যুব ক্রিকেট

শিরোপা ধরে রাখাই লক্ষ্য যুবাদের, অতিরিক্ত চাপে 'না'

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 23:11 রবিবার, 27 সেপ্টেম্বর, 2020

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

দেশের ক্রিকেট প্রেমিদের স্মৃতির ক্যানভাসে সবচেয়ে বেশি রঙ ছড়িয়েছে বাংলাদেশের কোন সাফল্য? অনেকেই ভাবনা ছাড়া জবাব দেবেন যুবাদের বিশ্বকাপ জয়। হোক অনূর্ধ্ব-১৯ দল, তবুও তো বিশ্বকাপ। দেশের ক্রিকেটে অন্তত শিরোপার বিচারে সবচেয়ে বড় অর্জন তো এনে দিয়েছেন আকবর আলীরাই। সেই শিরোপা ধরে রাখার মিশনে আগামী মাসের প্রথম দিন থেকে ২৮ ক্রিকেটারকে নিয়ে বিকেএসপিতে শুরু হচ্ছে অনুশীলন ক্যাম্প।

যে কোনো সাফল্যের পরই প্রত্যাশার পারদ বেড়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপার। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্ষেত্রেও সেটির ব্যতিক্রম কিছু হবে না এটাই স্বাভাবিক। দেশের মানুষের একটু বাড়তি নজর যে এদিকে আছে, সেটি বলাই যায়।

যে কোনো খেলাতেই চাপের দুই রকম প্রভাবই আছে। কখনো চাপ অনুপ্রেরণা যোগায়, কখনো ভেঙে ফেলে ডুবায় হতাশায়।

বর্তমানে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের নির্বাচক সাজ্জাদ আহমেদ তাই চাইছেন না কোনো কারণে হতাশায় ডুবে যাক ক্যাম্পে ডাক পাওয়া যুবারা, 'আমি জানি সমর্থক এবং মিডিয়ার চাপ থাকবেই। কিন্তু এই ছোট ছেলেদের ওপর বেশি চাপ দিলে লম্বা সময়ের জন্য এটা কেবল তাদের পারফরম্যান্সকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে।'

চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশের যুবাদের বিশ্বকাপ জয়ে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের চেয়ে সবার নজর কেড়েছে যেটি সেটি হল দলগত নৈপুণ্য। সেই ধারাবাহিকতায় নির্বাচকেরা চাইছেন দলটি যেন ভারসাম্যপূর্ণ হয়। আর এমনটাই হয়েছে বলে মনে করেন সাজ্জাদ।

যুব দলের এই নির্বাচক বলেন, 'স্কোয়াড যথেষ্ট ভারসাম্যপূর্ণ হয়েছে। এখানে বৈচিত্রতাও আছে, আমার মনে হয় এটাই তাদের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা। কিন্তু এখনই এসব অনুমান করা তাড়াহুড়ো হয়ে যায়। তাদের আরও উন্নতি করতে হবে। তখন তারা যেকোনো দলের বিপক্ষে লড়তে পারবে।'

২০২২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত হবে যুবাদের পরবর্তী বিশ্বকাপ। সে লক্ষ্য সামনে রেখে প্রাথমিক ক্যাম্পের স্কোয়াডে থাকা ৪৬ জন থেকে কাটছাট করে ২৮ জনে এনেছেন নির্বাচকরা। চাপ কিংবা যাই থাকুক না কেন, বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য শিরোপা ধরে রাখা সেটিও মনে করিয়ে দিয়েছেন সাজ্জাদ।

তিনি বলেন, 'অবশ্যই শিরোপা ধরে রাখা আমাদের প্রধান লক্ষ্য হবে। কিন্তু আমি এখনই আমাদের শক্তি সে পর্যায়ে আছে বলতে না রাজ। এখানে আরও বেশকিছু ব্যাপার আছে। তারা যত খেলবে,ততই শিখবে। এখানে বেশ কিছু প্রতিভাবান তরুণ আছে। তাদের প্ল্যান অনুযায়ী ভালো প্ল্যাটফর্ম দিতে পারলে তারা অনেক দূরে যাওয়ার সক্ষমতা রাখে।'

১ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রস্তুতি ক্যাম্পকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে এসেছেন হেড কোচ নাভিদ নেওয়াজ ও ট্রেনার রিচার্ড স্টনিয়ার। ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনও শেষ করেছেন তারা। আগের বারের কোচিং প্যানেল থেকে এই দুইজনকেই রেখেছে বিসিবি।

তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন দেশীয় কোচরা। জাতীয় দলের সাবেক ওপেনার মেহরাব হোসেন অপিকে ব্যাটিং ও সাবেক পেসার তালহা জুবায়েরকে দেয়া হয়েছে বোলিং কোচের দায়িত্ব। দেশীয় কোচদের মান উন্নয়নের করতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানান সাজ্জাদ।

যুব দলের এই নির্বাচক বলেন, 'আমরা আমাদের স্থানীয় কোচদের উন্নতি করতে চাই। যদি আমরা তাদের আন্তর্জাতিকভাবে সুযোগ না দেই, তাদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান সম্পর্কে জানতে পারবো না। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি নাবিদ নেওয়াজের সঙ্গে নতুন দেশীয় কোচদের সুযোগ করে দেয়ার।'

গেল বারের সাফল্য ধরে রাখতে যে এবারও মরিয়া বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যুবাদের নিয়ে বোর্ডের প্রস্তুতি কার্যক্রম দেখেই তা আঁচ করা যাচ্ছে। যদিও আরও একবার বিশ্ব মঞ্চে শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন বাংলাদেশের যুবারা, তাহলে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় আবারও উৎসবের জোয়ারে ভাসবে দেশের প্রতিটি কোনা। আর এতে লাভ হবে বাংলাদেশ ক্রিকেটেরই।