বাংলাদেশ - পাকিস্তান সিরিজ

৬১৭ দিন পর মাঠে ফিরে উচ্ছ্বসিত দর্শকরা

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 14:40 শুক্রবার, 19 নভেম্বর, 2021

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে মানুষের চাহিদা। এক সময় পুরো দেশজুড়ে দাপিয়ে বেড়ানো ফুটবলের জনপ্রিয়তা ছাপিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের নাম্বার ওয়ান খেলা ক্রিকেট। হাজারো ব্যর্থতার পরও বাংলাদেশ দলকে সমর্থন দিতে একটুও কার্পণ্য করেন না সমর্থকরা। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মতো করোনার সময়ে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ উতরে ঘরের মাঠে ক্রিকেট ফিরিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

ঘরোয়ার ক্রিকেটের পর বছরের শুরুর দিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরায় বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর বাংলাদেশের মাটিতে খেলে গেছে শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো পরাশক্তিরা। তবে গ্যালারীতে ফেরানো হয়নি দর্শক। মাঠে এসে দলকে সমর্থন দিতে না পারার যে আক্ষেপ ছিল সেটা অবশ্য ঘুচে গেছে।

ঘরের মাঠে পাকিস্তান সিরিজ দিয়ে দর্শক প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে বিসিবি। দর্শকে টইটুম্বর গ্যালারী দেখা গিয়েছিল গত বছর মার্চে। বিশ্বকাপে সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। তবুও দলের প্রতি আস্থা কমেনি এতটুকুও। বিশ্বকাপের ব্যর্থতা ভুলে আবারও ঘুরে দাঁড়াবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।

এমন প্রত্যাশায় আবারও মিরপুর শের-ই- বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়। দুপুর দুইটা সময় খেলা হলেও বারোটা বাজার আগেই লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে মাঠে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে ক্রিকেটপ্রেমীরা। বলতে গেলে মিরপুর খানিকটা জনসমুদ্রে রূপ নিয়েছে।

বেলা সোয়া বারোটা নাগাদ দর্শকদের জন্য গেইটগুলো উন্মুক্ত করে দেন সেখানে থাকা দায়িত্বরত সিকিউরিটিরা। । দর্শকদের উপড়ে পড়া ভিড় থাকলেও সেটা বেশ ভালোভাবেই সামলে নিয়েছেন সেখানে থাকা তারা। যেখানে দুই দফায় করোনা ভ্যাকসিন দেয়া দর্শকদেরই কেবল মাঠে প্রবেশ করতে দিয়েছে দায়িত্বরত সিকিউরিটিরা। ।

১৮ নভেম্বর থেকে দর্শকদের অভিযোগ ছিল টিকিটের দখল নিচ্ছেন কালোবাজারিরা। ম্যাচ শুরুর দুই ঘণ্টা আগেও দেখা মিলেছে টিকিট কালোবাজরিদের। যেখানে ১০০ টাকার টিকিট বিক্রি হতে দেখা গেছে ৬০০ কিংবা ৭০০ টাকায়। তবুও মাঠে প্রবেশ করে বাংলাদেশকে সমর্থন দেয়ার প্রয়াসের কমতি নেই।

গেইটে এক দর্শক যেমন বলছিলেন, 'বিশ্বকাপে খারাপ খেললেও আমরা সাহস হারাচ্ছি না। এ সিরিজে বাংলাদেশ ভালো করবে বলে বিশ্বাস করি। বিশেষ করে যেহেতু নতুন কয়েকজন ক্রিকেটার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তাদের কারণে স্বপ্ন দেখাই যায়। আমরা আশাবাদী শান্ত (নাজমুল হোসেন), সাইফ হাসানরা আমাদের ভালো খেলা উপহার দেবে।'

বাংলাদেশের পাশাপাশি বেশ কিছু পাকিস্তানি দর্শককেও দেখা গেছে মিরপুরে। পাকিস্তান যে সমর্থন পাবে সেটা আভাস অবশ্য আগেই দিয়ে রেখেছিলেন বাবর আজম। ম্যাচের আগেরদিন সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক বাবর জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশেও তাদের ভালো সংখ্যক সমর্থক রয়েছে তাদের।

মিরপুরের গেইটের বাইরে দেখা মেলে পাকিস্তানি সমর্থকদের। যারা কিনা পড়াশোনা কিংবা কাজের সূত্রে বাংলাদেশে থাকেন। তাদেরই দুজন মোহাম্মদ আমির ও মোহাম্মদ সারেক। ঢাকা মেডিকেলে পড়াশোনার সূত্রে আমির ৪ বছর এবং সারেক ২ বছর ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন।

ঘরের মাঠে বাংলাদেশ ভালো দল হলেও তারা দুজনেই আশাবাদী পাকিস্তান বিশ্বকাপের সাফল্য ধরে রাখবে। বাংলাদেশে অবস্থানেই কারণে ইতোমধ্যে বাংলা ভাষাও প্রায় আয়ত্ব করে ফেলেছেন, বাংলাতেই জানিয়েছেন তাদের অনুভূতি।

সারেক বলেন, 'আমরা অনেকদিন ধরে বাংলাদেশে, আমি ২ বছর ও আমীর ৪ বছর ধরে এখানে আছি। আমরা ঢাকা মেডিকেলে পড়াশোনা করছি। এই প্রথম বাংলাদেশের মাঠে পাকিস্তানের খেলা দেখতে এলাম। পাকিস্তান বিশ্বকাপে দারুণ খেলেছে আমরা আশাবাদী তারা এখানেও সেটা ধরে রাখবে।'

বাংলাদেশে থাকার কারণে ম্যাচে বাংলাদেশ দলের প্রতি কিছুটা সমর্থন কাজ করবে কিনা জানতে চাইলে আমির বলেন, 'তাতো অবশ্যই। আসলে এখন তো দুইটাই আমাদের দল বলা যায়। আমরা আসলে খেলাটাকে সমর্থন দিতে এসেছি। ক্রিকেটের জয় হোক দিনশেষে এটাই চাওয়া।'