ক্রিকেটে উন্নতি করতে ভালো উইকেটে খেলার বিকল্প নেই: আজহারউদ্দিন

আবিদ মোহাম্মদ

আবিদ মোহাম্মদ
প্রকাশের তারিখ: 20:30 শনিবার, 13 নভেম্বর, 2021

|| আবিদ মোহাম্মদ, দুবাই থেকে ||

একজন নিখাদ ভদ্রলোক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন। মনসুর আলী খান পতৌদি, আব্বাস আলী বেগদের মতো পড়াশোনা করেছেন ইংরেজি মাধ্যমে, কিন্তু অভ্যস্ত ছিলেন না তাদের মতো বিলাসবহুল জীবনযাপনে। ধর্মভীরুতা, ভদ্রতা, নম্রতা, মিষ্টভাষিতা- একজন ভারতীয় ক্রিকেটার ব্যাটটাকেও যেন বানিয়ে ফেলেছিলেন জাদুদণ্ড। আলতো ছোঁয়ায় ফ্লিক করে বলকে বাউন্ডারিতে পাঠানোর মাঝেও ছিল অদ্ভুত এক সৌম্যশান্ত ভাব।

ঠিকঠাক সংবাদ সম্মেলনটাও সামলাতে পারতেন না প্রশ্নবাণ সামলাতে হিমশিম খেতেন প্রায়ই। তথাপি তার চরিত্রের মাঝে ছিল অদ্ভুত মার্জিত ভাব। বোর্ডকর্তা থেকে সাধারণ মানুষ - সবার স্নেহভাজন ছিলেন। যে সকল মানবীয় গুণের কারণে কাউকে ভালোবাসা যায়, সবই ছিল তার। ব্যাটের জাদুতে মুগ্ধতা ছড়িয়ে দ্রুতই হয়ে উঠেছিলেন ভারতের প্রত্যেকটি পরিবারের 'ঘরের ছেলে'। তিনি মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন, সকলের ভালোবাসার 'আজ্জু'।

অপ্রিয় হয়ে উঠতে সময় লাগেনি। শুরুতে মার্জিত ছিলেন বলেই হয়ত তার হটকারি সিদ্ধান্ত কিংবা ম্যাচ গড়াপেটার বিতর্কগুলো চোখে লেগেছিল সবার। হেনসি ক্রনিয়াকে জুয়াড়ির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া মানুষটি নাকি ছিলেন, ভারতের সবার প্রিয় 'আজ্জু'।

নিজেও স্বীকার করেছিলেন তিনটি ওয়ানডে ম্যাচ গড়াপেটার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৯৯৬ সালে রাজকোটে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৯৯৭ সালে ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৯৯৯ সালে। এর ফলে আজহারকে নিষিদ্ধ করা হয় আজীবন। যদিও ২০১২ সালে সেই নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পান আজহার।

এরপর ভারতের ক্রিকেটের সঙ্গেও জড়িয়েছে তার নাম, হয়েছেন হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। সম্প্রতি আবুধাবি টি-টেন লিগের দল বাংলা টাইগার্সের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। দুবাইতে তিনি ক্রিকফ্রেঞ্জি কে একান্ত আলাপে জানিয়েছেন অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যতের অনেক কথা।

পাঠকদের সুবিধার্থে পুরো সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো।

ক্রিকফ্রেঞ্জি: বাংলা টাইগার্সের সঙ্গে কিভাবে যুক্ত হলেন?

মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন: আসলে আমার একজন বন্ধু আছে যে এখানে (দুবাই) বসবাস করে। সে আমাকে বাংলা টাইগার্সের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। এরপরই আমাদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। তারা আমাকে প্রস্তাব দেয় ফ্র্যাঞ্চাইজিটি সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য। এরপর আমি সম্মতি জানাই। সেখান থেকেই শুরু আমার দলটির সাথে যাত্রা। টি-টেনে বাংলা টাইগার্সের ব্র্যান্ড আম্বাসেডর হতে পেরে আমি আনন্দিত।

ক্রিকফ্রেঞ্জি: টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পর পরিকল্পনা কি? শুনেছি একডেমিও খোলার পরিকল্পনা আছে?

