বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ

আরেকটি হোয়াইওয়াশ নাকি উইন্ডিজদের ঘুরে দাঁড়ানো

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 21:41 রবিবার, 24 জানুয়ারি, 2021

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

ওয়ানডে সুপার লিগের সেরা সাত দল খেলবে ২০২৩ বিশ্বকাপ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ দিয়ে সেই ওয়ানডে সুপার লিগের যাত্রা শুরু করেছে টাইগার বাহিনী। তিন ওয়ানডের দুটিতে জিতে ইতোমধ্যেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে তাঁরা। শেষ ওয়ানডেতে জিতলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করার পাশাপাশি সুপার লিগের পয়েন্ট তালিকায় ত্রিশ পয়েন্ট পেয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল দুই ম্যাচ খেললেও এখনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট উপহার দিতে পারেনি। ওয়ানডে সুপার লিগেও তাদের পয়েন্টের খাতা শূন্য। এদিকে মিরপুরের শের ই বাংলা স্টেডিয়ামের উইকেটে রীতিমত খাবি খেতে হয়েছে উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের। বন্দর নগরী চট্টগ্রামে তাই প্রতিদ্বন্দ্বতীপূর্ণ ক্রিকেট উপহার দিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে হবে জেসন মোহাম্মদের দলকে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের পর এ বছরের মার্চে নিউজিল্যান্ড সফর করবে বাংলাদেশ। গুরুত্বপূর্ণ সেই সিরিজের প্রস্তুতি হিসেবে অতিরিক্ত ক্রিকেটারদের বাজিয়ে দেখতে চায় টিম ম্যানেজমেন্ট। যে কারণে তৃতীয় ওয়ানডের দলে একাধিক পরিবর্তন আসবে এটা জানা গিয়েছে দ্বিতীয় ওয়ানডে শেষেই। ইনজুরি থেকে সেরা ওঠায় পেসার তাসকিন আহমেদ ও অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিনের খেলা প্রায় নিশ্চিত।

‌এই ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডে অভিষেক হতে যাচ্ছে তরুণ সম্ভবনাময় বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের। শুধু বোলিং বিভাগেই নয় পরিবর্তন আসতে পারে ব্যাটিংয়েও। তৃতীয় ওয়ানডের একাদশে সুযোগ পেতে পারেন মিথুন আলি এবং আফিফ হোসেন ধ্রুব। সেক্ষেত্রে দুজনই মিডল অর্ডারে খেলতে পারেন। এদিকে দুই ওয়ানডেতে ৬ ও ৭ উইকেটে জেতায় ব্যাটিংয়ের সুযোগ হয়নি সৌম্য সরকারের।

নিউজিল্যান্ড সিরিজের আগে সাদা বলে তাঁর ব্যাটিং অনুশীলনটাও গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই সিরিজ দিয়েই মিডল অর্ডারে ফিনিশারের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন সৌম্য। এই ম্যাচে আর এক স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসানেরও অভিষেক ঘটতে পারে। পাওয়ার প্লেতে কার্যকরী বোলিং করার পাশাপাশি লোয়ার অর্ডারে দ্রুত রান করার ক্ষমতাই তাকে জাতীয় দলের চূড়ান্ত স্কোয়াডে সুযোগ করে দেয়।

স্পিনিং উইকেটের ফায়দা নিতে খেলতে পারেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামও। যদিও সাকিব আল হাসান এবং মেহেদী হাসান মিরাজ থাকায় তাঁর খেলার সম্ভবনা কম। এদিকে চট্টগ্রামের উইকেট মিরপুরের মতো স্পিন সহায়কও নয়। সেক্ষেত্রে তাইজুলের সেরা একাদশে জায়গা পাওয়াটা বেশ কঠিনই বটে। তবে বাংলাদেশের অধিনায়ক তামিম ইকবাল জানিয়েছেন যারাই একাদশে সুযোগ পাবেন প্রত্যেকেরই ম্যাচ জেতানোর সক্ষমতা রয়েছে।

