দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট

যে বছর ঝড়ের কবলে পরেছিল দক্ষিণ আফিকার ক্রিকেট

আবিদ মোহাম্মদ

আবিদ মোহাম্মদ
প্রকাশের তারিখ: 18:39 মঙ্গলবার, 08 সেপ্টেম্বর, 2020

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

পারফরম্যান্স যেমনই হোক দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় দলে সুযোগ পেতে সবার আগে লাগবে গায়ের রঙ। ৬জন কৃষ্ণাঙ্গ, ৫ জন শ্বেতাঙ্গ। ৬ জন কৃষ্ণাঙ্গের মধ্যে আবার ২ জন আফ্রিকান কৃষ্ণাঙ্গ থাকতেই হবে। এমনভাবেই সাজবে দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় দলের একাদশ। 

২০১৪ সালে বর্ণবিদ্বেষের জেরে এই নিয়ম চালু হয় দক্ষিণ আফ্রিকায়। নিয়ম অনুযায়ী সব জাতীয় দলে কালো-সাদা খেলোয়াড়দের আনুপাতিক হার হবে ৬০:৪০। মন্ত্রণালয় হুমকি দিয়েছিল, সরকারি এই সিদ্ধান্ত না মানলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অংশগ্রহণের ওপর আরোপ করা হবে নিষেধাজ্ঞা।

এরই ভিত্তিতে ২০১৫ বিশ্বকাপে কোটাভিত্তিক দল নিয়ে খেলতে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল খেললেও শিরোপা অধরা থেকে যায় দেশটির। ২০১৯ বিশ্বকাপে অবশ্য এই অদ্ভুত কোটা পদ্ধতি এবার অনুসরণ করেনি প্রোটিয়া ক্রিকেট বোর্ড।

২০১৪ সালে এই নিয়ম চালু হওয়ার আগে ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছিলেন গ্রায়েম স্মিথ, মার্ক বাউচার এবং জ্যাক ক্যালিসরা। তিন সিনিয়র ক্রিকেটারের বিদায়ের পর নতুন করে গড়ে উঠার চেষ্টায় ছিল দক্ষিন আফ্রিকার ক্রিকেট।কিন্তু এই কোটা পদ্ধতির কারণে দলে সুযোগ না পেয়ে অনেকেই প্রোটিয়া ক্রিকেট ছেড়ে নাম লেখান কোলপাক চুক্তিতে। 

কোলপাকে যাওয়ার সময় বেশ কয়েকজন প্রোটিয়া ক্রিকেটার বলেছিলেন, দীর্ঘ মেয়াদি ক্রিকেট ক্যারিয়ারের নিরাপত্তার জন্য এই কঠিনতম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। যার মধ্যে ছিলেন কাইল অ্যাবট এবং রাইলি রুশোও। দুজনই ২০১৫ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলেছেন।

পরবর্তীতে এই দুজনের সঙ্গে যোগ দেন ডোয়েইন ওলিভিয়ারও। সে সময় দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট দলের নেতৃত্বে থাকা ফাফ ডু’প্লেসি তাঁদের এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানালেও, এই সিদ্ধান্তকে মানতে পারেননি। দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার কোলপাকে যাওয়ার মাঝেই অবসর নিয়ে বসেন হাশিম আমলা, এবি ডি ভিলিয়ার্স এবং মরনে মরকেল।

এতোজন ক্রিকেটারের চলে যাওয়ার প্রভাব পরে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটেও। সম্প্রতি ইউটিউবে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সঙ্গে আলাপকালে ডু প্লেসি বলেন 'দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটের ওপর ঝড় বয়ে গেছিল। এক-দেড় বছরের মধ্যে কোলপাক ছাড়াও অনেক ক্রিকেটার অবসরে চলে যান। সব অভিজ্ঞদের হারিয়ে বসি আমরা। অনেক নতুন ক্রিকেটার পেলেও এবি ডি ভিলিয়ার্স, মরনে মরকেল, হাশিম আমলার মতো ক্রিকেটাররা অবসর নিয়ে ফেলেন, কাইল অ্যাবটের মতো খেলোয়াড় কোলপাকে চলে যায়, অলিভিয়ার যে খুব ভালো করছিল সেও। আমাদের পরবর্তী এবি ডি ভিলিয়ার্স ছিল রাইলি রুশো, সেও কোলপাকে নাম লেখায়।' 

'আমরা অনেক ভালো ভালো খেলোয়াড়কে হারিয়ে বসি। নতুন খেলোয়াড়রা আসলেও সেভাবে হচ্ছিলো না। এটা বলবো না ওরা প্রতিভাবান ছিল না, এখনও আমাদের দলে অনেক প্রতিভাবান আছে। কিন্তু যদি আপনকে সল্প সংখ্যক খেলোয়াড়ের মধ্য থেকে বাছাই করতে হয় তাহলে আপনি সেরাদের পাবেন না। ভারতে দেখেন, লাখ লাখ ক্রিকেটার আছেন এই ১১জনের জায়গা নেয়ার জন্য লড়াই করছে। তারাও কোথাও যাচ্ছে না। ভারতের হয়েই খেলতে চাইছে, এটা তাঁদের স্বপ্ন। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটে এই জিনিষটাই নেই। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি উন্নতি করার ঘুরে দাঁড়ানোর 'আরও যোগ করেন ফাফ।