ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ

শেষ বিকেলে ঘুরে দাঁড়াল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 09:54 রবিবার, 12 জুলাই, 2020

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

সাউদাম্পটন টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও ক্যারিবিয়ান বোলারদের তোপের মুখে পড়েছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। শ্যানন গ্যাব্রিয়েল, আলজারি জোসেফ এবং রস্টন চেজের দুর্দান্ত বোলিংয়ে চতুর্থ দিন শেষে ৮ উইকেটে ২৮৪ রান সংগ্রহ করেছে বেন স্টোকসের দল। ফলে চতুর্থ দিন শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে ১৭০ রানে এগিয়ে আছে তারা।

এদিন শেষ বিকেলে ৩৫ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে রোমাঞ্চ জাগিয়ে রাখে সফরকারীরা। বল হাতে ৬২ রান খরচায় ৩ উইকেট শিকার করেন ডানহাতি পেসার গ্যাব্রিয়েল। অপরদিকে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন জোসেফ এবং চেজ। এছাড়া একটি  উইকেট পেয়েছেন অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। ইংল্যান্ডের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান জ্যাক ক্রলি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫০ রান আসে ওপেনার ডন সিবলির ব্যাট থেকে।  

ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে ৯৯ রানে পিছিয়ে থেকে এদিন খেলা শুরু করে ইংল্যান্ড। দুই ওপেনার ডম সিবলি এবং ররি বার্নসের ৭২ রানের উদ্বোধনী জুটিতে বড় পুঁজির স্বপ্ন দেখছিল স্বাগতিকরা। তবে ইনিংসের ৩৭তম ওভারে বোলিংয়ে এসে বার্নসকে জন ক্যাম্পবেলের হাতে ক্যাচ বানিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন রস্টন চেজ। ১০৪ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। 

বার্নস ফিরলেও দারুণ ব্যাটিং করে নিজের প্রথম টেস্ট হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন সিবলি। যদিও এরপর ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তিনি। গ্যাব্রিয়েলের বলে শেন ডওরিচের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার। তিন নম্বরে খেলতে নামা জো ডেনলি শুরুটা ভালো করলেও বড় ইনিংস গড়তে ব্যর্থ হন। ২৯ রান করে চেজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি। 

চতুর্থ উইকেটে ৯৮ রানের দারুণ একটি জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নেন অধিনায়ক স্টোকস এবং ২২ বছর বয়সী ক্রলি। ২৪৯ রানের মাথায় স্টোকসকে শাই হোপের হাতে ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে পাঠান ক্যারিবিয়ান দলপতি হোল্ডার। স্টোকস আউট হওয়ার পরই শুরু হয় ব্যাটসম্যানদের আশা যাওয়ার মিছিল। খেলা শেষ হওয়ার এক ঘন্টা আগে আরো ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে ইংলিশরা। তবে দিন শেষ হওয়ায় স্বাগতিকদের অলআউট করতে পারেনি ক্যারিবিয়ানরা। দুই টেল এন্ডার ব্যাটসম্যান জফরা আর্চার এবং মার্ক উড অপরাজিত আছেন যথাক্রমে ৫ ও এক রানে। 

এর আগে রোজ বোলে শুরু হওয়া এই টেস্টের প্রথম ইনিংসে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ড দলপতি বেন স্টোকস। কিন্তু ব্যাটিং করতে নেমে গ্যাব্রিয়েল এবং হোল্ডারের আগুনে বোলিংয়ে মাত্র ২০৪ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা।

মাত্র ৪২ রানে ৬ উইকেট শিকার করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক হোল্ডার। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটাই তাঁর সেরা বোলিং ফিগার। অপরদিকে ৬২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে হোল্ডারকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন গ্যাব্রিয়েল। প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন অধিনায়ক স্টোকস। এছাড়া উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জস বাটলার ৩৫ রানের ইনিংস খেলেন। 

ইংলিশদের অল্প রানে গুটিয়ে দেয়ার পর ব্যাটিং করতে নেমে খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজও। স্টোকস এবং জেমস অ্যান্ডারসনের অসাধারণ বোলিংয়ে ৩১৮ রানে অলআউট হয় তারা। ফলে মাত্র ১১৪ রানের লিড পায় সফরকারীরা। 

৪৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের পেস আক্রমণকে নেতৃত্ব দেন স্টোকস। এছাড়া ৬২ রানে ৩ উইকেট নেন তারকা পেসার অ্যান্ডারসন। ইংলিশদের বোলিং তোপের সামনে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট এবং শেন ডওরিচ ছাড়া আর কেউ হাফসেঞ্চুরির দেখা পাননি। ১২৫ বলে ৬৫ রানের ইনিংস খেলেন ওপেনার ব্র্যাথওয়েট। আর উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ডওরিচ ১১৫ বলে ৬১ রান করেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ (চতুর্থ দিন শেষে)

ইংল্যান্ড (প্রথম ইনিংস)- ২০৪/১০ (৬৭.৩ ওভার) (স্টোকস ৪৩, বাটলার ৩৫; হোল্ডার ৬/৪২, গ্যাব্রিয়েল ৪/৬২) 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ (প্রথম ইনিংস)- ৩১৮/১০ (১০২ ওভার) (ব্র্যাথওয়েট ৬৫, ডওরিচ ৬১; স্টোকস ৪/৪৯, অ্যান্ডারসন ৩/৬২) 

ইংল্যান্ড (দ্বিতীয় ইনিংস)- ২৮৪/৮ (১০৪ ওভার) (ক্রলি ৭৬, সিবলি ৫০; গ্যাব্রিয়েল ৩/৬২, জোসেফ ২/৪০)