বাংলাদেশ- উইন্ডিজ সিরিজ

আম্পায়ার-অধিনায়ক বিতর্ক ও ইতিহাস

ইনতেছার

ইনতেছার
প্রকাশের তারিখ: 00:24 রবিবার, 23 ডিসেম্বর, 2018

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ টি-টুয়েন্টিতে নো বল বিতর্কে জড়িয়েছেন বাংলাদেশী আম্পায়ার তানভির আহমেদ। বাংলাদেশের ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ওশান থমাসের টানা দুইটি 'লিগ্যাল বল' নো ডেকে বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি।

ম্যাচও বন্ধ ছিল প্রায় দশ মিনিটের মতো। প্রতিবাদ করেছে উইন্ডিজ কাপ্তান কার্লোস ব্র্যাথওয়েট, প্রতিবাদ করেছে পুরো উইন্ডিজ দল। যদিও শেষ পর্যন্ত আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল ছিল।

এমন ঘটনা এবারই প্রথম নয় ক্রিকেটে। বিতর্কিত আম্পায়ারদের তালিকায় শীর্ষস্থানে থাকবেন অজি আম্পায়ার ড্যারেল হেয়ার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটি টেস্টে শ্রীলংকার কিংবদন্তী স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরনের করা টানা তিন ওভারের মধ্যে সাতটি নো বল দিয়েছিলেন তিনি!

অভিযোগ করেছিলেন চাকিংয়ের, যদিও নিয়ম অনুযায়ী চাকিংয়ের সন্দেহ হলে, ম্যাচ রেফারীর নিকট অভিযোগ করতে পারেন আম্পায়ার; এভাবে নো বলের সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না।

তাঁর সিদ্ধান্তের জবাবে মাঠ ছাড়ে অর্জুনা রানাতুঙ্গার নেতৃত্বাধীন শ্রীলংকা দল, যদিও বেশ কিছুক্ষণ পরে ফিরে আসে তাঁরা। এছাড়া আরও অনেক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন হেয়ার। 

২০০৬ সালে ওভালে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডের একটি টেস্টে পাকিস্তান দলের উপরে বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগ আনেন এবং পেনাল্টিস্বরূপ ইংল্যান্ডকে বাড়তি পাঁচ রান দেন এবং পাকিস্তানের পাঁচ রান কমিয়ে দেন। 

ফলশ্রুতিতে চা বিরতিতে গিয়ে আর মাঠে ফেরেনি ইনজামাম উল হকের পাকিস্তান। সেই টেস্টে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল ইংল্যান্ডকে।    

২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের মধ্যকার সিডনি টেস্টে ক্যারিবিয়ান আম্পায়ার স্টিভ বাকনর অজি ক্রিকেটার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসকে মোট তিন দফায় আউট দেননি!

যদিও পরিষ্কার আউট হয়েছিলেন সাইমন্ডস। ম্যাচ বাঁচানো সেঞ্চুরিও করেছিলেন তিনি। বাকনর একই ম্যাচে রাহুল দ্রাবিড়কে কটাক্ষও করেছিলেন। পরে তাঁর ম্যাচ ফি' ৫০ ভাগ জরিমানা করা হয়েছিল এবং তাঁকে পরের টেস্টে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

একই ম্যাচের আরেক আম্পায়ার মার্ক বেনসনও জড়িয়েছিলেন আম্পায়ারিং বিতর্কে। সেই ম্যাচে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে সৌরভ গাঙ্গুলিকে আউটের সিদ্ধান্ত দেন তিনি।

অথচ ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সৌরভের ক্যাচ স্লিপে মাইকেল ক্লার্ক নেওয়ার আগেই মাটিতে পড়ে যায়! বিতর্কে নাম আছে পাকিস্তানী আম্পায়ার শাকুর রানার।

১৯৮৭ সালে পাকিস্তান এবং ইংল্যান্ডের একটি টেস্টে ইংলিশ অধিনায়ক মাইক গেটিংয়ের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে যান রানা, যা স্পষ্ট শোনা যায় উইকেটের মাইক্রোফোনে।

১৯৮৪ সালে কিউই অধিনায়ক জেরেমি কনিকেও মাঠ ছেড়ে যাওয়ার হুংকার দিয়েছিলেন শাকুর রানা। বিভিন্ন ম্যাচে পাকিস্তানের পক্ষে সিদ্ধান্ত দিতেন তিনি।

ইতিপূর্বে আরও অনেক আম্পায়ারই বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করেছিলেন মাঠে। তবে এবারই আন্তর্জাতিক অঙ্গণে এমনটা করলেন কোন বাংলাদেশী আম্পায়ার।

তবে বাংলাদেশও সাক্ষী হয়েছে মুহুর্মুহু বাজে আম্পায়ারিংয়ের। তবে মাঠের পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিংয়ের প্রতিবাদও করতে দেখা গিয়েছে বাংলাদেশকে।

চলতি বছরের মার্চে নিদাহাস ট্রফিতে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচের শেষ ওভারে ঘটে নানান ঘটনা ঘটে। আম্পায়ার দ্বিতীয় বাউন্সারকে নো বল কল না করায় অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ক্ষেপে মাহমুদউল্লাহদের মাঠ ছেড়ে চলে আসতে বলেন। 

ওই সময় পানীয় নিয়ে মাঠে ঢোকা সোহান লঙ্কান অধিনায়ক থিসারা পেরেরার সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। সেই ম্যাচে অবশ্য মাহমুদউল্লাহ ৩ বলে ১২ রান তুলে অসাধারণ জয়ে দলকে ফাইনালে নেন।

একইসঙ্গে আলোচনায় উঠে আসে সাকিবের সাহসিকতা। যদিও জরিমানা গুনতে হয় সাকিব এবং সোহানকে।