জিম্বাবুয়ে - বাংলাদেশ সিরিজ

সাকিব-লিটনের নৈপুণ্যে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 13:03 শুক্রবার, 16 জুলাই, 2021

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

টসের সময় দুই দলের অধিনায়কই বলেছিলেন, দিনের প্রথম ঘণ্টায় উইকেট থেকে বাড়তি সুবিধা পাবেন বোলাররা। যে কারণে টসে জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ব্রেন্ডন টেলর। ৭৪ রানে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে সেটির প্রমাণও দিয়েছিল জিম্বাবুয়ের বোলাররা। তবে লিটন দাসের অনবদ্য সেঞ্চুরি ও আফিফ হোসেন ধ্রুবর ক্যামিওতে ২৭৬ রানের লড়াকু পুঁজি পেয়েছিল।

দিনের প্রথম ঘণ্টায় বোলাররা বাড়তি সুবিধা পাওয়ার কথা থাকলেও দিনের শেষটাতেও দাপট দেখিয়েছে বোলারা। শেষ বিকেলে সাকিবের স্পিন বিষে নীল হয়েছে জিম্বাবুয়ে। সাকিবের ৫ উইকেটের সুবাদে জিম্বাবুয়েকে মাত্র ১২১ গুড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। ফলে ১৫৫ রানের জয় নিয়ে সিরিজ শুরু করলো সফরকারীরা।

জয়ের জন্য ২৭৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে নড়বড়ে শুরু করে জিম্বাবুয়ে। শুরুতেই স্বাগতিকদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। দারুণ এক ডেলিভারিতে ওপেনার টাডিওয়ানাশে মারুমানিকে বোল্ড করেন সাইফউদ্দিন। ডানহাতি এই পেসারের বল কাট করতে গিয়ে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড আউট হন মারুমানি। টেস্টের মতো ওয়ানডেতেও নিজের অভিষেকে শূন্য রানে ফিরেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

আরেক ওপেনার ওয়েসলে ম্যাধভেরেও বেশি সময় টিকতে পারেননি। পেসার তাসকিন আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ১৭ বলে মাত্র ৯ রান করা এই ব্যাটসম্যান। পাওয়ার প্লেতে আর কোন উইকেট হারায়নি জিম্বাবুয়ে। যেখানে ১০ ওভারের পাওয়ার প্লেতে তাঁরা সংগ্রহ করেছিল ২ উইকেটে ৪৭ রান।

চারে নামা ডিয়ন মায়ার্সকে সঙ্গে নিয়ে খানিকটা লড়াই করেন ব্রেন্ডন টেলর। যদিও সেটা খুব বেশি ফলপ্রসূ হয়নি। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পরই বিদায় নেন অভিষিক্ত মায়ার্স। শরিফুল ইসলামের বলে পুল করে ছক্কা মারতে গিয়ে সাজঘরে ফেরেন ২৪ বলে ১৮ রান করা এই ব্যাটসম্যান। ইনিংসটি খেলতে তিনটি চার মেরেছেন মায়ার্স।

টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করলেও এদিন খানিকটা ধীরগতির ছিলেন টেলর। সাকিবের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ফাইন লেগে দাঁড়িয়ে তাসকিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জিম্বাবুয়ের এই অধিনায়ক। নিজের ২০০তম ওয়ানডেতে তিন চারে ৩১ বলে ২৪ রান করে ফিরেছেন তিনি।

টেলরকে ফিরিয়ে নতুন এক মাইলফলক স্পর্শ করেন সাকিব। এদিন দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে উইকেটের তালিকায় মাশরাফি বিন মুর্তজাকে ছাড়িয়ে গিয়েছেন সময়ের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। যেখানে মাশরাফির ২৬৯ উইকেটের বিপরীতে সাকিবের উইকেট সংখ্যা ২৭০। যদিও এশিয়া একাদশের উইকেট হিসেবে মাশরাফি ২৭০ উইকেটের মালিক।

রায়ান বার্লকে ফিরিয়ে সেটিকেও এদিন ছাড়িয়ে গিয়েছেন সাকিব। বার্ল থিতু হলেও এদিন ইনিংস বড় করতে পারেনি। সাকিবের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ উইকেটে থাকা আফিফ হোসেনের হাতে ক্যাচ আউট হয়েছেন তিনি। এদিন ১৭ বলে মাত্র ৬ রান করেছেন বার্ল।

একপ্রান্তে রেজিস চাকাভা হাল ধরে থাকলেও অপর প্রান্তের ব্যাটসম্যানরা ছিলেন আসা যাওয়ার মিছিলে। শুরুর দিকে দুইশর অধিক স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা ধীরগতির হয়েছেন চাকাভা। একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থেকে দলের লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের অসহায় আত্মসমর্পণ দেখেছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।

সাকিবের স্পিন বিষে শেষ ১৬ রানেই ৫ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। এর মাঝে ফিরেছেন হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয়া চাকাভা। দুই ছক্কা ও চারটি চারে ৫১ বলে চাকাভার ৫৪ রান কেবল স্বাগতিকদের হারের ব্যবধান কমিয়েছে। বাংলাদেশের হয়ে সাকিব পাঁচ উইকেট নিয়েছেন। এ ছাড়া তাসকিন, সাইফউদ্দিন ও শরিফুল একটি করে উইকেট নিয়েছেন।

এর আগে শুরুতে উইকেট হারালেও লিটন ও আফিফের নৈপূণ্যে নির্ধারতি ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৭৬ রানের পুঁজি পেয়েছিল বাংলাদেশ। যেখানে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১০২ রান করেন লিটন। এ ছাড়া আফিফ ৪৫, মেহেদি হাসান মিরাজ ২৬, সাকিব ১৯ ও মোহাম্মদ মিঠুন ১৯ রান করেছেন। জিম্বাবুয়ের হয়ে লুক জংওয়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২৭৬/৯ (৫০ ওভার) (লিটন ১০২, মাহমুদউল্লাহ ৩৩, সাকিব ১৯, তামিম ০, মিঠুন ১৯, মোসাদ্দেক ৫, আফিফ ৪৫, মিরাজ ২৬; মুজারাবানি ২/৪৭, এনগারাভা ২/৬১, জাঙ্গো ৩/৫১)

জিম্বাবুয়ে:  ১২১/১০ (২৮.৫ ওভার) (চাকাভা ৫৪, টেলর ২৪, মেয়ার্স ১৮, মাধেভেরে ৯, মারুমামি ০; সাকিব ৫/৩০, তাসকিন ১/২২)