বাংলাদেশ ক্রিকেট

বল নিয়ন্ত্রণেই বড় চ্যালেঞ্জ দেখছেন বাংলাদেশের পেসাররা

সৈয়দ সামি

সৈয়দ সামি
প্রকাশের তারিখ: 23:15 মঙ্গলবার, 14 জুলাই, 2020

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট || 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ইংল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে আবারও মাঠে ফিরেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। করোনা মহামারীর পর বিশ্ব ক্রিকেটের অনেক কিছুই বদলে গেছে। ক্রিকেটারদের শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বলে লালার ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)।

বাংলাদেশের পেসাররা মনে করেন করোনা পরবর্তী সময়ে বলের গতি প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণই সবচেয়ে কঠিন বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। ইংল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট লড়াই দেখে এমনটাই ধারণা করছেন তারা। কারণ এই সিরিজের শুরু থেকেই বলে লালার ব্যবহার নিষিদ্ধ। ইংলিশ পেসার জোফরা আর্চারকে নিজের ঘাম দিয়ে বল চকচকে করতে দেখা গেছে। 

আইসিসির এই নতুন নিয়ম প্রাথমিক পর্যায়ে মানিয়ে নেওয়ার জন্য আম্পায়াররা শুরুতে ছাড় দিতে পারেন পরিস্থিতি সাপেক্ষে। তবে ক্রমাগত এমন করে গেলে দলকে সতর্ক করা হবে। এক ইনিংসে দুটি সতর্কতা দেওয়া হলে বলে থুতু বা লালার ব্যবহারের ক্ষেত্রে ৫ রান পেনাল্টি দেওয়া হবে ব্যাটিং দলকে। যখনই বলে থুতু বা লালা ব্যবহার করা হবে, প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী আম্পায়াররা বল পরিস্কার করে নেবেন। 

আগামী কিছুদিন থেকে এটাই ক্রিকেটের নিয়মিত চিত্র হয়ে দাঁড়াবে। ইংল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসাররা কিভাবে এই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেন সেটা দেখার জন্যই বাংলাদেশের বেশিরভাগ পেসারের নজর ছিল সাউদাম্পটনে। টাইগার পেসার এবাদত হোসেনের চোখ ছিল ইংলিশ পেসার জেমস অ্যান্ডারসনের দিকে। তিনি কিভাবে সুইং করেন সেটাই দেখতে চেয়েছিলেন তিনি।

সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এবাদত বলেছেন, 'আমি মনে করে সামনের দিনগুলোতে বলের গতি প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠবে। কারণ লালার ব্যবহার ছাড়া বল খুব বেশি চকচকে করা যাবে না। আমি দেখতে চেয়েছিলাম অ্যান্ডারসন কিভাবে সুইং করেন বলকে। আমি দেখেছি দুই দলই ঘাম দিয়ে বল উজ্জ্বল করার চেষ্টা করছিলো। তবে ইংল্যান্ডের আগের ম্যাচগুলোর তুলনায় বল খুব বেশি উজ্জ্বল হয়নি। বেশ কয়েকবার খুব কাছ থেকে বল দেখিয়েছে।'

এই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের পথ তৈরি করতে প্রধান ভূমিকা রাখেন পেসার শ্যানন গাব্রিয়েল। গতির ঝড় তুলে ১০ উইকেট নিয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা। এই ক্যারিবীয় পেসারের বোলিংয়ের প্রশংসা করে এবাদত বলেন, 'গ্যাব্রিয়েল তার গতি আর একাগ্রতায় সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে। যেটা আমি আমার স্বল্প জ্ঞানের মধ্য দিয়ে বুঝতে পেরেছি। গ্যাব্রিয়েল পিচকে ব্যবহার করেছে তার গতির মধ্য দিয়ে। অনেক সময় সে স্টাম্পের খুব কাছে বল করেছে। কিছু সময় ওয়াইড লেন্থেরও বল করেছে।'

ইংল্যান্ডের মাঠে বরাবরই ব্যবহার করা হয় ডিউক বল। এবাদত নিশ্চিত নন কুকাবুরা বলও এমনই আচরণ করবে কিনা। তিনি বলেছেন, 'তারা ডিউক বলে খেলেছে এবং ডিউক বলে সাধারণত গতি থাকে এবং খুব ভালো উজ্জ্বল হয়। কিন্তু কুকাবুরা এবং ডিউকের মধ্যে অনেক তফাত আছে। শুধু চকচকে থাকার ব্যাপারটাই নয়, এটা মেনে নেয়া যায় কিন্তু কুকাবুরা সম্পূর্ণ ভিন্ন রকম। ঘামে ভিজিয়েও তারা ডিউক বলে সুইং পাচ্ছিলেন না। সৃষ্টিকর্তা জানেন কুকাবুরায় কি হবে। আমি বাকিটা বলতে পারি না। সম্ভবত আমি খেললে বুঝতে পারবো অথবা অনুশীলনের সময়।'

এবাদতের সুরেই কথা বলেছেন বাংলাদেশের আরেক পেসার শফিউল ইসলাম। তিনি বলেছেন, 'আমি বোলিং দেখেছি। আমার কাছে খুব বেশি পরিবর্তন চোখে পড়েনি। আমি দেখেছি বোলাররা কি করেছে। হোল্ডার দারুণ বোলিং করেছে। সে ভালো সিমের ভালো ব্যবহার করেছে। তারা ঘাম ব্যবহার করেছে বল উজ্জ্বল করার জন্য, বলের গতি প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণের জন্য। ডিউক বলে খেলা হয়েছে। আমি মনে করি সিমের ব্যবহার খুব ভালো হয়েছে। হোল্ডার সিমে হিট করেছে। আমি মনে করি এটা ভালো কাজে দিয়েছে।'

রুবেল হোসেনের ভাষ্য, মাঠে ফিরলেই তারা বুঝতে পারবেন, কোনটা কাজে লাগবে। তিনি বলেন, 'আমরা যখন নিজেরা খেলবো, তখন বোলারদের পক্ষে সুবিধা বা অসুবিধা কিনা সে সম্পর্কে একটি ভাল ধারণা পাবো। মূলত দক্ষতা সবকিছুর ঊর্ধ্বে। আপনার দক্ষতার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। যত দক্ষতা থাকবে তত দ্রুততর মানিয়ে নেয়া যাবে এবং ভালো করা যাবে।'