টেস্ট স্ট্যাটাস

এক নজরে বাংলাদেশের টেস্ট জয়

তামজিদুর রহমান

তামজিদুর রহমান
প্রকাশের তারিখ: 14:52 রবিবার, 10 নভেম্বর, 2019

|| ডেস্ক রিপোর্ট || 

রবিবার (১০ নভেম্বর) টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার ১৯ বছর পূর্ণ হয়েছে বাংলাদেশের। ২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে ক্রিকেটের দীর্ঘ ফরম্যাটে পা রাখে তৎকালীন অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়ের দল। 

সেই ম্যাচে অবশ্য সৌরভ গাঙ্গুলির ভারতের কাছে ৯ উইকেটে পরাজিত হয় বাংলাদেশ। এরপর দেখতে দেখতে কেটে গেছে দীর্ঘ ১৯টি বছর। কালের পরিক্রমায় এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের যতটা উন্নতি করা উচিত ছিল ততটা তারা করতে পারেনি। 

এখন পর্যন্ত মোট ১১৫টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। যেখানে তাদের জয়ের সংখ্যা মাত্র ১৩টি। আর ড্র হয়েছে ১৬টিতে। অর্থাৎ ৮৬ ম্যাচেই পরাজয়ের কাতারে নাম লিখিয়েছে টেস্ট ক্রিকেটে এখনও নবীন হিসেবে গণ্য হওয়া বাংলাদেশ। 

টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার ১৯ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের জয়গুলোর তালিকা প্রকাশ করা হলো এই প্রতিবেদনেঃ 

৬/১/২০০৫, প্রতিপক্ষঃ জিম্বাবুয়েঃ টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার প্রায় ৫ বছর পর প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০০৫ সালের ৬ জানুয়ারি চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে ২২৬ রানের বিশাল জয় পায় স্বাগতিকরা। 

সেই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৪৮৮ রান করে বাংলাদেশ। এরপর খেলতে নেমে ৩১২ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। মোহাম্মদ রফিক ৬৫ রান খরচায় নেন ৫ উইকেট। 

এরপর ৯ উইকেটে ২০৪ রান নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। ফলে সফরকারীদের সামনে ৩৮১ রানের লক্ষ্য নির্ধারিত হয়। এই লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে স্পিনার এনামুল হকের ঘূর্ণিতে মাত্র ১৫৪ রানে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। ৪৫ রানে ৬ উইকেট নেন এনামুল। 

৯/৭/২০০৯, প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজঃ বাংলাদেশের দ্বিতীয় টেস্ট জয়টি আসে ২০০৯ সালের ৯ জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে ক্যারিবিয়ানদের ৯৫ রানে হারায় মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে এটাই ছিল বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়। 

সেই ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ২৩৮ রানে অলআউট হয় মাশরাফির দল। জবাবে ৩০৭ রানে থামে ক্যারিবিয়ানদের প্রথম ইনিংস। বাংলাদেশের হয়ে ৩টি করে উইকেট পান রুবেল হোসেন এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে তামিম ইকবালের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ৩৪৫ রান তোলে বাংলাদেশ। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে ২৭৭ রানের লক্ষ্য নির্ধারিত হয়। কিন্তু এই লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে মাহমুদউল্লাহর অসাধারণ বোলিংয়ে ১৮১ রানে অলআউট হয় ক্যারিবিয়ানরা। মাহমুদউল্লাহ ৫১ রানে তুলে নেন ৫টি উইকেট। আর ৩টি উইকেট নেন সাকিব আল হাসান। 

১৭/৭/২০০৯, প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজঃ বাংলাদেশের তৃতীয় টেস্ট জয়টিও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ২০০৯ সালে একই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিকদের ৪ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। সেবারই প্রথমবারের মতো বিদেশের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় টাইগাররা। 

