ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট

বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটিই শেষ হয়ে থাকলো স্যামুয়েলসের

মমিনুল ইসলাম

মমিনুল ইসলাম
প্রকাশের তারিখ: 14:40 বুধবার, 04 নভেম্বর, 2020

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

পেশাদার ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকা অলরাউন্ডার মারলন স্যামুয়েলস। ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে এরই মধ্যে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী জনি গ্রেভ। 

দীর্ঘদিন ধরেই ক্রিকেটের বাইরে আছেন স্যামুয়েলস। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে জাতীয় দলের হয়ে শেষ বার খেলেছেন তিনি। সেই ম্যাচে যদিও ভালো করতে পারেননি তিনি। ব্যাটিং ৩২ বলে ১৯ রান করার পর বোলিংয়ে ২৫ রানে উইকেট শূন্য ছিলেন।

সেই ম্যাচের পর আর ক্যারিবিয়ানদের জার্সিতে আর দেখা যায়নি স্যামুয়েলসকে। শুধু জাতীয় দলই নয়, এমনকি গত দুই বছরে স্বীকৃত কোন ক্রিকেটেই খেলা হয়নি এই অলরাউন্ডারের। এবার ক্রিকেট থেকেই সরে দাঁড়ালেন তিনি। চলতি বছরের জুনেই অবশ্য পেশাদার ক্রিকেট থেকে বিদায়ের কথা বোর্ডকে জানান স্যামুয়েলস।

২০০০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন স্যামুয়েলস। ২০০২ সালে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট ও ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করে প্রথমবার ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসেন তিনি। এরপর থেকে দীর্ঘদিন  জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। যদিও ধারাবাহিকতার কারণে বারবার জায়গা হারাতে হয়েছে দল থেকে।

দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ারে তার সবচেয়ে উজ্জ্বলতম মুহূর্ত ২০১২ ও ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল। ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে হারতে থাকা ম্যাচে ৫৬ বলে ৭৮ রানের ইনিংস খেলে দলকে বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে ভাসান এই জ্যামাইকান ক্রিকেটার। এ ছাড়া ফাইনালে ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে একটি উইকেটও নিয়েছিলেন তিনি। তাতে ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। 

এর পরের গল্পটা ২০১৬ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালের শেষ ওভারে বেন স্টোকসকে ৪ ছক্কা মেরে দ্বিতীয়বারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপ জয় নিশ্চিত করেন কার্লোস ব্রাথওয়েট। তবে ফাইনাল জয়ের মুল নায়ক ছিলেন স্যামুয়েলস। মাত্র ১১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে দল যখন ধুঁকছিল, তখনই ৬৬ বলে ৮৫ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনি।

এছাড়া ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ক্রিস গেইলের সঙ্গে ৩৭২ রানের জুটি গড়েন স্যামুয়েলস। যা কি-না ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের জুটি। একটা সময় আইপিএল, বিপিএল, বিগ ব্যাশ, টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট, এসএলপিএল, সিপিএল, পিএসএলেও খেলেছেন এই তারকা ক্রিকেটার।

প্রায় ২০ বছরের ক্যারিয়ারের অনেক চড়াই-উৎরাইপার করেছেন স্যামুয়েলস। যেখানে নিজের অনেক বিতর্কিত কাজের জন্য সমালোচনায় পড়তে হয় তাঁকে। যার শুরুটা হয়েছিল ২০০২ সালে ভারত সিরিজে। সেবার টিম কারফিউ ভেঙে বিতর্ক সৃষ্টি করেন তিনি।  এরপর ২০০৮ সালে আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী আইন ভেঙে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞাসহ বিগ ব্যাশে শেন ওয়ার্নের দিকে ব্যাট ছুঁড়ে মারা, বেন স্টোকসের সঙ্গে লড়াইসহ নানাবিধ বিতর্কে আলোচনায় ছিলেন স্যামুয়েলস।

জাতীয় দলের হয়ে ৭১ টেস্ট, ২০৭ ওয়ানডে ও ৬৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন স্যামুয়েলস। যেখানে টেস্ট,ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে যথাক্রম ৩ হাজার ৯১৭, ৫ হাজার ৬০৬ ও এক হাজার ৬১১ রান করেছেন। ক্যারিয়ারে ১৭টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি করেছেন ৬৪টি হাফ সেঞ্চুরি।