ক্রিকেটে বাজি

ক্রিকেটে বাজির টাকা পরিশোধ করতে মা-বোনকে খুন

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 15:18 সোমবার, 30 নভেম্বর, 2020

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

ক্রিকেটে বাজি যেন এখন নিয়মিত ঘটনা। বেশ কয়েকদিন পরপরই দেখা যায় বাজিকরদের ধরা পড়তে। তবে ক্রিকেটে বাজির টাকা পরিশোধ করতে নিজের মা ও বোনকে খুন করেছে এমন ঘটনা বিরল। যদিও এমন ঘটনাই ঘটেছে ভারতের হায়দারবাদে। ক্রিকেট বাজির ক্ষয়ক্ষতি থেকে সৃষ্ট আর্থিক সমস্যা কাটিয়ে উঠতে মা ও বোনকে হত্যা করার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

অভিযুক্ত পাল্লি সৈনত রেড্ডি, যিনি প্রকৌশল শহরের নামিদামী একটি কলেজে পড়াশোনা করছিলেন এবং বেসরকারী সংস্থায় চাকরি করছিলেন। পড়াশোনা ও চাকরির পাশাপাশি তিনি ক্রিকেট বাজির নেশায় জড়িয়ে পড়েন। দীর্ঘদিন ধরেই এ নেশায় আসক্ত ছিলেন ২৩ বছর বয়সি এই শিক্ষার্থী। শুরুর দিকে নিজের টাকা দিয়ে বাজি ধরছিলেন। পরবর্তী সে যখন জানলো তার বাবা মারা যাওয়ার পর জীবনবীমার ও কিছু সম্পত্তি বিক্রয়ের টাকা তাঁর মা পাল্লি সুনিথা ব্যাংকে জমা রেখেছেন তখন সেই টাকা নিয়ে বাজি ধরতে শুরু করেন।

শুধু তাই নয়, বাজি ধরতে মায়ের ১৫ তোলা গয়নাও বিক্রি করে দিয়েছিলেন এই যুবক। মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বাজি ধরতেন সৈনত। তিনি ক্রিকেটে বাজি ধরার জন্য এবং বিলাসিতা করার জন্য বেশ কয়েক ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ ধার করেছিলেন। মোট কথা, তিনি ক্রিকেটে বাজি ধরে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করেছিলেন, যার কারণে তিনি আর্থিক সংকটে পড়েছিলেন।

পরবর্তী যেসব লোকেরা তাকে ধার দিয়েছিল তা ফেরত দেওয়ার জন্য তাকে চাপ দিচ্ছিল। এই চাপ সহ্য করতে না পেরে, তিনি তার মা ও বোনকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যাতে তিনি পারিবারিক সম্পত্তির একমাত্র মালিক হন এবং সকলের টাকা পরিশোধ করে সুখী জীবনযাপন করতে পারেন।

সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২৩ নভেম্বর রাতে তিনি ভুট্টার কীটনাশক কিনে নিয়ে আসেন এবং সেগুলো খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে দেন। সেদিন তাঁর রাতে ডিউটি আছে বলে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। বেরিয়ে যাওয়ার পরই নিজের ফোনের সুইচ অফ করে দেন এই যুবক। পরে যখন তিনি মোবাইল ফোনের সুইচ অন করেন তখন তাঁর মায়ের এসএমএস দেখতে পারেন যে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

বাসায় ফিরে আসার পর যখন তারা অজ্ঞান হয়ে যান, তখন তিনি তাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। পরবর্তীতে তাদেরকে গান্ধী হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। যদিও তাদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি। পরের দিন মারা যান তার বোন পাল্লি অনুজা রেড্ডি। যিনি ফার্মেসীতে পড়ছিলেন। অনুজা মারা যাওয়ার একদিন পর মারা যান তাদের মা সুনিথা।

খাবারে বিষের সন্ধান পাওয়ার পর তার আত্মীয়রা তার উপর সন্দেহজনক হয়ে ওঠে এবং পুলিশকে সতর্ক করে দেয়। এরপরে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল এবং সে দু'জনকেই হত্যার করার কথা স্বীকার করেছে। বালানগর ডিসিপি পিভি পদ্মজা জানান, তারা সোমবার সাইনাথ রেড্ডিকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে প্রেরণ করেছে।