টাইবুর সাক্ষাৎকার

আগের বাংলাদেশের কারণেই বর্তমান বাংলাদেশের জন্মঃ টাইবু

ইনতেছার

ইনতেছার
প্রকাশের তারিখ: 12:50 বৃহস্পতিবার, 18 অক্টোবর, 2018

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট || 

২০১২ সালের দিকে মাত্র ২৯ বছর বয়সে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের এক সময়ের আস্থার প্রতীক টাটেন্ডা টাইবু। তবে স্বদেশের টানে আবারও নতুন ভূমিকায় জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটে প্রবেশ করেন তিনি।

দেশের ক্রিকেটের দুর্দিনে প্রধান নির্বাচকের দায়িত্বে ফিরে এসে ব্রেন্ডন টেইলর, সলোমন মিরেদের ফিরিয়েও এনেছেন টাইবু। দেশে এবং দেশের বাইরের ক্রিকেট মহলে বেশ প্রশংসিতও হয়েছিলেন নিষ্ঠাবান দায়িত্ব পালনে।

তবে কর্তব্য পালনে আপোষহীন এই মানুষটি আবারও আলোচনায় আসেন বোর্ডের সঙ্গে রেষারেষির পর। "জিম্বাবুয়ে বোর্ড আমাকে পছন্দ করে না" বলে ক্রিকফ্রেঞ্জিকে শুরুতেই এড়িয়ে যেতে চাইলেন তিনি।

তবে একটু কথা হতেই গল্পের ঝুড়ি নিয়েই বসলেন আমুদে টাইবু। গল্পে গল্পে বাংলাদেশ ক্রিকেটের একাল সেকাল নিয়ে কথা বলেছেন, নিজের ক্যারিয়ারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় থেকে শুরু করে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের বর্তমান অবস্থা নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেছেন তিনি......

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ বাংলাদেশে তো আপনি বেশ কয়েকবার এসেছেন। এখানকার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

টাইবুঃ বাংলাদেশ আমার কাছে নিজের ঘরের মতোই আপন। অবশ্য ভারতও তাই! বাংলাদেশে আমার বেশ কয়েকজন বন্ধু হয়েছে যেমন, রিয়াজ মামুন (সাবেক বিসিবি পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন আল মামুন), মেহরাব হোসেন জুনিয়র, মানজারুল ইসলাম, হাবিবুল বাশার, এদের সঙ্গে বেশ ভাল সম্পর্ক। বাংলাদেশের লোকজন বরাবরই আমাকে বেশ সমাদর করে। 

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ ভারতের কথা বললেন...সেখানে তো আইপিএলও খেলেছেন আপনি। কেমন ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্সে কাটানো সময়গুলো?

টাইবুঃ তিন বছরের চুক্তিতে আমি কলকাতায় খেলার সুযোগ পেয়েছিলাম, ২০০৮ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত। আমি নিশ্চিত ছিলাম যে আমি সেখানে খেলার সুযোগ পাব না। কেননা বাকী বিদেশী ক্রিকেটার ছিলেন গেইল (ক্রিস গেইল), বাজ (ব্রেন্ডন ম্যাককালাম), পান্টার (রিকি পন্টিং), গুল (ওমর গুল), শোয়েব আখতার, হাফিজ (মোহাম্মদ হাফিজ), বাট (সালমান বাট), অজন্তা মেন্ডিস, ডেভ হাসি (ডেভিড হাসি), ব্র্যাড হজ, পেরেরা (থিসারা)।

এই দল থেকে চার বিদেশীর মাঝে সুযোগ পাওয়া কঠিন ছিল। তবে আমি অনেক পরিশ্রম করেছিলাম। এরপরে শেষ তিনটি ম্যাচে আমার সুযোগ হয়েছিল খেলার। এর মধ্যে একটি ম্যাচ আবার বৃষ্টিতে ভেসে যায়। এভাবেই আমার প্রথম আসরের সমাপ্তি ঘটেছিল। ভারতে আসলে আমার অনেক অনেক স্মরণীয় মুহূর্ত আছে। বাংলাদেশী মানুষের মতোই আপন ভারতীয়রা। অনেক ভাল। সেখানে আমার অনেক স্মৃতি। আর ভারতে তো আমি একা একা বেরই হতে পারি না। সেখানে আমাকে মানুষ চেনে, এজন্য।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ এত এত তারকা থেকে তো নিশ্চয়ই কিছু শিখেছেন। ওই সময়ে তো তাঁরাই সুপারস্টার...

