জিম্বাবুয়ে - বাংলাদেশ সিরিজ

সাদা পোশাকে বাংলাদেশের রঙিন পারফরম্যান্সের খোঁজ

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 22:18 মঙ্গলবার, 06 জুলাই, 2021

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

রঙিন পোশাকে নিজেদের পরিণত দল হিসেবে তৈরি করলেও টেস্টে এখনও ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। চলতি বছর সাদা পোশাকের ক্রিকেটে হতশ্রী বাংলাদেশের পারফরম্যান্স। ওয়েস্ট ইন্ডিজের খর্বশক্তির দলের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে ড্র। তাতে বাংলাদেশ শিবিরে কিছুটা স্বস্তির সুবাতাস বইলেও পরের টেস্টেই বাজেভাবে হারতে হয়েছিল মুমিনুল হকের দলকে।

জয়ে ফিরতে এই মুহূর্তে জিম্বাবুয়ের চেয়ে ভালো প্রতিপক্ষ অন্তত পাবে না বাংলাদেশ। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে রঙিন পারফরম্যান্সের খোঁজে বুধবার (৭ জুলাই) দুপুর দেড়টায় হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ।

যদিও টেস্টে জিম্বাবুয়ের মাটিতে স্বস্তির সুযোগ নেই সফরকারীদের। জিম্ববুয়ের মাটিতে খেলা সাত টেস্টের মাত্র একটিতে জয় বাংলাদেশের। এক ড্রয়ের সঙ্গে বাকি পাঁচটিতেই জয় জিম্বাবুয়ের। তবে পুরোনো জিম্বাবুয়ের মতো এখনকার দলটার সেই ধাঁচ না থাকায় কিছুটা স্বস্তি পেতেই পারে বাংলাদেশ। 

প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে হলেও দেশের বাইরে টেস্টে জয় পাওয়াটা যে সহজ হবে না সেটা ভালো করেই জানেন মুমিনুল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট জিততে বোলিং, ব্যাটিং, ফিল্ডিং- তিন বিভাগেই ভালো করার বিকল্প দেখছেন না বাংলাদেশের এই টেস্ট অধিনায়ক। সেই সঙ্গে টিমওয়ার্ক গুরুত্বপূর্ণ দাবি করেছেন তিনি।

মুমিনুল বলেন, ‘শুধু জিম্বাবুয়ে নয়, যে কোনো দলের বিপক্ষে তাদের মাঠে খেললে, ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং, তিন দিকই ভালো করতে হয়। ফোকাস রাখতে হয়। সেই সঙ্গে টিমওয়ার্ক খুব গুরুত্বপূর্ণ। এদিকটায় ভালো করলে আশা করি টেস্ট জিততে পারবো।’

বাংলাদেশের জন্য বড় স্বস্তির জায়গা হতে পারে সাকিব আল হাসানের ফেরা। ছুটি কাটিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ফিরতে যাচ্ছেন সময়ের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। সাকিবের ফেরা যেমনটা বাংলাদেশকে স্বস্তি দিচ্ছে তেমনি অস্বস্তি রয়েছে তামিম ইকবালকে ঘিরে।

বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) খেলা চলাকালীন হাঁটুর ইনজুরিতে পড়েছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। বেশ কিছুদিন বিশ্রাম নিলেও এখন পুরোপুরি সেরে ওঠেননি তিনি। যে কারণে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে তাঁকে পাওয়া নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। যদিও মুমিনুল জানিয়েছেন, তামিমের জন্য ম্যাচের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চায় টিম ম্যানেজমেন্ট।

এদিকে সময় যত গড়িয়েছে ততই নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে এক সময়ের অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার-হিথ স্ট্রিকদের সোনালি যুগের জিম্বাবুয়ে। ২০১৩ সালের পর ঘরের মাঠে কোন টেস্ট জিততে পারেনি তাঁরা। যদিও মাঝের সময়টার তুলনায় জিম্বাবুয়ে এখন খানিকটা পরিণত।

ঘরের মাঠে জয়ে ফিরতে হারতে থাকা বাংলাদেশকে চেপে ধরার স্বপ্নে বিভোর তাঁরা। যদিও গেল কয়েক বছরে বাংলাদেশের সঙ্গে সেভাবে প্রতিযোগিতা করতে পারেনি স্বাগতিকরা। পুরোনো সেই হারের কথা ভুলেননি ব্রেন্ডন টেলর। টেস্ট শুরুর একদিন আগে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ পূর্ণশক্তির দল হলেও তাঁদের সঙ্গে লড়াই করতে মুখিয়ে রয়েছেন।

টেলর বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে ওরা অনেক কঠিন সময় উপহার দিয়েছে আমাদের। এবার তাই দেশে খেলতে পারা এবং এখানে নিজেদের শক্তির জায়গায় খেলতে পারাটা দারুণ। ওদের দলটাও শক্তিতে পূর্ণ। কঠিন চ্যালেঞ্জই আশা করছি। অন্য যে কোনো দলের চেয়ে ওদের সঙ্গে বেশি লড়েছি আমরা। এবারও দারুণ লড়াই হবে। আমি মুখিয়ে আছি মাঠে নামতে ‘

বাংলাদেশকে ঘায়েল করতে হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠের উইকেটে দেখা যেতে পারে বাড়তি বাউন্স। সেই সঙ্গে গতিময় উইকেটেরও দাবি তুলেছেন টেলর। উপমহাদেশের দল হওয়ায় ধীরগতির ও স্পিনবান্ধব উইকেটে খেলে অভ্যস্ত বাংলাদেশ। ধীরগতির উইকেট বানিয়ে বাংলাদেশকে ফাঁদে ফেলতে গিয়ে নিজেরাই ফাঁদে পড়তে চান না তাঁরা। 

টেলর বলেন, ‘অবশ্যই আমরা চাইব ফাস্ট ও বাউন্সি উইকেট পেতে, ওদের ব্যাটের কানা খুঁজে নিতে। চাইবো না যেন বেশি মন্থর হয়, তাহলে তা ওদের পক্ষে চলে যাবে। ওরা অভিজ্ঞ ও মানসম্পন্ন দল। ঘরের কন্ডিশনের ব্যাপারটিই এমন। আশা করি, তা আমাদের পক্ষে থাকবে। তবে এসব সামলানোর জন্য যথেষ্ট ভালো দল ওরা। কাজেই আমরা জানি, খুব ভালো দলের বিপক্ষে লড়তে হবে আমাদের।’

ঘরের মাঠে খেলা হলেও জিম্বাবুয়ের সবচেয়ে বড় অস্বস্তি দলের দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার শন উইলিয়ামস ও ক্রেইগ অ্যারভিনের না থাকা। ২০ সদস্যের টেস্ট স্কোয়াডে থাকলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলা হচ্ছে না তাঁদের। পরিবারের সদ্যসরা করোনা আক্রান্ত হওয়ায় আপাতত আইসোলেশনে রয়েছেন এই দুই ক্রিকেটার।