ভারত-শ্রীলঙ্কা সিরিজ

বড় সুযোগ হাতছাড়া করেছেন স্যামসন, মানছেন দ্রাবিড়

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 13:21 শুক্রবার, 30 জুলাই, 2021

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

ঘরোয়া লিগগুলোতে বরাবরই নিজের সামর্থের জানান দিয়ে আসছেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান সাঞ্জু স্যামসন। তবে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে নামলেই নিজেকে হারিয়ে খোঁজেন তিনি। ২০১৫ সালে ভারতের হয়ে অভিষেক হলেও এরপর থেকে তার আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা মাত্র ১১টি। এ সংখ্যাটাই বলছে নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এবারের শ্রীলঙ্কা সফরেও তেমন কিছুই করে দেখাতে পারেননি। তাই লঙ্কা সফরে কোচের দায়িত্বে থাকা রাহুল দ্রাবিড় মনে করছেন, ভারতীয় দলে জায়গা পোক্ত করার বড় সুযোগ হাতছাড়া করেছেন স্যামসন।

গতকাল তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে লঙ্কানদের কাছে বাজেভাবে হেরেছে সফরকারী ভারত। ব্যাটিং ব্যর্থতায় নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেটে মাত্র ৮১ রান তুলতে পেরেছিলো ভারত। জবাবে ৩৩ বল হাতে রেখেই ৭ উইকেটের জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা। এতে করে লঙ্কানদের কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হাতছাড়া করে শিখও ধাওয়ানের দল।

এই ম্যাচে চারে নেমে ব্যক্তিগত শূন্য রানে ফিরেছেন স্যামসন। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৭ ও প্রথমটিতে ফিরেছিলেন ২৭ রান করে। এতে তিন টি-টোয়েন্টিতে এই হার্ডহিটারের সংগ্রহ মাত্র ৩৪। যা তার সঙ্গে একেবারেই বেমানান মনে করছেন দ্রাবিড়।

ম্যাচ পরবর্তী ভার্চ্যুয়াল প্রেস কনফারেন্সে দ্রাবিড় বলেন, ‘সততার সঙ্গে বলছি, এই কন্ডিশনে স্বাচ্ছন্দে ব্যাটিং করা সাঞ্জুর পক্ষে সম্ভব ছিল না। নিঃসন্দেহে, ওয়ানডেতে সুযোগ পেয়েই সে ভালো সম্ভাবনা দেখিয়েছিলো। সে খুব ভালো শুরু করেছিলো। ওই ম্যাচে সে ৪৬ রান করেছিলো। প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও সে ভালো ব্যাটিং করেছিলো। শেষ দুই টি-টোয়েন্টিতে উইকেট বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিলো, তবে হ্যা সে যদি এই সিরিজে ফিরে তাকায় তবে অবশ্যই হতাশ হবে।’

তবে স্যামসনসহ দলের প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের ওপর এখনোই হতাশ হতে রাজি নন দ্রাবিড়। তিনি বলেন, ‘আরো বলতে চাই, কেবল সাঞ্জু নয়, আমরা এই প্রতিভাবান ছেলেদের ওপর ধৈর্য ধরতে চাই।’

তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে অনবদ্য বোলিংয়ে ভারতীয় ইনিংসে ধ্বস নামিয়েছিলেন লঙ্কান লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ৪ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে ৪টি উইকেট নিজের ঝুলিতে পুরেছেন তিনি। অনবদ্য বোলিংয়ের জন্য প্রতিপক্ষ দলের এই তরুণের প্রশংসা করতে কার্পণ্য করেননি দ্রাবিড়।

তিনি বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে আজ আমরা ভালো ব্যাটিং করিনি এবং সামনে থেকে হাসারাঙ্গা ছিলেন অনবদ্য। এই সিরিজে সে ব্যতিক্রমী পারফর্ম করেছে। আমরা অনেক বেশি উইকেট হারিয়ে ৮১ রান তুলেছিলাম। এটা আমাদের জন্য কখনোই ভালো কিংবা যথেষ্ট নয়। কিছু কিছু চ্যালেঞ্জিং কন্ডিশনে আপনাকে লড়াই করতে হয় এবং সংগ্রহকে ১৩০ থেকে ১৪০ এ নিয়ে যেতে হয়। আমার মনে হয় এই সফর থেকে দলের তরুণ ক্রিকেটারটা অনেক কিছু শিখবে।

শ্রীলঙ্কায় সফরে কোয়ারেন্টাইন জটিলতা ও দলে করোনা সংক্রমণ সবকিছু ভেস্তে দিয়েছে বলে মনে করেন দ্রাবিড়। তার কথায়, ‘এটা আসলেই সহজ ছিলো না। আমরা ৪৫ দিনে মাত্র ৬টি ম্যাচ খেলেছি। এছাড়া কিছু লঙ্কান ক্রিকেটার করোনায় আক্রান্ত হয় এবং সিরিজ পিছিয়ে যায়। এটা খুব চ্যালেঞ্জিং ছিলো। ছেলেদের কোয়ারেন্টাইন ও জৈব সুরক্ষা বলয়ের ধকল সামলাতে হচ্ছিলো। আমি ছেলেদের ধন্যবাদ জানাতে চাই যে, তারা উদ্যম ও উৎসাহ হারায়নি।’

শিখর ধাওয়ান ও ভুবনেশ্বর কুমারকে ধন্যবাদ জানিয়ে দ্রাবিড় যোগ করেন, ‘আমি মনে করছি না যে কেউ তাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেনি। ধাওয়ান ও ভুবনেশ্বর সামর্থ অনুযায়ী সুযোগ তৈরি করেছিলো। এটার জন্য অবশ্যই তারা বড় প্রশংসার দাবিদার। এমন পরিস্থিতিতে ক্রিকেট খেলাটা সহজ নয়। আমরা খুবই ভাগ্যবান যে এমন মুহূর্তেও আমরা ক্রিকেট খেলতে পারছি। আমরা মানুষদের অনেক দুর্দিনের মধ্যে দিয়ে যেতে দেখছি, আমরা যা করতে পেরেছি তার জন্য অবশ্যই ভাগ্যবান মনে করছি।’