টাইবুঃ হ্যাঁ, এই ড্রেসিং রুমটি ছিল দারুণ। রিকি পন্টিং থেকে আমি শিখেছি,  তারপর গাঙ্গুলি (সৌরভ গাঙ্গুলি), ক্রিস গেইল... আর একজনের কথা আলাদা করে বলতেই হবে। ডেভিড হাসি.. যে পরবর্তীতে আমার বন্ধু হয়ে গিয়েছিল। তখন আমি বয়সেও ছোট ছিলাম। তাঁদের থেকে অনেক শিখেছি। তারপর শাহরুখ খানের কথা বলতে হয়। ড্রেসিং রুমের অনেক আসতেন। খুব ভাল সম্পর্ক ছিল আমাদের সাথে। দলকে নিয়ে শাহরুখের অনেক স্বপ্ন, যা আমাদের দলকে অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করতো।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ নিজের ক্রিকেটীয় জীবন যখন শুরু করেছিলেন তখনকার কথা বলেন। অনেক হাই প্রোফাইল ক্রিকেটার ছিল তখনকার জিম্বাবুয়ে ড্রেসিং রুমে...  

টাইবুঃ হ্যাঁ, তা তো অবশ্যই। আমি যে ড্রেসিং রুমে ছিলাম, সেটা ছিল অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ। অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, হিথ স্ট্রিক, গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার, অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেল, হেনরি ওলোঙ্গা এবং আরও অনেকে। তাঁদের থেকে আমি অবশ্যই অনেক কিছু শিখেছি। বিশেষ করে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের কথা তো আলাদা করে বলবোই। তাঁর থেকে অনেক বেশি শিখেছি।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ বাংলাদেশের বিপক্ষে একটি টেস্ট সেঞ্চুরি আছে আপনার। একটিই টেস্ট সেঞ্চুরি, আর সেটাই বাংলাদেশের বিপক্ষে। যখন চিন্তা করেন কেমন লাগে?

টাইবুঃ হ্যাঁ আমার প্রায় সময় তা মনে পড়ে। কেননা আমি ছয় নম্বরে ব্যাট করে সেঞ্চুরি পেয়েছিলাম। সাধারণত উইকেটে আমি অনেকবার অপরাজিত ফিফটি হাঁকিয়েছি, কিন্তু ওই ম্যাচেই আমার সুযোগ হয়েছে সেঞ্চুরি করার। প্রথমে টেইলরের (ব্রেন্ডন টেইলর) সঙ্গে আমি লম্বা একটি জুটি গড়েছি, এরপরে হন্ডোর সাথেও জুটি গড়েছি, যে কিনা দশ নম্বরে ব্যাট করত। আমি সেই ইনিংসে খুব ভাল ব্যাটিং করছিলাম।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ ওয়ানডে ক্রিকেটে আপনি অপরাজিত ছিলেন ২১ বার। এছাড়া তিনবার ছিলেন টেস্টে। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে এই কীর্তি ছিল আরও অনেক বেশি বার।

টাইবুঃ এটা যতটা না শক্তির দিক, তারচেয়েও বড় ভুল ছিল। আমার বোঝা উচিত ছিল, নিচের দিকে নামায় আমি সঙ্গী হারাচ্ছি। আমার আসলে আরও উপরে ব্যাট করা দরকার ছিল।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ আপনার তো বেশ কয়েকটি ফিফটি আছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। প্রতিপক্ষ হিসেবে বাংলাদেশকেই পছন্দ করতেন?

টাইবুঃ বাংলাদেশ তো আছেই। তবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পছন্দ করতাম। কেননা আমি দ্রুত গতিতে আসা পেস বল খেলতে খুবই পছন্দ করতাম।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ এশিয়া কাপে রানার্স আপ দল বাংলাদেশ। গত কয়েক বছরে আছে আরও অনেক অর্জন। আপনি 'আগের' বাংলাদেশ দেখেছিলেন, আর এটা 'বর্তমান' বাংলাদেশ। দুটো দলকে তুলনা করতে হলে কিভাবে করবেন?

টাইবুঃ আগের বাংলাদেশের কারণেই তো বর্তমান বাংলাদেশ! আগের দলটি বেশ ভাল ছিল। হাবিবুল বাশারের দলে মোহাম্মদ আশরাফুল, রাজিন সালেহ, রফিকদের (মোহাম্মদ রফিক) মতো ক্রিকেটার ছিল, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমই আজকের বাংলাদেশ গড়ে দিয়েছে। ২০০৫ সালে বোর্ড (বিসিবি) কিছু পদক্ষেপ নেয় দেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে, আজকের বাংলাদেশ তারই প্রতিফলন।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ ২০১৯ সালে বাংলাদেশ দলের সম্ভাবনা কেমন দেখেন?