আজহারউদ্দিন: হ্যাঁ, আমাদের এমন পরিকল্পনা আছে। যেটার দিকে আমরা বেশ ভালোভাবে যাচ্ছি। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে খেলোয়াড় তৈরি করা। শুধু নামের জন্য একাডেমি তৈরি করতে চাই না। তার আগে আমাকে অনেককিছু আয়ত্ত করতে হবে, কিভাবে আমি একটি একাডেমি চালাতে পারব, খেলোয়াড় কিভাবে খুঁজে বের করে আনতে পারব। দেখা গেল আমি ১০০-২০০ ছেলে তো ঠিকই খুঁজে বের করেছি কিন্তু সেখান থেকে বড় পর্যায়ে কাউকে নিয়ে যেতে পারলাম না। এমনটা আসলেই চাচ্ছি না। সুষ্ঠভাবে তাই এটাকে পরিচালনা করতে চাই। আপাতত এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমার চাওয়া থাকবে এখান থেকে যেন খেলোয়াড়রা বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়াতে পারে, যেটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্যও মঙ্গলজনক হবে।

ক্রিকফ্রেঞ্জি: আইপিএলের কারণে ভারতীয় ক্রিকেটে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখন অনেক ধরণের লিগ হচ্ছে দেশটিতে। নতুন নতুন খেলোয়াড় উঠে আসছে। বাংলা টাইগার্সের এমন উদ্যোগের কারণে কি বাংলাদেশ দলেও একদম তৃণমূল পর্যায়ে থেকে খেলোয়াড় উঠে আসবে বলে মনে করছেন?

আজহারউদ্দিন: অবশ্যই, এটা একজন খেলোয়াড়কে নিজেকে মেলে ধরার জন্য বড় সুযোগ দেবে। কারণ আপনি দেখেন বাংলাদেশের একজন তরুণকে আমরা এখানে নিয়ে আসলাম। প্রশিক্ষন দিলাম। সঙ্গে সে বিদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলল, ড্রেসিংরুম শেয়ার করল। অভিজ্ঞতা আদান-প্রদান করল। এতে কিন্তু সেই ক্রিকেটারেই বেশি লাভ হচ্ছে। বিদেশি পেসারদের বিপক্ষে খেলে কোন ব্যাটসম্যান নিজেকে আরও ভালোভাবে তৈরি করতে পারবে। যে ভালো ফিল্ডিং করতে পারে সে আরও একধাপ উপরে যেতে পারবে। বোলারদের ক্ষেত্রেও উন্নতি হবে।

এই অভিজ্ঞতাগুলো নিয়ে যদি কেউ বাংলাদেশ দলে ডাক পায় তাহলে তো দেশটির ক্রিকেটের জন্যও মঙ্গলজনক হবে। আপনি আইপিএলই দেখুন, অনেকেই আছে এক মৌসুম খেলেই জাতীয় দলে ডাক পাচ্ছে। উমরান মালিককেই দেখুন সে কিন্তু ভারতীয় দলের সঙ্গেই থাকছে, দেখছে এবং শিখছে। মোহাম্মদ সিরাজকে দেখুন। সে কতখানি উন্নতি করেছে।

ক্রিকফ্রেঞ্জি: আপনারা যখন ২২ গজে দাপট দেখাতেন সে সময় তো শুধু টেস্ট আর ওয়ানডে ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেককিছু বদলে গিয়েছে। নতুন নতুন ফরম্যাট এসেছে। যার একটার সঙ্গে আপনি নিজেও যুক্ত আছেন। তবে টি-টেনের মতো কি আরও কোন ছোট ফরম্যাট আসতে পারে? এই ধরুন ৫ ওভার বা ৬ ওভারের ক্রিকেট। আর যদি হয় তাহলে কি তা ক্রিকেটের জন্য মঙ্গলজনক হবে?

