বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ

অপেক্ষা শেষ হচ্ছে ৩১৩ দিনের

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 20:05 মঙ্গলবার, 19 জানুয়ারি, 2021

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

৩১৩ দিনের অপেক্ষা। মিরপুর শের ই বাংলা স্টেডিয়ামের সবুজ গালিচায় আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে দিয়ে ৯ মাস পর লাল-সবুজ জার্সিতে খেলা দেখার সুযোগ পাবেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরা। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ১১টায়।

বেশ কিছু কারণে এই সিরিজটি বাংলাদেশের জন্য বিশেষ। প্রথমত, এই সিরিজ দিয়েই নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন বাংলাদেশের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসান।

১ বছর নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরলেও বাংলাদেশের হয়ে মাত্র দুটি সিরিজ মিস করেছেন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। দ্বিতীয়ত ৯ মাস আগে অধিনায়কত্ব পেলেও এবারই আনুষ্ঠানিক ভাবে নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন তামিম ইকবাল।

করোনাভাইরাসের কঠোর প্রটোকলের কারণের এবার ১৮ সদস্যের দল ঘোষণা করেছেন নির্বাচকরা। দলে জায়গা হয়নি সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার। এ ছাড়া ইনজুরির কারণে বাদ পড়েছেন শফিউল ইসলামও।

দলে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে তরুণ ক্রিকেটারদেরই। প্রথমবারের মতো ওয়ানডে স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন শরিফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান এবং হাসান মাহমুদ।

সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে এই তিন তরুণই ছিলেন প্রায় অপ্রতিরোধ্য। শরিফুল মুগ্ধ করেছেন লাইন লেন্থ আর কাটার স্লোয়ার দিয়ে। হাসান মাহমুদের সবচেয়ে বড় শক্তি স্পট বল।

মেহেদী হাসান নজর কেড়েছেন আঁটসাঁট স্পিন বোলিংয়ের সঙ্গে পাওয়ার হিটিং দিয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে এই তিন তরুণের মধ্যে অন্তত দুজনের অভিষেক হওয়া প্রায় নিশ্চিত।

ম্যাচ মাঠে গড়ানোর দুদিন আগেই টাইগারদের ব্যাটিং লাইন আপ নিয়ে খোলাসা করেছেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। ওপেনিংয়ের সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সিরিজের যথারীতি তামিমের সঙ্গী হিসেবে থাকছেন লিটন দাস।

অধিনায়ক তামিমও জানিয়েছেন, এই ম্যাচে তিন নম্বরে ব্যাট করবেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তাকে জায়গা দিয়ে পছন্দের তিন নম্বর ছাড়তে হচ্ছে সাকিব আল হাসানকে। চারে মুশফিকুর রহিম আর পাঁচে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সেই সঙ্গে সাত নম্বরে অলরাউন্ডার হিসেবে সৌম্যর খেলা প্রায় নিশ্চিত।

যদিও ম্যাচের আগেরদিন পেসার এবাদত হোসেনের বলে পাওয়া গলার চোট শঙ্কা তৈরি করেছে তার জায়গা নিয়ে। আট নম্বরে থাকবেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। এরপর জায়গা পেতে পারেন মেহেদী হাসান।

আর পেস ইউনিটে মুস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে থাকতে পারেন শরিফুল ইসলাম বা হাসান মাহমুদের কেউ একজন। ম্যাচ শুরুর আগের দিন ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তামিম জানিয়েছেন, ক্যারিবিয়ান দল নিয়ে কোনো চিন্তা নেই তার। বাংলাদেশ দলের পূর্ণ মনোযোগ নিজেদের খেলায়।

'ওয়েস্ট ইন্ডিজের দল নিয়ে যা বললেন, এটা আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নেই। যে ওরা কি দল পাঠাবে, কে আসবে বা না আসবে। আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে আমাদের ভাল খেলা। এখন তো সিরিজ গুলো নরমাল সিরিজ না, যেখানে হারলে সমস্যা নেই। ওয়ার্ল্ড কাপ কোয়ালিফাইংয়ের জন্য প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি শুধু সেটাতেই আমরা মনোযোগ রাখছি। যেটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নেই সেটা নিয়ে আলাপ করে খুব বেশি লাভ নেই।'

এবার আসা যাক ওয়েস্ট দল নিয়ে আলোচনায়। এবারের বাংলাদেশ সফরে আসেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের অনেক শীর্ষ ক্রিকেটার। বাংলাদেশ সফরে নেই ক্যারিবীয়দের নিয়মিত ওয়ানডে অধিনায়ক কাইরন পোলার্ডও।

তার পরিবর্তে এই সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নেতৃত্ব দেবেন জেসন মোহাম্মদ। এই সিরিজ দিয়েই দীর্ঘ ২ বছর পর ওয়ানডে খেলতে নামবেন তিনি। 

মিডল অর্ডারে ক্যারিবীয়রা ভরসা রাখবে হার্ড হিটিং ব্যাটসম্যান রভম্যান পাওয়েলে। দলটিতে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার বলতে আছেন পেসার আলজারি জোসেফ, সহ-অধিনায়ক সুনীল অ্যামব্রিস এবং ব্যাটসম্যান রেমন্ড রেইফার।

দলটির বাকি নয় ক্রিকেটার একেবারেই নতুন। তাদের কারো অভিষেকই হয়নি এই ফরম্যাটে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারেরই অভিষেক হচ্ছে বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার প্রথম ওয়ানডেতে।  

সিরিজ শুরুর আগেই দলটি দুঃসংবাদ পেয়েছে। করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারণে দলের সঙ্গে আসতে পারেননি পেসার রোমারিও শেফার্ড। তার পরিবর্তে বাংলাদেশে এসেছেন কিয়ন হার্ডিং। আর বাংলাদেশে এসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন স্পিনার হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র। তিনি আছেন আইসোলেশনে।

ক্যারিবীয়দের স্কোয়াডে আছেন বেশ কয়েকজন তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটার। এদের মধ্যে অন্যতম জসুয়া ডি সিলভা। গত মাসেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক হয়েছে। এ ছাড়া পেসার চিমার হোল্ডার, অলরাউন্ডার কাইল মায়ার্স এবং আকিল হোসেইন আলো ছড়াতে পারেন অভিষেক সিরিজেই।

বাংলাদেশ একাদশ (সম্ভাব্য): তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদী হাসান, শরিফুল ইসলাম/হাসান মাহমুদ ও মুস্তাফিজুর রহমান। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ (সম্ভাব্য): জসুয়া ডি সিলভা (উইকেটরক্ষক), সুনীল অ্যামব্রিস, জ্যাসন মোহাম্মদ (অধিনায়ক), আন্দ্রে ম্যাককার্থী, রেমন্ড রেইফার, রভম্যান পাওয়েল, কাইল মায়ার্স, এনক্রুমাহ বনার, চিমার হোল্ডার, আকিল হোসেইন ও আলজারি জোসেফ।