টাইবুঃ অনেক বেশি সম্ভাবনা দেখি সত্যি বলতে..

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ এই দলের কোন ক্রিকেটার আপনার বেশি পছন্দ? 

টাইবুঃ মর্তুজা অধিনায়ক হিসেবে আমার কাছে প্রিয়। সে অসংখ্যবার নিজেকে ভাল অধিনায়ক হিসেবে প্রমাণ করেছে। তারপরে আমার পুরানো বন্ধু মুশির (মুশফিকুর রহিম) খেলা ভাল লাগে। সাকিবের কথা তো বলতেই হয়। এখন সে তিন নম্বরে নেমে ইনিংস মেরামতের কাজ করছে। দারুণ পরিকল্পনা। তামিমের মনোভাব দেখে মনে হয়, তাঁর কোন চিন্তাই নেই। আরও ভাল লাগে মাহমুদুল্লাহকে। আমার মনে হয়, আমার চুপ থাকাই ভাল। কেননা আমি পুরো দলের ক্রিকেটারদের নাম বলা শুরু করব (হাসি..)।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ মাশরাফির সঙ্গে আপনার বোঝাপড়া কেমন? আপনি তো তাঁকে শুরু থেকেই চেনেন..

টাইবুঃ মাঠে একদিন আমরা একে অপরের সঙ্গে হালকা কথা বলেছিলাম। এরপর থেকে আমাদের সম্পর্ক অনেক বেশি ভাল। এরপরে সে অধিনায়ক হিসেবে আমাকে মুগ্ধ করতে থাকে। তাঁর লড়াকু মানসিকতার কথা ভাবতেই ভাল লাগে আমার।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ বর্তমানের জিম্বাবুয়ে দলকে কিভাবে দেখেন? অভিজ্ঞতা আর তারুণ্যের মিশেলে এই দলের শক্তিমত্তা কতটুকু?

টাইবুঃ সত্যি কথা যদি বলি, এটা খুবই বিতর্কের বিষয় হয়ে যাবে। বলতে চাচ্ছি না...

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ নিজেদের সময়ের কথা বলুন। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ক্রিকেটার কে?

টাইবুঃ অবশ্যই অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ এমনিতে কার খেলা সবচেয়ে বেশি ভাল লাগতো পুরো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে?

টাইবুঃ সম্ভবত শচীন টেন্ডুলকার।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ জিম্বাবুয়ে দলের কোন ক্রিকেটারকে তো আলাদাভাবে অবশ্যই ভাল লাগে?

টাইবুঃ দুর্ভাগ্যবশত আমি যদি বলি আমার কাকে ভাল লাগে, তাহলে সে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের বলীতে পরিণত হবে। আমি বেশ কয়েকবার এমনটা দেখেছি। তাই আমি শুধু তাঁদের (জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটারদের) দেখি এবং স্বাভাবিক থাকি। 

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ আবারও ফিরে আসি বাংলাদেশের সাথে সিরিজ প্রসঙ্গে। জিম্বাবুয়ে দল তারুণ্য আর অভিজ্ঞতার সমষ্টি, বাংলাদেশ দলও অনেক অভিজ্ঞ বটে। দুই দলের পার্থক্য কোথায় দেখেন?

টাইবুঃ  একই কারণ। মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ কোলপাক চুক্তি ভাঙ্গিয়ে আপনি ব্রেন্ডন টেইলর এবং অন্যান্য সিনিয়রদের জাতীয় দলে ফিরিয়ে এনেছেন। কিন্তু এখন আবার জিম্বাবুয়ে বোর্ডে খারাপ অবস্থা চলছে। পুরো বিষয়টা কিভাবে দেখেন? 

