিংস)- ৩২৮/১০ (ওভার ১০৮.১) (কনওয়ে ১২২, ইয়ং ৫২, নিকোলস ৭৫; শরিফুল ৩/৬৯, মিরাজ ৩/৮৬, মুমিনুল ২/৬)

বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)- ৪৫৮/১০ (ওভার ১৭৬.২) (জয় ৭৮, শান্ত ৬৪, মুমিনুল ৮৮, লিটন ৮৬, ইয়াসির ২৬, মিরাজ ৪৭; ওয়েগনার ৩/১০১, বোল্ট ৪/৮৫)

নিউজিল্যান্ড (দ্বিতীয় ইনিংস)- ১৪৭/৫ (৬৩ ওভার) (লাথাম ১৪, ইয়ং ৬৯, কনওয়ে ১৩, টেলর ৩৭*, নিকোলস ০, ব্লান্ডেল ০, রবীন্দ্র ৬*; তাসকিন ১/ ২২, এবাদত ৪/৩৯)