আজহারউদ্দিন: আমার কাছে মনে হয় না এর চেয়ে এর চেয়ে আর বেশি কমবে। এই নিয়ে পঞ্চম বছরের মতো এই লিগ আয়োজিত হচ্ছে। এখান থেকে যদি আমরা এর মান ধরে রাখতে পারি তাহলে আইসিসিও হয়তো এই ফরম্যাট নিয়ে আলাদা করে ভাববে। যাতে করে ক্রিকেটের প্রতি মানুষের আকর্ষণ আরও বেড়ে যায়। তবে আমার কাছে সবকিছুকে পেছনে ফেলে দিবে টেস্ট ম্যাচ। এটাই আসল ক্রিকেট। তবে আমি যে কোন দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ২ ম্যাচের সিরিজের পক্ষে নই। অন্তত তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ হওয়া উচিৎ। এই এক-দুই টেস্ট আপনাকে তেমন সাহায্য করবে না। কিন্তু যদি টেস্ট ক্রিকেটের মান ধরে রাখতে চান তাহলে অন্তত তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ থাকা প্রয়োজন।

ক্রিকফ্রেঞ্জি: আপনি দেশের হয়ে ৯৯টি টেস্ট খেলেছেন। অল্পের জন্য ১০০ টেস্ট খেলা হয়নি। ওয়ানডেতে প্রায় সাড়ে নয় হাজার রান আছে আপনার। দশ হাজার রান হতে পারত। এই দুটি মাইলফলক ছুঁতে না পারার আফসোস আছে কি?

আজহারউদ্দিন: না আমার কোন আফসোস নেই। আমি খুশি। আল্লাহ আমাকে যা দিয়েছেন যতখানি দিয়েছেন তাতেই আমি অনেক খুশি। ৯৯টা টেস্ট খেলার সৌভাগ্য কয়জন ক্রিকেটারের হয় বলেন বা কয়জনই ১০০০০ রান করতে পারে। আমি দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছি লম্বা সময়। আল্লাহ আমাকে এতোটুকু দিয়েছেন। তাই কিছু নিয়ে আফসোস নেই। আমার ভাগ্যে যতটুকু ছিল ততটুকুই পেয়েছি। আমার ভাগ্যে এই ৯৯টি টেস্ট ম্যাচই ছিল।

ক্রিকফ্রেঞ্জি: আপনাদের যুগে তো টি-টোয়েন্টি বা টি-টেন ছিল না। যদি থাকত তাহলে ব্যাটসম্যান হিসেবে কেমন পারফর্ম করতেন বলে মনে করছেন?

আজহারউদ্দিন: এটা বলা আসলে একটু কঠিন। তবে আমার মনে হয় আমি এই ফরম্যাটগুলোতেও সফল ব্যাটসম্যানদের তালিকায় থাকতাম। রানের জন্য খেলা আর গুরুত্বের সঙ্গে ক্রিকেট খেলা দুইটা সম্পূর্ণ আলাদা। তাই না খেলা পর্যন্ত পুরপুরি নিশ্চিত বলতে পারছি না।

ক্রিকফ্রেঞ্জি: একটু পেছনের দিকে যাবো। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার গোলাপি বলের টেস্ট আপনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন। সিরিজে দুটি টেস্টই বাংলাদেশ হেরেছিল ইনিংসে। গোলাপি বলে টেস্টে মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকসহ বাকিদের দেখে কি মনে হল? কি কি ভুল ধরা পড়েছে আপনার চোখে? আর লঙ্গার ভার্সনে নিয়মিত ভালো খেলতে হলে তাদের কি করা উচিৎ?