এই ম্যাচে শুরুতে বাংলাদেশের আমন্ত্রণে ব্যাটিং করতে নামার পর এনামুল হক, সাকিব আল হাসান এবং মাহমুদউল্লাহদের বোলিং ঘূর্ণিতে মাত্র ২৩৭ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এনামুল, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ তিনজনই ৩টি করে উইকেট পান। 

ক্যারিবিয়ানদের প্রথম ইনিংসের পর সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশও। কেমার রোচের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ২৩২ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীদের ইনিংস। ৪৮ রানে ৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে ধ্বস নামান রোচ। 

দ্বিতীয় ইনিংসে সাকিব আল হাসান এবং এনামুল হকের বোলিং ঘূর্ণিতে ২০৯ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২১৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে সাকিবের ৯৬ রানের অপরাজিত ইনিংসে ৪ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে সিরিজ জয়ের উল্লাসে মাতে তারা। 

২৫/৪/২০১৩, প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়েঃ ২০১৩ সালের ২৫ এপ্রিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আবারো টেস্ট জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে জিম্বাবুয়েকে ১৪৩ রানে হারায় সফরকারীরা। ম্যাচটিতে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম এবং নাসির হোসেনের হাফ সেঞ্চুরিতে ৩৯১ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। 

এরপর খেলতে নেমে পেসার রবিউল ইসলামের দারুণ বোলিংয়ে ২৮২ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। ৮৫ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন রবিউল। ১০৯ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার পর আবারো হাফ সেঞ্চুরি করেন সাকিব, মুশফিক এবং নাসির। 

তাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৯ উইকেটে ২৯১ রান নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। ফলে স্বাগতিকদের সামনে ৪০১ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় তারা। এই লক্ষ্যে খেলতে নেমে জিয়াউর রহমান এবং সাকিবের বোলিং তান্ডবে ২৫৭ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। জিয়াউর ৪টি এবং সাকিব ৩টি উইকেট নেন।   

২৫/১০/২০১৪, প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়েঃ ২০১৪ সালের ২৫ অক্টোবর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিজেদের পঞ্চম টেস্টে জয় পায় বাংলাদেশ। মিরপুর শের- ই বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে সফরকারীদের ৩ উইকেটে হারায় টাইগাররা। 

সেবার প্রথম ইনিংসে সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাত্র ২৪০ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। ৫৯ রানে ৬ উইকেট শিকার করেন এই অলরাউন্ডার। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে তিনাসে পানিয়াঙ্গারার বোলিংয়ে ২৫৪ রানে থামে বাংলাদেশ। ৫৯ রানে ৫ উইকেট নেন পানিয়াঙ্গারা। 

দ্বিতীয় ইনিংসে তাইজুল ইসলামের বোলিং ঘূর্ণির সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করে জিম্বাবুয়ে। মাত্র ৩৯ রানে ৮ উইকেট নিয়ে সফরকারীদের ব্যাটিং লাইন আপে ধ্বস নামান এই স্পিনার। জিম্বাবুয়েকে ১১৪ রানে অলআউট করে দেন তিনি। ১০১ রানের লক্ষ্য খেলতে নেমে পরবর্তীতে ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। 

৩/১১/২০১৪, প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়েঃ প্রিয় প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিজেদের ছয় নম্বর টেস্ট জয়ের দেখা পায় বাংলাদেশ। ২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে সফরকারীদের ১৬২ রানে হারায় মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ।

সেই ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে তামিম ইকবাল এবং সাকিব আল হাসানের জোড়া সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৪৩৩ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে হ্যামিল্টন মাসাকাদজা এবং রেগিস চাকাভার সেঞ্চুরিতে ৩৬৮ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। বল হাতে ৮০ রান খরচায় ৫ উইকেট শিকার করেন সাকিব।  

দ্বিতীয় ইনিংসে এগিয়ে থেকে খেলতে নেমে ৯ উইকেটে ২৪৮ রানে ইনিংস ঘোষণা করে মুশফিক বাহিনী। ৩১৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৫১ রানে জিম্বাবুয়েকে গুটিয়ে দেন সাকিব ও তাইজুল। সাকিব দ্বিতীয় ইনিংসেও নেন ৫ উইকেট। আর তাইজুল পান ৩টি উইকেট। 

