বিসিএল

উইকেটের ভিন্ন চেহারা দেখল বিসিএল

আবিদ মোহাম্মদ

আবিদ মোহাম্মদ
প্রকাশের তারিখ: 19:10 শুক্রবার, 28 ডিসেম্বর, 2018

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||

উপমহাদেশের সবদেশেই রাজত্ব চলে স্পিনারদের। যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশেও। দেশের মাটিতে জাতীয় দলের ম্যাচ হোক বা ঘরোয়া ক্রিকেট সব জায়গায় আধিপত্য বিস্তার করে থাকেন স্পিনাররাই। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট টুর্নামেন্ট এনসিএল-বিসিএলে বরাবরই পেসারদের তুলনায় স্পিনাররাই বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন। 

ঘরোয়া ক্রিকেটের পাশাপাশি দেশের মাঠে জাতীয় দলের ম্যাচগুলোতেও দেখা যায় একই চিত্র। উদাহারণ টেনে বলতে গেলে সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশের বিপক্ষে উইন্ডিজ এবং জিম্বাবুয়ে সিরিজের কথাই বলা যায়। দুটি সিরিজই বাংলাদেশ জিতেছে স্পিনারদের দাপটে। এমনকি একাদশে কোন পেসার না খেলিয়ে ৪ স্পিনার নিয়ে মাঠে নামারও দৃশ্য দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। 

তবে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ টেস্ট পারফর্মেন্সে উন্নতি আনার জন্য পেস বান্ধব উইকেট সময়ের দাবি। তাই বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে উইকেটগুলো ঐতিহ্যগতভাবে স্পিন সহায়ক হলেও এবারের সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগে (বিসিএল) দেখা গিয়েছে ভিন্ন চিত্র। 

উইকেট থেকে স্পিনারদের পাশাপাশি পেস বোলাররাও পর্যাপ্ত সুবিধা পেয়েছে। বিসিএলের উইকেটে ছিল ঘাস, যা দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে সচারচর দেখা যায় না।
 
বদলে যাওয়া উইকেট প্রভাব ফেলেছে পেসারদের পারফর্মেন্সেও। এবারের বিসিএলের সবচেয়ে উইকেট নেয়া বোলারদের মধ্যে প্রথম তিনজন স্পিনার হলেও তাদের সঙ্গে আছেন দুই পেসার আবু জায়েদ রাহি এবং এবাদত হোসেন। ২১ উইকেট নিয়ে উত্তরাঞ্চলের এবাদত হোসেন আছেন চার নম্বরে। পাঁচ ম্যাচ খেলে আটটি ইনিংসে বল করার সুযোগ মিলেছে তাঁর। ম্যাচ সেরা বোলিং ১৩৯ রান খরচায় দশটি উইকেট। এছাড়া তালিকায় পাঁচ নম্বরে আছেন পূর্বাঞ্চলের পেসার আবু জায়েদ রাহী। পাঁচ ম্যাচে নয় ইনিংস বল করে বিশটি উইকেট শিকার করেছেন এই পেসার।

ঘরোয়া ক্রিকেটে উইকেটে ঘাস ছিল বিধায় পেসাররা সেটাকে কাজে লাগাতে পেরেছেন। তাই বলা যাচ্ছে সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন আসছে দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের উইকেটেও।

ঘরোয়া ক্রিকেটে উইকেটের এই পরিবর্তন স্পিনারদেরকে বাড়তি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে। সদ্য সমাপ্ত বিসিএলে সবচেয়ে বেশী উইকেট নেয়া দক্ষিণাঞ্চলের অধিনায়ক আব্দুর রাজ্জাককে বিসিএলের উইকেট অবাক করেছে। ক্রিকফ্রেঞ্জিকে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি রাজ্জাক বলেন,  

'সত্যি বলতে কিছুটা অবাকই হয়েছিলাম উইকেটের মধ্যে ঘাস দেখতে পেয়ে। আমি বলবো না যে উইকেট উচ্চমানের ছিল কিন্তু ঘাস থাকার কারণে পেস বোলাররা সহায়তা পেয়েছে। প্রথম দিনই উইকেটে বল দিয়ে যাচ্ছিল আর ধীর গতিতে বাউন্স পাচ্ছিল। এমন প্রতিকূল পরিস্থিতি আমাকে আরও বেশি অনুপ্রেরণা দিয়েছে ভালো পারফর্ম করার জন্য।'

ঘরোয়া ক্রিকেটে উইকেটের এই পরিবর্তন পেসারদেরকে আরও পরিণত হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। যা বাংলাদেশ দলের বিদেশের ভবিষ্যৎ সফরগুলোতে বাড়তি সহায়তা করবে। আর বিশ্বকাপ যেহেতু ইংল্যান্ডে তাই সেখানকার পেস সহায়ক উইকেটে ঘরোয়া ক্রিকেটের উইকেটের এই পরিবর্তন বিশ্বকাপেও ভালো করতে সাহায্য করবে বাংলাদেশের পেসারদের।