জিম্বাবুয়ে-বাংলাদেশ সিরিজ

শেষটা আরও সুন্দর হতে পারতো বাংলাদেশের

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 13:05 বুধবার, 07 জুলাই, 2021

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের দুঃস্বপ্নের শুরু। মাত্র ১৩২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে দুইশো রানের নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছিল সফরকারীদের। তবে শুরুর বিপর্যয় সামলে বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফিরিয়েছিলেন লিটন দাস ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ১৩৮ রানের অনবদ্য জুটিতে প্রতিরোধ গড়ার সঙ্গে বাংলাদেশকে আশার আলো দেখিয়েছিল তাঁদের দুজনের ব্যাট। 

কিন্তু শেষ বিকেলে আলোকস্বল্পতার কারণে খেলা শেষ হওয়ার আগে মাহমুদউল্লাহ-লিটনের শতরানের স্বপ্নীল জুটিতে অন্ধকার নামান ডোনাল্ড ট্রিপানো। পরপর দুই বলে লিটন ও মেহেদি হাসানকে মিরাজকে ফেরান। ৯৫ রান করে লিটন সাজঘরে না ফিরলে বাংলাদেশের শেষটা আরও সুন্দর হতে পারতো। আলোস্বল্পতার কারণে প্রথম দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮৩ ওভারে ৮ উইকেটে ২৯৪ রান। মাহমুদউল্লাহ ৫৪ ও তাসকিন আহেমদ অপরাজিত রয়েছেন ১৩ রান করে।

এর আগে সিরিজের একমাত্র টেস্টে টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন মুমিনুল হক। চতুর্থ ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরতেই এদিন টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের এই টেস্ট অধিনায়ক। স্বাগতিকদের চেপে ধরার বদলে নড়বড়ে শুরু করে উল্টো প্রথম ইনিংসেই বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। ব্লেসিং মুজারবানির পেস তাণ্ডবে ধস নামে বাংলাদেশের টপ অর্ডারে।

হাঁটুর ইনজুরির কারণে তামিম ইকবাল না থাকায় সাইফ হাসানকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস শুরু করেন সাদমান ইসলাম। প্রস্তুতি ম্যাচ হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিলেও মূল ম্যাচে এসে ব্যাট হাতে ব্যর্থ সাইফ।  ইনিংসের প্রথম ওভারে তাঁকে বোল্ডকে জিম্বাবুয়ে দারুণ শুরু এনে দেন মুজারাবানি। ৫ বলে কোন রান না করেই সাজঘরে ফেরেন ডানহাতি এই ওপেনার।

ইনিংসের পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে নাজমুল হোসেন শান্তকে ব্যক্তিগত ২ রানে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান মুজারাবানি। জিম্বাবুয়ের এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল খোঁচা দিয়ে থার্ড স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন শান্ত। এরপর মুমিনুলের সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন সাদমান। 

মুমিনুলের সঙ্গে ৬০ রানের জুটি গড়লেও নিজে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি সাদমান। ব্যক্তিগত ২৩ রানে অফ স্টাম্পের বাইরের বল খোঁচা দিয়ে স্লিপে ব্রেন্ডন টেলরের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন তিনি। বাঁহাতি এই ওপেনারকে ফেরান রিচার্ড এনগারাভা। একপ্রান্তে মুমিনুল লড়াই চালিয়ে গেলেও এদিন বাংলাদেশের হাল ধরতে পারেনি মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। 

মধ্যাহৃ বিরতির আগে তিন উইকেট হারানো বাংলাদেশ দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ঘণ্টায়  আরও তিন উইকেট হারায়। যেখানে একে একে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক, সাকিব ও মুমিনুল। দুই দফায় ক্যাচ দিয়েও রক্ষা পান মুমিনুল। এর মাঝে অবশ্য হাফ সেঞ্চুরি ‍তুলে নেন তিনি।

হাফ সেঞ্চুরির পরই এনগারাভার হাতে ব্যক্তিগত ৫৪ রানে জীবন পেয়েছেন তিনি। এরপর ব্যক্তিগত ৬০ রানে মুজারাবানির বলে তাকেই ক্যাচ দিয়েছিলেন মুমিনুল। তবে সেই ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি জিম্বাবুয়ের সেই পেসার। মুমিনুলের লড়াই থামে ভিক্টর নিয়াউচির বলে। সেবার অবশ্য তাঁর ক্যাচ নিতে ভুল করেনি জিম্বাবুয়ের ফিল্ডার ডিয়ন মেয়ার্স।

১৩২ রানে ৬ উইকেট হারানো বাংলাদেশের হাল ধরেন লিটন ও মাহমুদউল্লাহ। এই দুজনের ১৩৮ রানের জুটিতে শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠে বাংলাদেশ। ৮৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয়া লিটন ৯৫ রান করে ফিরলে ভাঙে তাঁদের এই জুটি। হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন মাহমুদউলাহও। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচে দিয়ে প্রায় ১৬ মাস পর টেস্ট দলে ফিরেছেন তিনি।

নিজের প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসেই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। মুজারাবানির বলে চার মেরে ১৩৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মাহমুদউল্লাহ। ইনিংসটি খেলতে পাঁচটি চার মেরেছেন তিনি।  এটি তাঁর ক্যারিয়ারের ১৭তম হাফ সেঞ্চুরি। টেস্টে ৮ ইনিংস ও দুই বছর পর হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন তিনি।

এদিকে লিটনের ফেরার পরের বলেই ট্রিপানোর বলে আউট হয়েছেন মিরাজ।  আলোকস্বল্পতার কারণে প্রথম দিনের খেলা বন্ধ হওয়ার আগে শেষ ২৮ বলে অবশ্য আর কোন উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। এই সময় ২৪ রান তুলেছেন মাহমুদউল্লাহ ও তাসকিন। যেখানে ১৩ রান এসেছে তাসকিনের ব্যাট থেকে।

২ চারের সাহায্যে ১৫ বলে ১৩ রান করে অপরাজিত রয়েছেন তিনি। আর লিটনের সঙ্গে শতরানের জুটি গড়া মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত ৫৪ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন ব্যাটিংয়ে নামবেন। জিম্বাবুয়ের হয়ে মুজারাবানি তিনটি আর ট্রিপানো ও নিয়াউচি নিয়েছেন দুটি করে উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ- ২৯৪/৮ (৮৩ ওভার) (মুমিনুল ৭০, সাদমান ২৩, রিয়াদ ৫৪*, লিটন ৯৫, মুজারাবানি ৩/৪৮, ট্রিপানো ২/৩৬)