ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট

‘আমি কি আপনাদের বিনোদন দিতে পেরেছি?’

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 16:17 শনিবার, 02 মে, 2020

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

৫১তম বছরে পা দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ব্রায়ান চার্লস লারা। ১৯৬৯ সালের এই দিনে (২ মে) ত্রিনিদাদে জন্মগ্রহণ করেন রেকর্ডের বরপুত্র খ্যাত এই ব্যাটসম্যান।

বর্ণাঢ্য এক ক্যারিয়ার অতিক্রম করেছেন লারা। শুরুর দিকে মাত্র ১৫ বছর বয়সে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনূর্ধ-১৯ দলের হয়ে খেলেছেন তিনি। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই দ্যুতি ছড়ান লারা। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইয়ুথ চ্যাম্পিয়নশিপে কার্ল হুপারের করা ৪৮০ রানের রেকর্ড ভেঙে খেলেন ৪৯৮ রানের ইনিংস। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের জাতীয় দলে তাঁর অভিষেক হয় ১৯৯০ সালে, পাকিস্তানের বিপক্ষে।

শুরুর দিকে অবশ্য নিস্প্রম্ভ ছিলেন লারা। সফলতার আলো দেখছিলেন না একদমই। এমনকি ক্যারিয়ারের প্রথম তিন বছর সেঞ্চুরির দেখাও পাননি!

এরপর অবশ্য আর পেছনে তাকাতে হয়নি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে। ধীরে ধীরে শৈল্পিক ক্রিকেট খেলে সুনাম কুঁড়াতে শুরু করেন তিনি। ১৯৯৪ সালটি বিশেষভাবে স্মরণীয় লারার জন্য। সেই বছরের শুরুর দিকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টে ৩৭৫ রানের ইনিংস খেলেন লারা। এটাই তখন টেস্টের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ!

একই বছরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আরেকটি মহাকাব্যিক ইনিংসের জন্ম দেন লারা। তার ব্যাট থেকে আসে ৫০১ রানের অপরাজিত ইনিংস। এটি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের বিশ্বরেকর্ড।

এরপর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে লারার রেকর্ড ভেঙে দেন অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি ওপেনার ম্যাথু হেইডেন। টেস্টে লারার ৩৭৫ ছাপিয়ে তিনি করেন ৩৮০ রান।

হেইডেনকে অবশ্য ছয় মাসও রাজত্ব করতে দেননি লারা। ২০০৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আরেকটি অ্যান্টিগা টেস্টে অপরাজিত ৪০০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটিই একমাত্র চারশ রানের ইনিংস। বলাই বাহুল্য, এই রেকর্ড এখনও ভাঙতে পারেনি কেউ!

আরও অসংখ্য ইনিংসে ক্রিকেটপ্রেমিদের মন ছুঁয়েছেন লারা। ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৫৩ বা আরেকটি ইনিংসে ২১৩ করা রান- সময়ের বিচারে তখনকার সেরা ছিল।

২০০৬ সালে টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিদায় নেন লারা। ১৩১ ম্যাচের ক্যারিয়ারে করেন ৩৪টি সেঞ্চুরি ও ৪৮টি হাফসেঞ্চুরি সহযোগে ১১ হাজার ৯৫৩ রান!

ওয়ানডে থেকে তিনি বিদায় নেন ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে। এই সংস্করণে করেন দশ হাজার ৪০৫ রান। সেঞ্চুরি ছিল ১৯ টি, হাফ সেঞ্চুরি করেন ৬৩টি। ক্যারিয়ারে বিশ্বকাপ পাননি লারা, এই আক্ষেপ হয়তো তাঁর সবসময়ই থাকবে।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের শেষে ম্যাচে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। গ্যালারির উদ্দেশে বলেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দারুণ এক সময় আমি পার করেছি। একটা কথাই জিগ্যেস করব, আমি কি আপনাদের বিনোদন দিতে পেরেছি? যদি বিনোদন দিয়ে থাকি, তাহলেই আমি সার্থক!’