দেশীয় কোচরা ‘ই’ গ্রেডের মানুষ

আবিদ মোহাম্মদ

আবিদ মোহাম্মদ
প্রকাশের তারিখ: 17:21 বৃহস্পতিবার, 17 ডিসেম্বর, 2020
|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপডেন্ট ||
 
শুক্রবার পর্দা নামবে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের। শুকরবারের ফাইনালের আগে বৃহস্পতিবার অনুশীলন শেষে গণমাধ্যমের সামনে কোচদের পারিশ্রমিক নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। সেই সঙ্গে দেশিও কোচদের আরও মূল্যায়ন করার অনুরোধ করেছেন গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের এই কোচ।
 
চলতি টুর্নামেন্টে এ গ্রেডে থাকা ক্রিকেটাররা পাচ্ছেন ১৫ লক্ষ টাকা। বি গ্রেড ১০ লক্ষ, সি গ্রেড ৬ লক্ষ এবং ডি গ্রেডে থাকা ক্রিকেটাররা পাচ্ছেন ৪ লক্ষ থাকা। অথচ এসব ক্রিকেটারদের দায়িত্বে থাকা কোচদের পারিশ্রমিক মাত্র ৩ লক্ষ। যা পাবেন টুর্নামেন্টে অংশ নেয়া পাঁচ দলের ৪ কোচ।
 
সালাউদ্দিন অবশ্য আলাদা করে কোনো পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না। কারণ গাজী গ্রুপের সঙ্গে কর্মরত থাকায় মাসিক ভিত্তিতে বেতন পেয়ে থাকেন তিনি। তবে বাকি ৪ কোচের পারিশ্রমিক ইস্যুতে নিজের ভাবনার কথা জানিয়েছেন দেশের ক্রিকেটের অন্যতম সফল এই কোচ।
 
সালাউদ্দিন বলেন, 'আমি এখানে কোনো পারিশ্রমিক নিচ্ছি না, গাজী গ্রুপে আমি চাকরি করি। তবে অন্য কোচদের পারিশ্রমিকের ব্যাপারে আমি খুব লজ্জিত। সারাজীবনই চেয়েছি বাংলাদেশে যেন কোচরা উঠে আসে।'
 
'আরও বেশি সাবেক ক্রিকেটার যেন কোচিং করাতে আসে। তারা যেন একটা ভালো মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে পারে। আমার কাছে মনে হয়, এ ধরনের পারিশ্রমিকে কখনই কোনো ছেলেকে বলব না, তোমরা কোচিংয়ে আসো' আরও যোগ করেন তিনি।
 
সালাউদ্দিনের অধীনে দারুণ ক্রিকেট খেলেছে গাজী গ্রুপ। গ্রুপ পর্বের ৮ ম্যাচের ৭টিতে জিতে শেষ চার নিশ্চিত করলেও প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে হোঁচট খায় দলটি। এরপরও দ্বিতীয় ইলেমেনেটরে ছন্দে ফিরে ফাইনাল নিশ্চিত করেন তাইজুল ইসলাম-মোহাম্মদ মিঠুনরা। শুক্রবার শিরোপার লড়াইয়ে জেমকন খুলনার মুখোমুখি হবে চট্টগ্রাম।
 
এবারই প্রথম কোচ হিসেবে ফাইনাল খেলছেন না সালাউদ্দিন। বিপিএলে ২বার শিরোপাও জিতেছেন তিনি। তবে সেই বিপিএলেও দেশি কোচদের প্রাধান্য কম দেয়া হয়। এমনকি জাতীয় দল বা এর আশে-পাশে কাজ করতে গেলেও পারিশ্রমিক তুলনামূলক অনেক কম থাকে। এমন অভিযোগ উঠেছে বেশ কয়েকবার। 
 
দেশের কোচদের মূল্যায়ন নিয়ে সালাউদ্দিন সরাসরি কথা বললেও নিজেদের 'ই' গ্রেডের মানুষ দাবি করেছেন তিনি। কারণ ডি গ্রেডে থাকা ক্রিকেটাদের পারিশ্রমিক তাদের চেয়ে বেশী। এমন পরিস্থিতিতে কিভাবে অন্য কাউকে কোচিংয়ে আসতে উৎসাহিত করবেন সালাউদ্দিন জানা নেই তার।
 
সালাউদ্দিন আরও বলেন, 'এদেশে কোচদের মূল্যায়ন হয় কি না ,আমি জানি না। দেখেন, আমরা ‘ই’ গ্রেডের মানুষ। ‘ডি’ গ্রেডের একটা খেলোয়াড় যা পাচ্ছে, একটা কোচ সেটাও পাচ্ছে না। তাহলে কেন আমি আরেকটা কোচকে বলব এই পেশায় আসতে? আমরা ‘ই’ গ্রেডের মানুষ, সহকারী কোচরা হয়তো ‘এফ’ গ্রেডের, ট্রেনাররা ‘জি’, ‘এইচ’ বা এরকম গ্রেডের আর কী'
 
'আমার মনে হয় সঠিক মূল্যায়ন করা উচিত। কোচদের মূল্যায়ন না করা মানে হচ্ছে, দলের ওপর আমাদের কোনো প্রভাব নেই। আমরা আসলে আছি, শুধু একটা ম্যাচ চালিয়ে দিব, একটা টুর্নামেন্ট চালিয়ে দিব। এর বাইরে আমাদের আর কিছু করার নাই' আরও যোগ করেন তিনি।