|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের প্রথম ইনিংসে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তাসকিন আহমেদ। যেখানে টেলএন্ডার এই ব্যাটসম্যান খেলেছেন ৭৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। যার ফলে ৪৬৮ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। রোডেশিয়ানদের বিপক্ষে এমন ইনিংস খেলার পর তাসকিন জানিয়েছেন, তিনি দলের নির্ভরযোগ্য টেলএন্ডার ব্যাটসম্যান হতে চান।
ক্রিকেটীয় পরিভাষায় 'টেলএন্ডার' বলতে সাধারণত একদম নিচের সারির ব্যাটসম্যানদের বোঝানো হয়, যাদের ব্যাটিং অর্ডার শুরু হয় সাধারণত আট নম্বর থেকে। যাদের কাজটা বল হাতে ব্যাটসম্যানদের কাঁপন ধরানো। তবে মাঝে মাঝে টেলএন্ডাররাও দলের প্রয়োজনে ব্যাট হাতে দৃঢ়তার পরিচয় দেন।
যার সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হতে পারেন অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক ও ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রড। ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ৬১ টেস্ট খেলা স্টার্ক ব্যাট হাতে করেছেন ২২.১৬ গড়ে ১৫৯৬ রান। যেখানে সেঞ্চুরি না থাকলেও ক্যারিয়ারে ১০টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে তাঁর। ২০১৩ সালে মোহালিতে ভারতের সঙ্গে ক্যারিয়ার সেরা ৯৯ রানের একটি ইনিংসও রয়েছে স্টার্কের।
এদিকে ব্রডের ব্যাটিং পরিসংখ্যানটা আরও খানিকটা সমৃদ্ধ। যদিও স্টার্কের তুলনায় অনেক বেশি টেস্ট খেলেছেন ব্রড। ১৪৮ টেস্ট খেলা এই ইংলিশ পেসার ১৮.৭০ গড়ে করেছেন ৩৩৬৬ রান। এক সেঞ্চুরির সঙ্গে ১৩টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে ব্রডের। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটা দেখলে চোখ খানিকটা কপালে ওঠার মতো ব্যাপার।
২০১০ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৬৯ রানের গুরুত্বপূর্ণ এক ইনিংস খেলেছিলেন ব্রড। তাঁদের মতো নিজেকেও দলের নির্ভরযোগ্য টেলএন্ডার হিসেবে তৈরি করতে চান তাসকিন। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ডানহাতি এই পেসার জানিয়েছেন, থিতু হওয়া কোন ব্যাটসম্যান থাকলে যেন তাঁকে সাপোর্ট করতে পারেন সেটাই তাঁর লক্ষ্য।
এ প্রসঙ্গে তাসকিন বলেন, ‘সবসময়ই ভালো টেলএন্ডার হওয়ার লক্ষ্য থাকে। প্রত্যেক বড় টেস্ট দলেই দেখবেন টেলএন্ডাররা যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য। আমিও চাই নির্ভরযোগ্য একজন টেলএন্ডার হতে। যেন দলের দ্রুত উইকেট পড়লে বা থিতু হওয়া কোনো ব্যাটসম্যান থাকলে তাঁকে একটু সাপোর্ট দিয়ে খেলতে পারি। উন্নতির তো কোনো শেষ নেই। যদি উন্নতি করতে পারি তাহলে দলের বিপদে কাজে আসতে পারব।’
বোলার হলেও বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিং অনুশীলন করেন বলে জানিয়েছেন তাসকিন। দ্রুত উইকেট হারানোর ফলে খানিকটা ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে নবম উইকেটে রেকর্ড ১৯১ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহ এনে দেন।
দলের বিপর্যয় দেখে আগে থেকেই কিছু করার পরিকল্পনা ছিল বলে জানান তাসকিন। মাহমুদউল্লাহ থাকায় তাঁর খেলাটা খানিক সহজ হয়েছে। যেখানে অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান তাসকিনকে পরামর্শ দিয়েছিলেন স্টাম্পের ভেতরের বলগুলো দেখে খেলতে। তাতেই সাফল্য পেয়েছেন তিনি।
তাসকিন বলেন, ‘বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিং অনুশীলন করা হয়। আজ মাথায় ছিল দলের জন্য আমার কিছু করতে হবে। যেহেতু রিয়াদ ভাই ছিল। একজন টেলএন্ডার হিসেবে আমার মূল লক্ষ্যই ছিল তাঁকে সমর্থন দেওয়া। তিনি সবসময় আমাকে কথা বলে বলে খেলাচ্ছিলো।’
ডানহাতি এই পেসার আরও বলেন, ‘মূল লক্ষ্য ছিল যেন স্টাম্পের বলটা দেখে খেলা হয়। রিয়াদ ভাই বার বার এটাই মনে করিয়ে দিচ্ছিল। আমি আমার জায়গায় যখন বল পেয়েছি, তখন মারার চেষ্টা করেছি। সেগুলো বাউন্ডারি হয়েছে। মূলত দলের জন্য খেলার চেষ্টা করেছি।’