বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ

শীত না পেরোতেই জাতীয় দলে বসন্তের হাওয়া

শান্ত মাহমুদ

শান্ত মাহমুদ
প্রকাশের তারিখ: 19:20 শনিবার, 18 জানুয়ারি, 2020

|| সিনিয়র ক্রিকেট করেসপন্ডেন্ট ||

বসন্ত আসতে এখনও বেশ বাকি। শীতের জীর্ণতাকে বিদায় জানাতে অপেক্ষা করতে হবে আরও ২৬ দিন। কিন্তু এরই মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে বসন্তের দোলা লেগে গেছে। বসন্তের নতুন আবাহনে গা ভাসিয়েছেন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। পাকিস্তান সফরের টি-টোয়েন্টি দলে একঝাঁক তরুণ ক্রিকেটারের অন্তর্ভুক্তি বলে দিচ্ছে, বসন্তে মজেছেন প্রোটিয়া এই কোচ।

পাকিস্তান সফর নিয়ে ধোঁয়াশা কেটেছে কয়েকদিন হলো। টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য ১৯ জানুয়ারি থেকে প্রস্তুতি শুরু করবে জাতীয় দল। পাকিস্তান সফরের প্রস্তুতি শুরুর আগে ডমিঙ্গো যেন তাঁর দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু করে দিলেন। টি-টোয়েন্টি দলটি দেখে মনে হবে, তাঁর করা রোডম্যাপের যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে তারুণ্যনির্ভর এই দলটি দিয়েই।

পাকিস্তানের বিপক্ষে সংক্ষিপ্ত এই ফরম্যাটে বাংলাদেশ দলে একমাত্র নতুন মুখ হাসান মাহমুদ। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং দিয়ে নজর কাড়া ডানহাতি তরুণ এই পেসারের ওপর আস্থা রাখতে চান ডমিঙ্গো। তবে নতুন মুখ একজন হলেও দলে তরুণ ক্রিকেটারের ছড়াছড়ি। বাংলাদেশ শিবিরে নতুনের জয়গান স্পষ্ট।

নব কিশলয়ের সুবাতাস বয়ে এনেছেন নাঈম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্ত, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মেহেদী হাসান, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, হাসান মাহমুদরা। তরুণ এই ক্রিকেটারদের নিয়ে বহুদূরে দৃষ্টি দিতে চান ডমিঙ্গো। অন্যদিকে প্রকৃতির ঝরাপাতার মতো টি-টোয়েন্টি দল থেকে ঝরে গেছেন আবু হায়দার রনি, তাইজুল ইসলাম, আরাফাত সানি, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতরা।

নিষেধাজ্ঞার কারণে আরও প্রায় ৯ মাস বাংলাদেশের জার্সি গায়ে তুলতে পারবেন না সাকিব আল হাসান। নিরাপত্তা প্রশ্নে পুরো পাকিস্তান সফর থেকে নাম সরিয়ে নিয়েছেন আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। এটা যেন রাসেল ডমিঙ্গোর জন্য এক ধরনের সুযোগ হয়ে ধরা দিয়েছে। ভবিষ্যত ভাবনায় থাকা ক্রিকেটারদের বাজিয়ে দেখার মঞ্চ পেয়ে যাচ্ছেন তিনি।

কোচ-টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থার প্রতিদান দিতে মুখিয়ে আছেন তরুণ এই ক্রিকেটাররাও। ঢাকা প্লাটুনের হয়ে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে আলো ছড়ানো ডানহাতি অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান দলে ডাক পাওয়ার পর ক্রিকফ্রেঞ্জিকে বলেন, ‘কোচের দিক নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে চাই। কোচ যেভাবে বলবে বা টিম ম্যানেজমেন্ট যেভাবে বলবে, সেভাবেই খেলে যেতে চাই এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজের সেরাটা দিতে চাই।’

গত বছরের সেপ্টেম্বরে টি-টোয়েন্টি দলে অভিষেক হওয়া এবং ওই সিরিজেই সর্বশেষ ম্যাচ খেলা নাজমুল হোসেন শান্ত বলছেন, ‘জাতীয় দলে ফিরে ভালো লাগছে। আমি কখনও সিলেকশন নিয়ে চিন্তা করিনি। আমি সবসময় আমার খেলা নিয়ে চিন্তা করি। সিলেকশনটা যেহেতু হাতে নেই, তাই এটা নিয়ে চিন্তা করি না। সুযোগ পেয়েছি ভালো লাগছে। পারফরম্যান্স করতে পারলে আরও ভালো লাগবে।’

চলতি বছরের শেষদিকে (অক্টোবরে) টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বিশ্ব আসরকে ঘিরে পরিকল্পনা সাজাতে শুরু করেছেন ডমিঙ্গো। পাশাপাশি বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলকে ভালো একটা অবস্থানে দাঁড় করাতে চান তিনি। এ পথে তরুণদের নিয়ে পরিকল্পনা আঁটার ইচ্ছা প্রোটিয়া এই কোচের।

দীর্ঘমেয়াদী এই পরিকল্পনায় নিশ্চয়ই ডমিঙ্গোর চাওয়া হবে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) যেন বসন্তের কোকিল না হয়। দলের চাওয়া পূরণ করতে আসা ক্রিকেটাররা যেন নিজেদের প্রমাণ করারও যথেষ্ট সুযোগ পান। দুই-একটি ম্যাচ খেলিয়েই যেন না বলা হয়, যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়েছে।  

পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ স্কোয়াড: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, নাঈম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস, মোহাম্মদ মিঠুন, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মেহেদী হাসান, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, মুস্তাফিজুর রহমান, শফিউল ইসলাম, আল-আমিন হোসেন, রুবেল হোসেন ও হাসান মাহমুদ।