অস্ট্রেলিয়া - ভারত সিরিজ

আইনের ফাঁক খোঁজায় আমরা পটু

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 14:36 শনিবার, 05 ডিসেম্বর, 2020

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাথায় আঘাত পাওয়ার কারণে দ্বিতীয় ইনিংসে মাঠে নামতে পারেননি রবীন্দ্র জাদেজা। যে কারণে তাঁর কনকাশন সাব হিসেবে মাঠে নামেন যুবেন্দ্র চাহাল। নামার পর থেকেই সমালোচনা শুরু হয়েছে বিষয়টি নিয়ে। এ প্রসঙ্গে সঞ্জয় মাঞ্জরেকার জানিয়েছেন, আইনের ফাঁক খোঁজায় আমরা পটু।

সময়ের বিবর্তনে কখনও কখনও নিয়মের পরিবর্তন আনে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। আবারও কখনও নতুন নিয়মেরও সংযোজন করে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। কনকাশন সাবও আইসিসির সংযোজনকৃত একটি নিয়ম। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার কনকাশন সাব দেখেছে ক্রিকেটে বিশ্ব।

গেল বছর অ্যাশেজ টেস্টে মাথায় আঘাত পাওয়ায় স্টিভেন স্মিথের কনকাশন সাব হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন মার্নাস ল্যাবুশেন। সেবারই অবশ্য প্রথম নতুন নিয়মটির বাস্তবায়ন দেখা গিয়েছিল। এরপর ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে লিটন দাসের কনকাশন সাব হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ আর নাইম হাসানের বদলি হিসেবে নেমেছিলেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম।

সেবার অবশ্য বিষয়টি নিয়ে এতো বেশি আলোচনা হয়নি। তবে সর্বশেষ রবীন্দ্র জাদেজার কনকাশন সাব হিসেব যুবেন্দ্র চাহাল নামায় চারিদিকে সমালোচনার ঝড় বইছে। চাহালের নজরকাড়া পারফরম্যান্সের কারণে অস্ট্রেলিয়া না হারলে হয়তো বিষয়টি নিয়ে এতো বেশি কথা হতো না।

আলোচনা-সমালোচনার কারণও আছে অবশ্য। মিচেল স্টার্কের এক বাউন্সারে জাদেজার হেলমেটে লাগলেও ব্যাট করতে দেখা গেছে তাকে। মাথায় আঘাতের পর তার ইনজুরি কতটা গুরুতর সেটি দেখতে মাঠে আসেননি কোনো চিকিৎসক। সেই সঙ্গে উপস্থিতি ছিল না কোনো ফিজিও। তাঁর পর থেকেই ভারতের এই কনকাশন সাব নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা।

সাধারণত আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী কোনো ক্রিকেটার খেলা চলাকালীন মাথায় আঘাত পেলে তার পরিবর্তে অন্য একজনকে নামানো যাবে। তবে ব্যাটসম্যানের পরিবর্তে ব্যাটসম্যানকে নামাতে হবে আর বোলারের পরিবর্তে বোলার। সেই জায়গায় ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে ঘটেছে একটু ভিন্ন কিছু।

জাদেজা ছিলেন অলরাউন্ডার। সেই হিসেবে তার পরিবর্তে নামানোর কথা ছিল আর একজন অলরাউন্ডারকে। কিন্তু তা না করে বোলিংয়ের সময় চাহালকে দিয়ে বোলিং করিয়েছে ভারত। হিসেবে দুইজনকেই ব্যবহার করেছে দলটি। যে কারণে ক্ষেপেছে অস্ট্রেলিয়ানরা। এ নিয়ে ইতোমধ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ময়সেস হেনরিকস।

শুধু তাই নয়, এ নিয়ে ম্যাচের সময় ম্যাচ রেফারি ডেভিড বুনের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ার কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার এবং অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে। এ নিয়ে ইতোমধ্যে কথা বলেছেন ভারতের সাবেক কয়েকজন ক্রিকেটারও। বাদ যাননি মাঞ্জরেকারও। সনি স্পোর্টস নেটওয়ার্কের অনুষ্ঠান ‘এক্সট্রা ইনিংসে’ তিনি জানিয়েছেন, নিজেদের সুবিধা নিতে আইনের ফাঁক খোঁজায় আমরা পটু।

এ প্রসঙ্গে মাঞ্জরেকারের বলেন, ‘এটার পর থেকে কনকাশন সাবের ক্ষেত্রে এখন আরও অনেক ভাবনাচিন্তা করা হবে। পুরো বিষয়টি নিয়েই ভাবতে হবে। কারণ ভালো উদ্দেশ্য নিয়েই আইন করা হয় কিন্তু আমরা সবাই নিজেদের সুবিধার জন্য সেটার ফাঁক বের করতে পটু। ভারত আইনটার ফায়দা নিয়েছে কি না, আমরা জানি না। তবে এখানে আইসিসির আরও ভালোভাবে নজর দেওয়া উচিত, যাতে একটা দল খুব বড় সুবিধা পেয়ে না যায়।’

এ নিয়ে কথা বলেছেন সুনিল গাভাস্কারও। তিনি বলেছেন, ‘কনকাশন সাব এর ব্যাপারটার সঙ্গে আমি একমত নই। সম্ভবত এটি পুরোনো ফ্যাশন। আমি সবসময় বিশ্বাস করে যে, আপনি যদি ভালো বাউন্সার খেলতে না পারেন আর বল যদি আপনার হেলমেটে আঘাত করে তাহলে আপনি কনকাশন সাব পাওয়ার যোগ্য না।'