বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ

তবুও ফুটবল খেলা জরুরি!

আবিদ মোহাম্মদ

আবিদ মোহাম্মদ
প্রকাশের তারিখ: 17:04 রবিবার, 22 নভেম্বর, 2020

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||

অনুশীলন শুরুর আগে গা গরম করতে ক্রিকেটাররা ফুটবল খেলে থাকেন নিয়মিত। বাংলাদেশ দলও অনুশীলনের আগে এই পথেই হাঁটে। সাকিব-মুশফিকেরা বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই ফুটবল খেলে থাকেন। তবে ইংলিশ ক্রিকেট থেকে আসা এ অভ্যাস অনেক সময় বিপদের কারণও হয়ে দাঁড়ায়। যেমন এবছরের শুরুতে এই ইংল্যান্ডই অনুশীলনে ফুটবল নিষিদ্ধ করেছে। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ খেলতে গিয়ে লিগামেন্টে চোট পেয়ে বসেন ররি বার্ন্স।

উপমহাদেশে ফুটবল খেলতে গিয়ে ক্রিকেটারের চোটে পরার গল্পের শেষ নেই। ম্যাচের আগে অনুশীলনে ফুটবল খেলতে গিয়ে চোট পাওয়ায় রোহিত শর্মাকে টেস্ট অভিষেকের জন্য অপেক্ষা করতে হয় সাড়ে তিন বছর। 

২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে মাঠে নামার ২ ঘন্টা আগে একই ভঙ্গিতে চোট পেয়ে ছিটকে যান যুবরাজ সিং। ২০০৩ বিশ্বকাপে ভারতের কোচ জন রাইট তো পুরো দলের ফুটবল খেলাই নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলেন।

ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি অবশ্য এই ফুটবল খেলার বিষয়ে বেশ ইতিবাচক। তিনি মনে করেন, ফুটবল খেলার মাধ্যমে খেলোয়াড়দের মধ্যে প্রতিযোগিতা তৈরি হয়। দলটির সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি অনুশীলনের আগে ফুটবল ম্যাচকে বাধ্যতামূলক করেছিলেন।

ফুটবল খেলার কারণে চোট পেয়েছেন এমন ক্রিকেটার বাংলাদেশ জাতীয় দলেও আছেন। বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলতে পায়ের লিগামেন্ট ছিড়েছিলেন নাসির হোসেন। এই চোট তাকে মাঠের বাইরে ছিটকে দিয়েছে ছয় মাসের জন্য। করাতে হয় অস্ত্রোপচার।

এর ৭দিন পর বগুড়াতে উত্তরাঞ্চলের হয়ে বিসিএলে খেলতে গিয়ে অনুশীলনের সময় চোট পান মুশফিকুর রহিম। ৩ সপ্তাহ মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি। এসবের পর দুই বছর আগে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুও বলেছিলেন, অনুশীলনে ফুটবল খেলার ব্যাপার বিধিনিষেধ আনা হবে।

সে সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী বলেছিলেন, 'ওয়ার্ম আপের জন্য খেললেও ক্রিকেটাররা প্রতিদ্বন্দ্বী মনোভাব নিয়ে থাকেন ও গোল করার একটা চিন্তাও তাদের মধ্যে কাজ করে। এ কারণে প্রায়ই বড় ইনজুরিতে পড়ছেন ক্রিকেটাররা। 

সম্প্রতি জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান ট্রেনার নিক লি অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটারদের ফুটবল খেলা নিষিদ্ধ করেছেন। তবে এই নিষেধাজ্ঞা এখনও পৌছায়নি জাতীয় দল বা বড়দের ক্রিকেটে। যে কারণেই হয়তো বড় মাশুল গুনতে হতে পারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে। কারণ বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের আগে এই ফুটবল খেলতে গিয়েই চোট পেয়েছেন তিনি।

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দুই বছর আগে ভারতের আকাশ চোপড়া বলেছিলেন, 'আমরা ফুটবল খেলতে গিয়ে চোট কেন পাই? কারণ আমাদের যে পেশিগুলো তা ক্রিকেটের জন্য অভ্যস্ত, ফুটবলের জন্য তা মানিয়ে নিতে পারে না।'

সাইফউদ্দিনের ক্ষেত্রেও হয়তো একই ঘটনায় ঘটেছে। রাজশাহীর হয়ে রবিবার সকালে অনুশীলনে নামার খানিক পরই ফুটবল অনুশীলনের সময়পায়ের গড়ালিতে চোট পান। লম্বা সময় বসে থাকার পর স্ট্রেচারে করে টিম বাসে উঠতে দেখা যায় এই তরুণকে। চোট কতটা গুরুত্বপূর্ণ এখনও জানা যায়নি।

মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার ছিলেন সাইফউদ্দিন। প্লেয়ার্স ড্রাফটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে না ডেকে তাঁকে নিয়েছিল দলটি। এমন অবস্থায় সাইফউদ্দিনের ইনজুরি যেমন ভাবাবে রাজশাহীকে তেমনকি অনুশীলনে ফুটবল খেলা কতটা জরুরী তাও ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।