জিম্বাবুয়ে-বাংলাদেশ সিরিজ

তামিমের সেঞ্চুরিতে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 13:03 মঙ্গলবার, 20 জুলাই, 2021

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে বাংলাদেশের জয়ের পথ বেশ খানিকটা সুগম করে দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। তবে পর পর দুই বলে তামিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বিদায় নিলে ব্যাকফুটে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তবে নুসাবলীল ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে চাপমুক্ত করেন নুরুল হাসান সোহান।

শেষ দিকে এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান অপরাজিত ৪৫ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব অপরাজিত ২৬ রান করলে দুই ওভার বাকি থাকতেই ৫ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। তাতে ওয়ানডে সিরিজের তিন ম্যাচে হারিয়ে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করলো সফরকারীরা। যা ২০১৮ সালের পর বাংলাদেশের প্রথম অ্যাওয়ে সিরিজ জয়।  

হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে জয়ের জন্য ২৯৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দারুণ ‍শুরু করেন তামিম ও লিটন দাস। এই দুজনের জুটিতে পাওয়ার প্লেতে কোন উইকেট না হারিয়ে ৫৭ রান তোলে বাংলাদেশ। যদিও মাত্র ৮ ওভারেই পঞ্চাশ ছুঁয়েছিল তাঁদের জুটি। তাতে ১১ ম্যাচ পর উদ্বোধনী জুটিতে হাফ সেঞ্চুরি পেলো সফরকারীরা।

সর্বশেষ ২০২০ সালের মার্চে পঞ্চার্শো রানের জুটি গড়েছিলেন লিটন ও তামিম। যদিও সেটি ছিল ২৯২ রানের উদ্বোধনী জুটি ছিল। পাওয়ার প্লের পর হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান তামিম। চারটি চার ও দুটি ছক্কায় ৪৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। যা তাঁর ক্যারিয়ারের ৫২তম হাফ সেঞ্চুরি।

তামিম হাফ সেঞ্চুরি পেলেও থিতু হয়ে সাজঘরে ফেরেন লিটন। অফ স্পিনার ওয়েসলি মাধেভেরের অফ স্টাম্পের বাইরের বল সুইপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। তিন চারে ৩৭ বলে ৩২ রান করে লিটন ফিরলে ভাঙে তামিমের সঙ্গে ৮৮ রানের উদ্বোধনী জুটি।

তিনে নেমে অনেকটা সাবলীল ব্যাটিং করেছেন সাকিব আল হাসান। তবে তামিমের সঙ্গে পঞ্চার্শো রানের জুটি গড়ার পর হতাশায় বিদায় নিতে হয় তাঁকে। লুক জংয়ের অফ স্টাম্পের বাইরের বল জায়গা দাঁড়িয়ে খেলেন সাকিব। বল রেজিস চাকাভার গ্লাসে বন্দি হলে উল্লাসে মেতে ওঠেন তিনি। তাতে আম্পায়ারও সাড়া দিয়ে সাকিবকে আউট দেন।

যদিও আম্পায়ারের এমন সিদ্ধান্তের পর সাকিবকে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায়। দ্বিতীয় ম্যাচে অপরাজিত ৯৬ রান করলেও এদিন ৪২ বলে ৩০ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারকে। সাকিবের বিদায়ের পর মোহাম্মদ মিঠুনকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন তামিম।

প্রথম দুই ম্যাচে সুবিধা করতে না পারলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তিনি। টেন্ডাই চাতারার বলে চার মেরে ৮৭ বলে সেঞ্চুরি করেন বাঁহাতি এই ওপেনার। যা ক্যারিয়ারের দ্রুততম সেঞ্চুরি। এদিকে অধিনায়ক হিসেবে প্রথম হলেও এটি ক্যারিয়ারের ১৪তম সেঞ্চুরি।

সেঞ্চুরির তুলে নেয়ার পর ইনিংস বড় করতে পারেননি তামিম। ডোনাল্ড তিরিপানোর বলে চাকাভার হাতে ক্যাচ দিয়ে ১১২ রানে ফিরেন তিনি। ইনিংসটি খেলতে আটটি চার ও তিনটি ছক্কা মেরেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। পরের বলে সাজঘরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। নিজের ২০০তম ওয়ানডেতে শূন্য রানেই ফিরতে হয় তাঁকে।

তামিম ও মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর মিঠুনকে সঙ্গ নিয়ে পঞ্চার্শো রানের জুটির গড়েন সোহান। যদিও সেখানে সোহানের ৩০ রানের বিপরীতে মিঠুনের অবদান ছিল মাত্র ১৫ রান। শুরু থেকেই খানিকটা অস্বস্তিতে ছিলেন মিঠুন। জয়ের খুব কাছে দাঁড়িয়ে মাধেভেরের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ আউট হয়েছেন তিনি। ৫৭ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরতে হয় মিঠুনকে।

সাড়ে চার বছর পর দলে ফিরে দ্রুতগতিতে রান তোলেন সোহান। তবে আফিফের আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ের কারণে হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি তাঁর। শেষ পর্যন্ত ছয়টি চারে ৩৯ বলে অপরাজিত থাকতে হয়েছে ৪৫ রান করে। এদিকে মাত্র ১৭ বলে ২৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন আফিফ। জিম্বাবুয়ের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মাধেভেরে ও তিরিপানো।

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ২৯৮ রানে অল আউট হয় জিম্বাবুয়ে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেছেন চাকাভা। এ ছাড়া রায়ান বার্ল ৫৯ ও সিকান্দার রাজা করেছেন ৫৭ রান। বাংলাদেশের হয়ে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন মু্স্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

জিম্বাবুয়ে: ২৯৮/১০ (৪৯.২ ওভার) ( চাকাভা ৮৪, মারুমানি ৮, টেলর ২৮, মেয়ার্স ৩৪, রাজা ৫৭, বার্ল ৫৯; মুস্তাফিজ ৩/৫৭, সাইফউদ্দিন ৩/৮৭, মাহমুদউল্লাহ ২/৪৫)

বাংলাদেশ: ৩০২/৫ (ওভার ৪৮) তামিম ১১২, লিটন ৩২, সাকিব ৩০, মিঠুন ৩০, সোহান ৪৫*, আফিফ ২৬*)