জিম্বাবুয়ে-বাংলাদেশ সিরিজ

নিজের সঙ্গে নিজেই জিততে চান সাকিব

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 23:23 রবিবার, 18 জুলাই, 2021

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

ব্যাট হাতে অসাধারণ বিশ্বকাপ কাটিয়ে ১ বছরের নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে সাকিব আল হাসানের ব্যাটের মরিচা যেন কাটছিলই না। একটা ভালো ইনিংস, কিংবা এক বুক ভরা আত্মবিশ্বাসের অভাব। কিছুতেই কিছু হয়ে উঠছিল না। নির্বাসন থেকে ফিরেই বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট প্রত্যাবর্তন। খেলতে গিয়েছিলেন আইপিএলেও। ফিরেই খেলেছেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ।

কিছুতেই যেন ব্যাটে শান দিতে পারছিলেন না। নিজের ব্যাটিং নিয়ে এতটাই চিন্তিত ছিলেন, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ম্যাচ খেলার বাইরেও নেটে ব্যাটিং অনুশীলন করেছিলেন ঘন্টার পর ঘন্টা। জিম্বাবুয়ে উড়ে গিয়েও প্রথম ওয়ানডেতেও হাসেনি সাকিবের ব্যাট। টেকনিক্যাল কোন সমস্যা ছিল না জানতেন সাকিব নিজেও। সমস্যা আসলে নিজের মধ্যেই। লড়াইটা তার বোলারদের বিপক্ষে নয়। এ লড়াইয়ে সাকিব নিজেই নিজের প্রতিপক্ষ।

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সেই অদৃশ্য প্রতিপক্ষকে হারালেন, দলের বিপর্যয়ে বুক চিতিয়ে খেললেন অসাধারণ এক ইনিংস। সেঞ্চুরি ছোঁয়ার আফসোস হয়ত পোড়াবে, বাংলাদেশকে ৩ উইকেটে জিতিয়ে, সিরিজ নিশ্চিত করে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়া সেই ক্ষতে প্রলেপ হিসেবে কাজ করবে নিশ্চয়ই। ঠিক যে সময়টায় দরকার সে সময়টায় জ্বলে উঠলেন সাকিব। ব্যর্থতার চাপা কষ্টে কি এমন যাদু মন্ত্রে বদলে গেলেন সাকিব?

'আসলে পরিশ্রম তো করতেই হয় কিন্তু মাইন্ড সেটাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয় আমি ব্যাটিং নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা করছিলাম। যেটা এই ম্যাচের আগে বদল করেছি। কিছু কিছু জিনিস আছে যেগুলা আমাকে এই ম্যাচের আগে ফোকাস রাখার জন্য অনেক সাহায্য করেছে। চেষ্টা করব যে এই ফোকাসটা যেন ধরে রাখতে পারি। অনেক সময় আসে যে খারাপ সময়েও খুব বেশি টেকনিক্যাল প্রবলেম হয় না। সাধারণত যেটা হয় মানসিক সমস্যা। এই খেলাটি যদি আমি নিজের সাথে নিজে জিততে পারি তাহলে প্রতিনিয়ত রান করা সম্ভব।' বলেন সাকিব।

১৪৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের ড্রেসিং রুম তখন পরাজয়ের চোখ রাঙানি। আফিফ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে সাকিব যোগ করলেন ২৮ রান। আফিফের বিদায়ের পর সাইফ উদ্দিনকে নিয়ে বাকি কাজটা সেরেছেন নির্বিঘ্নে, কোন ঝুঁকি ছাড়াই। দুজনে মিলে ৬৯ রানের জুটি গড়ে দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছেড়েছেন। কিন্তু ৬ উইকেট পরে যাবার পর সময়টায় কি চলছিল সাকিবের মনে?

তিনি বললেন, 'যখন আফিফের সাথে ব্যাটিং করছিলাম তখন একটাই কথা বলছিলাম যে আমরা যদি ৪৫ ওভার পর্যন্ত ব্যাইং করতে পারি ব্যাটসম্যানরা। তখন আমরা দেখতে পারব আমরা কোথায় আছি। তখন ১৫/২০ রান ২/৩ ওভারে করা সম্ভব এখনকার ওয়ানডে ক্রিকেটে। সবসময়ই আমাদের লক্ষ্য ছিল আমরা খেলাটা জয়ের যতটা কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারি তারপর আমরা দেখব। আমরা কখনোই চিন্তা করি নাই যে ৭০/৭৫ রান লাগে সেটা দ্রুত তাঁড়া করতে হবে। আমরা সবসমই জানতাম বলে বলে রান করা ওয়ানডে ক্রিকেট এখন খুবই সম্ভব।'

তিনি আরো জানালেন, 'উইকেট আজকে একটু কঠিন ছিল। বল আসলে ব্যাটে অতটা আসছিল না সো আপনাকে শটস খেলতে হত রান করার জন্য। সেই জায়গাটা থেকে অনেক খাপ খাইয়ে নিতে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের। আমি খুশি যে ধরণের মানিয়ে নেয়াটা দরকার ছিল করতে পেরেছি। একটু সময় নিয়েছি কিন্তু প্রায়ই যেহেতু উইকেট পরছিল, আমি খুব বেশি একটা কিছু করতেও পারতাম না। ক্রেডিট দিতে হয় সাইফউদ্দিনকে ও যেভাবে খেলাটা শেষ করতে পেরেছে।'