আজহারউদ্দিন: কলকাতা টেস্টে তারা পেসারদের বিপক্ষে অনেক ধুঁকেছে। ফাস্ট বোলিং খেলতেই পারছিল না কোন ব্যাটসম্যান। এমনও হয়েছে ৩-৪জন ব্যাটসম্যানের হেলমেটে বল লেগেছে। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল তাদের দুর্বলতা কোথায়। মাঝে মাঝে এমন হয়, হয়তো তারা নতুন ছিল। আপনি তাদের আরেকবার সুযোগ দিলে হয়তো তারা ভালো খেলবে। বাংলাদেশেরও ভালোমানের ফাস্ট বোলার আছে। তবে আমার কাছে মনে হয় দলটি স্পিন নির্ভর। এই কারণেই তারা দেশে যখনই খেলে স্পিনবান্ধব উইকেট বানিয়ে নেয়। কিন্তু এতে পরিবর্তন আসা উচিৎ।

এমন উইকেটে খেলার উচিৎ যেখানে পেসাররা সাহায্য পাবে। বল সুইং করবে। এতে করে পেসাররা আত্মবিশ্বাস পাবে। আর বাংলাদেশে তো ভালোমানের পেসার আছেই। কেউ কেউ (তাসকিন) তো ১৪০ গতিতে বোলিং করছে। অন্তত ওদের দিকে চেয়ে হলেও উইকেটে পরিবর্তন আনা উচিৎ। আপনি যদি স্পিনসহায়ক উইকেট দেন তাহলে পেসাররা কিছুই করতে পারবে না, শিখবেও না। হতে পারে হালকা রিভার্স সুইং পেতে পারে। কিন্তু আপনি যদি বাউন্সি উইকেট দেন তাহলে তারা সাহস পাবে ভালো বোলিং করার। তারপরও এটা ম্যানেজম্যান্টের সিদ্ধান্ত। তারাই বুঝবে কেমন কম্বিনেশন প্রয়োজন।

ক্রিকফ্রেঞ্জি: বিশ্বকাপে আসার আগে তারা স্পিনবান্ধন উইকেটে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়াকে সিরিজ হারিয়ে এসেছি। কিন্তু বিশ্বকাআপে একটি ম্যাচেও জিততে পারেনি। এমন হারগুলোর পেছনে কারণ কি হতে পারে বলে মনে করছেন?

আজহারউদ্দিন: বোলিংয়ের দিক দিয়ে যদি বলি এবার তারা স্পিন সহায়ক উইকেট পায়নি। এটাই হয়তো তাদের ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে, প্রতিপক্ষের ওপর চাপ তৈরি করতে পারেনি। ব্যাটিংয়ের দিক দিয়ে বলতে গেলে হয়তো তারা জানতো যে ভালো খেলবে। কারণ এখনে ব্যাটসম্যানরা সহায়তা পাচ্ছিল। কিন্তু বোলাররা? তারা তো ধুঁকেছে। আমি আসলে যেটা বলতে চাচ্ছি সেটা হচ্ছে আপনি যত বেশি ভালো উইকেটে খেলবেন তত আপনারা খেলা উন্নতি করবে।

আপনি যদি র‍্যাঙ্ক টার্নারে খেলেই যান তাহলে তো হবে না। এমন উইকেটে আমাকে বল দিলে আমিও স্পিন করাতে পারব। উইকেটই আসলে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। আসার আগে যে সিরিজগুলো খেলা হয়েছে সেগুলো ভালো উইকেটে খেললে হয়তো এখানে ফলাফলটা ভিন্ন হত। সবসময় তো এক জিনিষ কাজ করবে না। .ফ্ল্যাট উইকেটে স্পিনার-পেসার যে কেউই সহায়তা পেতে পারে। কিন্তু লো উইকেটে তা হবে না। আপনি ভালোমানের বোলার হলে হয়তো টার্ন করাতে পারবেন। কিন্তু ফ্ল্যাট উইকেটে তো বল বেশি টার্ন করবে না। আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি উন্নতি করতে হলে ভালো উইকেটে খেলা ছাড়া পথ খোলা নেই।

ক্রিকফ্রেঞ্জি: সুপার ১২ এ পাঁচ ম্যাচের পাঁচটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ, এমনটা কি আশা করেছিলেন?