১২/১১/২০১৪, প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়েঃ এরপরের জয়টিও আসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০১৪ সালের ১২ নভেম্বর একই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সফরকারীদের ১৮৬ রানে হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে তামিম এবং ইমরুল কায়েসের সেঞ্চুরিতে ৫০৩ রানের পাহাড় গড়ে স্বাগতিকরা। 

এরপর জুবায়ের হোসেন লিখনের ঘূর্ণিতে ৩৭৪ রানে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস। ৯৬ রানে ৫ উইকেট নেন লেগ স্পিনার জুবায়ের। দ্বিতীয় ইনিংসে মুমিনুল হকের সেঞ্চুরি এবং তামিম ইকবালের হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে ৫ উইকেটে ৩১৯ রানে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। ফলে জিম্বাবুয়ের সামনে ৪৪৯ রানের লক্ষ্য নির্ধারিত হয়। আর এই লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৬২ রানে থামে ব্রেন্ডন টেলরের জিম্বাবুয়ে। 

২৮/১০/২০১৬, প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ডঃ  বাংলাদেশ তাদের অষ্টম জয়টি পায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০১৬ সালের ২৮ অক্টোবর ইংল্যান্ডকে ঢাকার মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে ১০৮ রানে হারায় মুশফিকুর রহিমের দল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেটাই বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়। 

সেই ম্যাচে শুরুতে ব্যাটিং করে তামিম ইকবালের সেঞ্চুরির সুবাদে ২২০ রান করে বাংলাদেশ। এরপর খেলতে নেমে মেহেদি হাসান মিরাজের বোলিং ঘূর্ণির সামনে দিশেহারা হয়ে পড়ে সফরকারী ইংল্যান্ড। ৮২ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ড শিবিরে ধ্বস নামান অফ স্পিনার মিরাজ। তাঁর দারুণ বোলিংয়ে ২৪৪ রানে অলআউট হয় অ্যালিস্টার কুকের ইংল্যান্ড।

২৪ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার পর ইমরুল কায়েসের ৭৮ রানের ইনিংসে ২৯৬ রানে থামে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের সামনে ২৭৩ রানের লক্ষ্য দেয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে আবারো ছড়ি ঘোরান মিরাজ। ৭৭ রানে ৬ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন আপ গুড়িয়ে দেন তিনি। মাত্র ১৬৪ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা। ফলে জয়ের আনন্দে ভাসে বাংলাদেশ।  

১৪/৩/২০১৭, প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কাঃ কলম্বোর পি সারা ওভালে ২০১৭ সালের ১৪ মার্চ শ্রীলঙ্কাকে প্রথমবারের মতো টেস্টে হারায় বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের বিপক্ষে ৪ উইকেটের সেই জয় আজও স্মরণীয় হয়ে আছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। ম্যাচটির শুরুতে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে দীনেশ চান্দিমালের সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৩৩৮ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। 

পরবর্তীতে সাকিব আল হাসানের সেঞ্চুরি সৌম্য সরকারের হাফ সেঞ্চুরিতে অলআউট হওয়ার আগে ৪৬৭ রান করে বাংলাদেশ। ১২৯ রানে পিছিয়ে থেকে খেলতে নামার পর সাকিব এবং মুস্তাফিজুর রহমানের বোলিং তোপে ৩১৯ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। 

সাকিব ৪টি এবং মুস্তাফিজ ৩টি উইকেট শিকার করেন। ১৯১ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে তামিম ইকবালের ৮২ রানের অনবদ্য ইনিংসে জয় পেতে বেগ পেতে হয়নি বাংলাদেশকে। 

২৭/৮/২০১৭, প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়াঃ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট জয় বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে সবথেকে বড় অর্জন। ২০১৭ সালের ২৭ অগাস্ট স্টিভ স্মিথের অস্ট্রেলিয়াকে ২০ রানে হারিয়ে ইতিহাস রচনা করে স্বাগতিক বাংলাদেশ। 

শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ সাকিব এবং তামিমের জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে ২৬০ রান সংগ্রহ করে। জবাবে প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে সাকিবের বোলিং ঘূর্ণিতে ২১৭ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। মাত্র ৬৮ রানে ৫ উইকেট নেন সাকিব। 

দ্বিতীয় ইনিংসে নাথান লায়নের দারুণ বোলিংয়ের সামনে ২২১ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ৮২ রান খরচায় ৬ উইকেট নেন লায়ন। ২৬৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে আবারো দলের ত্রাণকর্তার ভূমিকায় দেখা যায় সাকিবকে। ৮৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইন আপে ধ্বস নামান তিনি। ফলে ২৪৪ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া, আর ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ। 

১১/১১/২০১৮, প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়েঃ  ২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আবারো টেস্টে জয় পায় বাংলাদেশ। শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে সফরকারীদের ২১৮ রানে হারায় মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল। 

সেই ম্যাচে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। মুশফিকের ডাবল সেঞ্চুরি এবং মুমিনুল হকের দেড়শ পার করা ইনিংসে শুরুতে ব্যাটিং করে ৫২২ রানে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। 

এরপর খেলতে নেমে তাইজুল ইসলামের বোলিং ঘূর্ণিতে ৩০৪ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। ১০৭ রানে ৫ উইকেট নেন তাইজুল। ২১৮ রানের বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার পর ৬ উইকেটে ২২৪ রান নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে মাহমুদউল্লাহর দল। 

একই সঙ্গে জিম্বাবুয়ের সামনে ছুঁড়ে দেয় ৪৪৩ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য। আর এই লক্ষ্যে খেলতে নেমে মেহেদি হাসান মিরাজের বোলিংয়ে ২২৪ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। ৩৮ রান খরচায় ৫ উইকেট শিকার করেন অফ স্পিনার মিরাজ। 

২২/১১/২০১৮, প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজঃ বাংলাদেশ নিজেদের ১২তম টেস্ট জয়টি পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ২০১৮ সালের ২২ নভেম্বর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ক্যারিবিয়ানদের ৬৪ রানে হারায় স্বাগতিকরা।

সেই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে মুমিনুল হকের সেঞ্চুরির সুবাদে ৩২৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। এরপর খেলতে নেমে মাত্র ২৪৬ রানে অলআউট হয় সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৬১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে প্রতিপক্ষ শিবিরে ধ্বস নামান স্পিনার নাঈম হাসান। 

দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। দেবেন্দ্র বিশু এবং রস্টন চেজের বোলিং তোপে মাত্র ১২৫ রানে গুটিয়ে যায় তারা। বিশু ৪টি এবং চেজ ৩টি উইকেট শিকার করেন। 

বাংলাদেশ ১২৫ রানে অলআউট হওয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২০৪ রানের। কিন্তু তাদেরকে এই লক্ষ্য টপকাতে দেননি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ৩৩ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৩৯ রানে অলআউট করতে মুখ্য ভূমিকা রাখেন তিনি।  

৩০/১১/২০১৮, প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজঃ বাংলাদেশের সর্বশেষ টেস্ট জয়টিও এসেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একই সিরিজে। গত বছরের ৩০ নভেম্বর সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ক্যারিবিয়ানদের ইনিংস এবং ১৮৪ রানে হারায় বাংলাদেশ। 

মিরপুরে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরিতে ৫০৮ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে খেলতে নেমে মেহেদি হাসান মিরাজের বোলিং ঘূর্ণিতে ১১১ রানে গুটিয়ে যায় ক্যারিবিয়ানদের ইনিংস। 

এরই সঙ্গে ফলো অনের লজ্জায় পড়ে তারা। মিরাজ ৫৮ রানে ৭ উইকেট শিকার করেন। ফলো অনে থেকে ব্যাটিং করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে ২১৩ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা। ৫৯ রানে ৫ উইকেট নিয়ে এবারও বড় ভূমিকা রাখেন মিরাজ।