বাংলাদেশ - পাকিস্তান সিরিজ

পাকিস্তান সিরিজ দিয়ে বাংলাদেশের নতুন যুগের শুরু?

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 17:39 বৃহস্পতিবার, 18 নভেম্বর, 2021

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

টি-টোয়েন্টিতে বরাবরই দুর্দান্ত পাকিস্তান। একেবারে বিপরীত চিত্র বাংলাদেশের ক্ষেত্রে। স্বপ্নভঙ, হতাশা, হতশ্রী পারফরম্যান্স। টি-টোয়েন্টিতে এই শব্দগুলো বাংলাদেশের নিত্যদিনের সঙ্গী। ব্যর্থতার বিশ্বকাপ শেষ, ঘরের মাঠে পাকিস্তান সিরিজে দিয়ে ডুবন্ত তরী জাগানোর মিশনে এবার বাংলাদেশ। নতুন শুরুতেও খানিকটা নতুনত্বে এনেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। তারুণ্য নির্ভর বাংলাদেশের সামনে দুর্দান্ত পাকিস্তান। 

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখনও বড় দল হয়ে উঠতে না পারলেও বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতে খানিকটা তৃপ্তির ঢেঁকুর গিলেছিল টাইগাররা। সেটি অবশ্য পরবর্তীতে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। টানা তিন সিরিজ জিতে বিশ্বকাপে গেলেও ৮ ম্যাচে বাংলাদেশ জয় কেবলই দুটি ম্যাচে। সেটিও বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির মতো প্রতিপক্ষের সঙ্গে। 

বিশ্বকাপের সেই ব্যর্থতার ক্ষতে খানিকটা প্রলেপ দিতে পারে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়। সেই মিশনে নামার আগে খানিকটা তোড়জোর করেছে চালিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিশ্বকাপে ব্যর্থ হওয়ায় পাকিস্তান সিরিজের জায়গা পাননি লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। কোনো ম্যাচ না খেলেই বাদ পড়েছেন পেসার রুবেল হোসেন।

এদিকে টেস্টের ভাবনায় মুশফিকুর রহিমকে বিশ্রামের কথা বলা হলেও সেটি নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। অভিজ্ঞ মুশফিকের সঙ্গে িইনজুরির কারণে পাকিস্তানের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি সিরিজে নেই তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়া মোহাম্মদ সাইফদ্দিন রয়েছেন বাতিলের তালিকায়। তাতে বেশ কয়েকটা পরিবর্তন অনুমেয়ই ছিল। 

লম্বা সময় ধরেই ওপেনিং জুটিতে রান নেই বাংলাদেশের। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সিরিজের পর সেই ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা বজায় ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও। যে কারণে জায়গা ছাড়তে হয়েছে লিটন-সৌম্যকে। ওপেনিং তুলনামূলক ভালো করায় টিকে গেছেন নাইম শেখ।

তাঁদের দুজনের জায়গায় খেলবেন সাইফ হাসান। টেস্টে অভিষেক হলেও এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলা হয়নি তাঁর। তাঁকে মূলত টেস্টের জন্য বিবেচনা করা হলেও ব্যর্থতার দায় এড়াতে সাইফকে সুযোগ দিয়েছে নির্বাচকরা। তবে সাইফকে বেশ আত্মবিশ্বাসী মাহমুদউল্লাহ। টি-টোয়েন্টিতে সাইফ েনিজেকে কিভাবে মানিয়ে নেবেন এবং খেলবেন সেটা দেখতে মুখিয়ে অধিনায়ক। 

ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে সাইফকে নিয়ে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘সাইফের ব্যাপারে বলতে গেলে বলতে হবে যে ও এখনো অনেক তরুণ। আর ও দারুণ একজন ব্যাটার। ওর ভেতরে যেকোনো বোলারকে খেলার সামর্থ্য আছে। আমার মনে হয় এটা অনেক দারুণ ব্যাপার হবে ও কিভাবে টি-টোয়েন্টিতে খেলবে। আমাদের পুরো দলের বিশ্বাস ও ভালো করবে।’

শুধু সাইফ নয়, নতুনদের তালিকায় রয়েছেন ইয়াসির আলী রাব্বি, আকবর আলী ও শহিদুল ইসলাম। মাত্র তিন টি-টোয়েন্টি খেলা নাজমুল হোসেন শান্ত এবং উপেক্ষিত লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবও রয়েছেন এবারের সিরিজে। লম্বা সময় ধরে নতুন টি-টোয়েন্টি দল সাজানোর পরিকল্পনা করছিল বাংলাদেশ। তবে কি পাকিস্তান সিরিজ দিয়ে টাইগারদের নতুন ‍যুগের শুরু?

নতুনের শুরুতে অবশ্য চ্যালেঞ্জ দেখছেন মাহমুদউল্লাহ। তারুণ্য নির্ভর দল নিয়ে চ্যালেঞ্জ থাকলেও চাপ নিতে নারাজ বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘তরুণ দল এটা কিছুটা চ্যালেঞ্জের তো হবেই। তবে চাপের কিছু নেই এতে। তবে এটা চ্যালেঞ্জিং একটা সিরিজ হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি টি-টোয়েন্টি এমন একটা খেলা যেখানে আপনার সেরা একাদশ থাকে ও উইকেট ভালো থাকে তাহলে ভালো কিছু আশা করতে পারেন আপনি।’

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসরে শিরোপার স্বাদ নেয়ার অন্যতম দাবিদার ছিল পাকিস্তান। সুপার টুয়েলভে পাঁচ ম্যাচের পাঁচটিতে জিতে খানিকটা সেটিরই আভাস দিয়েছিল বাবর আজমের দল। যদিও শেষ সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে তাঁদের। 

বিশ্বকাপে খেলা ৬ ম্যাচে একই একাদশ নিয়ে খেলেছে পাকিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য খানিকটা পরিবর্তন এনেছে তাঁরা। ১৯ নভেম্বর মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুপুর ২ টায় শুরু হওয়া ম্যাচে নিজেদের বেঞ্চের শক্তি বাজিয়ে দেখতে চায় পাকিস্তান।

সংবাদ সম্মেলনে বাবর বলেন, 'বিশ্বকাপ থেকে যে মোমেন্টাম চলছে আমাদের, তা ধরে রাখতে চাইছি। এখানে ভিন্ন কম্বিনেশন খেলানোর চেষ্টা করছি, নিজেদের শক্তির জায়গা বাজিয়ে দেখতে চাই। এরপর আমাদের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজও আছে। ৬ ম্যাচে বিভিন্ন ক্রিকেটারকে দেখব আমরা।'