সিরিজের শেষ ম্যাচ জিতে আরও ১০ পয়েন্ট অর্জনেই লক্ষ্য তাঁর। তৃতীয় ম্যাচের আগে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তামিম বলেন, 'হ্যা আমরা সিরিজ জিতেছি। কিন্তু আরও ১০ পয়েন্ট পাওয়ার আছে। আমরা জানি ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য প্রথম দুই ম্যাচের অভিজ্ঞতা ভালো ছিল না, কিন্তু তারা একটি বিপদজনক দল, যে কোনো সময়েই তারা ফিরে আসতে পারে। আমাদের কিছু সামান্য পরিবর্তন আসতে পারে।'

'কিন্তু আমি নিশ্চিত করতে পারি যারাই একাদশে আসবে তারা ম্যাচ উইনার। তারা অতীতে যখনই খেলেছে ভালো খেলেছে। আমার মনে হয় ড্রেসিং রুমে প্রচণ্ড জয়ের ক্ষুধা রয়েছে, সবাই মাঠে গিয়ে ভালো করতে চায় এবং আমি আশা করছি এটি চলবে। আগামীকালের ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ। হ্যা আমরা সিরিজ জিতেছি কিন্তু যেটা আমি বললাম, আরও ১০ পয়েন্ট বাকি আছে জেতার জন্য।'

এদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে তেমন পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। সেক্ষেত্রে প্রথম দুই ওয়ানডে খেলা ক্রিকেটারদেরই জ্বলে উঠতে হবে। বাংলাদেশের পেস বোলিংয়ের বিপক্ষে তারা ভালো খেললেও স্পিনে খেঁই হারিয়ে ফেলেছে দলটির টপ এবং মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা। তাই জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সাকিব-মিরাজদের স্পিন সামলানোটাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়াবে ক্যারিবিয়দের।

বোলিংয়ের ক্ষেত্রে তাদের শক্তির জায়গা তরুণ স্পিনার আকিল হোসেইন। প্রথম ম্যাচের পর দ্বিতীয় ম্যাচেও তিনি দারুণ সফল হয়েছেন। তৃতীয় ম্যাচেও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য তিনি হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারেন। এছাড়া পেস বোলার আলজারি জোসেফও নতুন বলে দারুণ শুরু করেছেন। অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদও অফ স্পিনে তামিম-মুশফিকদের বিপদে ফেলতে পারেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটাররা না আসায় জেসন মোহাম্মদের নেতৃত্বে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্যেই এসেছিল ক্যারিবীয়রা। তবে প্রথম দুই ম্যাচের পর উল্টো হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর জন্য শেষ ম্যাচে লড়তে হবে তাদের। তাই দলটির প্রধান কোচ ফিল সিমন্স জানিয়েছেন, ওয়ানডে সুপার লিগের অন্তত ১০ পয়েন্ট পেতেই এখন লড়বে তার দল। একই সঙ্গে হোয়াইট ওয়াশও এড়াবে তারা।

সিমন্স বলেন, আমরা এখানে এসেছিলাম ৩০ পয়েন্টের লক্ষ্য নিয়ে। এখনও আমাদের এই প্রতিযোগিতার ১০টি পয়েন্ট নেয়ার সুযোগ আছে। তবে সবচেয়ে বেশি দরকার উন্নতির ধারা বজায় রাখা। আমরা ১২২ থেকে ১৪৮ পর্যন্ত গিয়েছি। কিন্তু আমাদের করতে হবে ২৩০-২৫০। তাহলেই আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব। বোলারদের জন্য কিছু করার থাকবে, সাহস নিয়ে খেলা যাবে। তবে আমাদের মূল লক্ষ্য ১০ পয়েন্ট। আরও যোগ করেন ক্যারিবীয়ান এই প্রধান কোচ।

বাংলাদেশ একাদশ (সম্ভাব্য): তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, শরিফুল ইসলাম এবং মুস্তাফিজুর রহমান।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ (সম্ভাব্য): জর্ন ওটলে, সুনীল অ্যামব্রিস, জসুয়া ডি সিলভা (উইকেটরক্ষক), অ্যান্দ্রে ম্যাকার্থী, জেসন মোহাম্মদ (অধিনায়ক), কাইল মায়ার্স, রভম্যান পাওয়েল, এনক্রুমাহ বোনার, রেমন্ড রেইফার, আলজারি জোসেফ এবং আকিল হোসেইন।