আজহারউদ্দিন: এটা আশা করিনি। তবে আমি একটা ম্যাচও দেখতে পারনি বাংলাদেশের। কারণ সে সময়গুলোতে আমি অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তবে এটা বলতে পারি যে অভিজ্ঞতা থেকে সবাই শিক্ষা নেয়। সেটা ভালো হোক বা খারাপ। এখানে খারাপ কিছু নেই। একটা ম্যাচ হেরেছি, হারতেই পারি। এটা মেনে নিয়ে সামনে আগাতে হবে। হেরেছি, খারাপ খেলেছি তাও মেনে নিতে হবে। এটা তো খারাপ কিছু না। বিষয়টা হচ্ছে ময়নাতদন্তের মতো।

ক্রিকফ্রেঞ্জি: ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশের কোন ক্রিকেটারের খেলা আপনার ভালো লাগে?

আজহারউদ্দিন: সবাইকেই ভালো লাগে। কাউকে ভিন্ন চোখে দেখার সুযোগ নেই। তরুণ ক্রিকেটাররাও ভালো করছে। একজনকে বেঁছে নেয়া কঠিন হবে। সিনিয়রদের মধ্যে অনেকেই আছে। তবে অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা দলের জন্য সবসময়ই ভালো। তারা তরুণদের পথ দেখায়। সাকিবকে দেখেন, সে আরও লম্বা সময় খেলবে।'

ক্রিকফ্রেঞ্জি: আইপিএল ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য বলতে গেলে এক প্রকার আশীর্বাদ। অনেক তরুণ ক্রিকেটার উঠে আসছে, ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলছে। এই ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলার পেছনে রহস্যটা কি?

আজহারউদ্দিন: শুধু তরুণরা কেন, আমি মনে করি সবারই এই মনোভাবে খেলা উচিৎ। শুধু ভারতীয় দল না, আপনার মধ্যে এমন মনোভাব থাকলে কোথাও আটকাবেন না। তবে আপনাকে এর সঙ্গে পরিশ্রমটাও করতে হবে। ভয়ে থাকলে পারফর্ম করতে পারবেন না। ভয় আপনাকে লক্ষ্যে পৌঁছাতে দেবে না।

ক্রিকফ্রেঞ্জি: ভারতীয় দলে সিনিয়র ক্রিকেটারদের বাদে যদি কোন তরুণকে বেছে নিতে বলা হয় যে ভবিষ্যতে তারকা হবে তাহলে কার উপর বাজি ধরবেন?

আজহারউদ্দিন: এটা বলা একটু কঠিন। ভারতীয় দলে যারাই খেলে তারা সবাই তারকা। ধরেন শুভমান গিল, সে খুব ভালো খেলছে। ধারাবাহিকতা ধরে রাখলে অনেক দূর যাবে। তবে ধারাবাহিক হতে হবে। তাহলেই ভালো ক্রিকেটার হওয়া সম্ভব।

ক্রিকফ্রেঞ্জি: সম্প্রতি বিরাট কোহলি টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব ছেড়েছেন। রবি শাস্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিতে বাকি ফরম্যাটের নেতৃত্ব থেকেও তিনি সরে দাঁড়াতে পারেন। আমি এসব প্রসঙ্গে যাচ্ছি না। ওয়ানডেতে কোহলির সেঞ্চুরির সংখ্যা ৪৩টি। শচীন টেন্ডুলকারের ৪৯টি। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে মাস্টার ব্লাস্টারের ১০০ সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে ওয়ানডেতে আর প্রয়োজন মাত্র ৭টি। কোহলি কি সেটা করে ফেলবে মনে করেন?

আজহারউদ্দিন: এটার উত্তর তো সময়ই বলে দেবে। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে সুযোগ তো অবশ্যই আছে। পরিসংখ্যানও কোহলির পক্ষে কথা বলছে। দেখা যাক কি হয়।