বিপিএল

সাকিবকে কোনো বার্তা দিতে হয় না: সুজন

সৈয়দ সামি

সৈয়দ সামি
প্রকাশের তারিখ: 23:33 বৃহস্পতিবার, 04 জুন, 2020

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট || 

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চার আসরে ঢাকা ডায়নামাইটসের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। ক্রিকফ্রেঞ্জির লাইভ আড্ডায় দলটির সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতার কথা খোলাসা করেছেন এই সফল কোচ।

সুজন জানিয়েছেন, সাকিব আল হাসান এবং তাকেই দলের সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয়। বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে অনেক সময় ফলাফল বিপক্ষে চলে যায়। এটাকে খেলার অংশই মনে করেন বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সফল এই কোচ।

সুজন বলেন, 'দিন শেষে আমাকে আর সাকিবকে টেকনিক্যাল এবং টেকটিক্যাল জিনিসগুলো হ্যান্ডেল করতে হয়। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এটা ভালোবাসি। আমি সমালোচনা নিতে প্রস্তুত। আমি যদি ভুল করি আমাকে মেনে নিতে হবে। যে ওই সময় ওই সিদ্ধান্তটা না নিলেও পারতাম। ওই বোলারকে না ব্যবহার করলেও পারতাম। মাঠে যখন সাকিব অধিনায়কত্ব করে, সাকিবের মতো প্লেয়ারকে আমার কোনো ম্যাসেজ পাঠাতে হবে এটা বিশ্বাসই করি না কোনো সময়।'

নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সুজন বলেন, 'আমাদের মধ্যে যখন কথা হয়, আমরা দুজনই পরিকল্পনা করি কি করতে হবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী সাকিবকে অনেক সময় কিছু পরিবর্তন করতে হলে আমি মেনে নেই। আমি মনে করি এটাই ওর কাজ। এতো ক্রিকেট খেলার পর, বিশ্বজুড়ে ডমিনেট করার পর সাকিবের সেই চিন্তাধারা এবং জ্ঞান আছে যে কোন পরিস্থিতিতে কাকে কিভাবে করাতে হবে। সাকিব পরিকল্পনা করে, সাকিব জিতে। এটাই হতেই পারে। সত্যি কথা বলতে শেষ চার বছরে ঢাকা ডায়নামাইটসে আমার অভিজ্ঞতা অসাধারণ।'

বিপিএলের চতুর্থ আসরে শিরোপা ঘরে তুলেছিল ঢাকা ডায়নামাইটস। এর পরের দুই আসরে শিরোপা ধরে দেখা হয়নি দলটির। বিপিএলের সর্বশেষ আসরটি ফ্র্যাঞ্চাইজি ছাড়াই আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এর ফলে তাতে অংশ নেয়ার সুযোগ পায়নি ঢাকা ডায়নামাইটস। দল হিসেবে বেশ কয়েকবার ব্যর্থ হওয়ার পরও ঢাকা ডায়নামাইটস ভরসা রাখায় দলটির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সুজন।

তাঁর ভাষ্য, 'আমি চ্যালেঞ্জ পছন্দ করি। আমি ছোটোবেলা থেকেই চ্যালেঞ্জ পছন্দ করি। আমি আনন্দিত যে ঢাকা ডায়নামাইটস গত চার বছর আমার উপর ভরসা রেখেছিল। প্রথম বছর আমরা এলিমিনেটরে নক আউট হয়ে গেলাম, চার নম্বর হলাম। তাঁর পরও তারা আমার উপর বিশ্বাসটা রেখেছিল পুরো টিম ম্যানেজমেট। তাঁর তিন বছর পর তো আমরা ফাইনাল খেলি। ক্রিকেটে আমরা বলি যে একটা চ্যাম্পিয়ন হই, দুইটা হেরে যাই। এটা ক্রিকেটেই হয়েই থাকে। ফাইনাল সবসময় নার্ভ গেম।'

২০১৭ এবং ২০১৯ বিপিএলে দুটো ক্যাচ মিসের মাশুল দিয়ে শিরোপা খুইয়েছিল ঢাকা ডায়নামাইটস। ২০১৭ বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের ওপেনার ক্রিস গেইলের একটি ক্যাচ হাতছাড়া করেছিল ঢাকার এক ফিল্ডার। এরপর সেই গেইল ১৪৬ রানের ইনিংস খেলে রংপুরকে ২০৬ রানের পুঁজি এনে দেন। ঢাকা সেই ম্যাচ হারে ৫৭ রানের ব্যবধানে।

এরপর ২০১৯ বিপিএলে ঢাকা শিরোপা খোয়ায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে। ফাইনালে তামিম ইকবালের একটি ক্যাচ হাতছাড়া করেছিল ঢাকার এক ফিল্ডার। জীবন পেয়ে ১৪১ রানের ইনিংস খেলেন তামিম। আর তাতেই ১৯৯ রানের বিশাল পুঁজি পায় কুমিল্লা। সেই রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ১৭ রানে হারে ঢাকা।

এই দুই হার প্রসঙ্গে সুজনের ভাষ্য, 'দুইটা ম্যাচেই আমাদের দুইটা ক্যাচ ছিল যেগুলো ড্রপ করেছি। যারা ড্রপ করেছে তারা ক্যাচ ড্রপ করার মানুষ না। এটা হতেই পারে। তামিম আর গেইলের দুটো ইনিংস ভুললে হবে না। ক্যাচ ড্রপ হওয়ার পর তারা যেভাবে খেলেছে, অবিশ্বাস্য। তারপরও আমি বলি তারা আমার উপর বিশ্বাস রেখেছিল। আমি জানি খেলা এমন প্রেশারে হলে একটু চিল্লাচিল্লি হবে কেন এমন হয়েছে। কেন এটা হয়নি। কেন এই ফিল্ডার, কেন ওকে আগে ব্যাটিং করানো হয়েছে। এমন অনেক কিছু হয়। এগুলোতো আবেগের কথা বার্তা। খেলা হারলে আবেগের কথা বার্তা হয়। খেলা জিতলেও হয় আবেগ অনেক বেশি কাজ করে।'