টাইবুঃ শুধু ব্রেন্ডনকে (ব্রেন্ডন টেইলর) নয়, আমি সলোমন মিরেকেও ফিরিয়ে এনেছি। সত্যি কথা বলতে আমাকে তারা (জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ড) ব্যবহার করেছে সিনিয়র ক্রিকেটারদের ফিরিয়ে আনার জন্য। যদিও ওদের ফিরিয়ে আনতে পেরে আমার খুবই ভাল লাগছে, কেননা ওদের ছাড়া আমরা ছন্নছাড়া হয়ে যেতাম। যাই হোক, সত্য হচ্ছে স্বার্থপর (অসৎ) লোকের অধীনে থাকলে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট ক্রমাগত নিচে নামতে থাকবে। 

যে ক্রিকেটাররা মাঠে এতো চেষ্টা করছে (ভাল করার) তাঁদেরকে তারা মেশিনের মতোই ব্যবহার করছে। এটা হয়তো শুনলে ক্রিকেটাররাই খারাপ বোধ করবে। এরপরেও সত্যি হচ্ছে তাঁদের (ক্রিকেটারদের) বেতন, ম্যাচ ফি এগুলো কখনোই সময়মত পরিশোধ করা হয়না। বোর্ডে এখন কি চলছে তা সবারই জানা। বোর্ডের কেউ হয়তো এগুলো সমাধানের চেষ্টা করছে, কিন্তু বেশীরভাগ মানুষই চেষ্টা করছে না। তারা অন্ধের মতো আচরণ করছে, কেননা তারাই এসবের জন্য দায়ী। এগুলো ক্রিকেটারদের স্পৃহা নষ্ট করবে ক্রমশ।    

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ আমি জানি এই প্রশ্নের উত্তর দেয়া কঠিন। তবুও জিজ্ঞেস করছি, যদি আবারও সুযোগ হয় জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ডে ফিরে যাওয়ার, তাহলে কি ফিরবেন?

টাইবুঃ দেশের প্রতি সবার মতো আমার হৃদয়েও কোমলতা বোধ আছে। এটা সবসময়ই ছিল এবং থাকবে। তবে আমি তাড়াহুড়ো করতে রাজি নই মোটেও। বর্তমান চেয়ারম্যানের অধীনে পুনরায় যোগ দিতে চাই না। আমি অনেকের সাথে চলব কিন্তু 'মুখে মধু আর অন্তরে বিষ'- এমন মানুষ পরিহার করে চলব। সোজা কথায় কোন মিথ্যাবাদীর পাশে আমি দাঁড়াব না।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ আপাতত ইচ্ছা কি? কোনভাবে কোচিংয়ের সঙ্গে যুক্ত আছেন? বিপিএল বা অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি দলগুলো বা কাউন্টি দলের পরামর্শক হওয়ার চিন্তাভাবনা আছে?

টাইবুঃ আমি আপাতত লেভেল-৩ কোচিং নিয়ে ব্যস্ত। এরপরে লেভেল-৪ এর কোচিং নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাব। তারপরে আমি ওগুলো নিয়ে ভাববো।  

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ ক্রিকেটের বিবর্তনকে কিভাবে দেখেন? আপনার ক্যারিয়ার চলাকালে টেস্ট ক্রিকেটকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হতো। এখন টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে সমগ্র বিশ্ব তোলপাড়। বিশেষ করে বলতে গেলে আইপিএল, বিপিএলের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগ।

টাইবুঃ টি-টুয়েন্টি (ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগ) এগিয়ে থাকবেই কেননা এখানে প্রচুর অর্থ। সমগ্র বিশ্বের অসংখ্য মানুষ এসব দেখে, তাই এটার চাহিদা বেশি। এখানে দ্রুত ধনী হওয়া যায়। ফ্রেঞ্চাইজি লীগগুলোর জনপ্রিয়তা আরও বাড়বে। তবে কিছু কিছু টেস্ট সিরিজের দিকে মানুষের বাড়তি আকর্ষণ তো থাকেই। যেমনঃ অ্যাশেজ, ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজ, ভেন্যু সমস্যা না থাকলে ভারত-পাকিস্তান টেস্ট সিরিজ, তারপর নিউজিলান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট সিরিজ, আবার দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজ। এগুলোর দিকে মানুষের আলাদা নজর থাকেই। তবে বলতে বাঁধা নেই, বেশীরভাগ টেস্ট সিরিজই রঙ হারাচ্ছে। 

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ আবারো কোলপাক প্রসঙ্গে আসা যাক। জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকায় এর দারুণ প্রভাব পড়ছে..

টাইবুঃ কোলপাকে আরও অসংখ্য ক্রিকেটার হারিয়ে যাবে। একজন প্রফেশনাল ক্রিকেটার হওয়ার কারণে আপনাকে সময়মত বেতন পেতে হবে। আপনাকে ওইসব সুযোগ সুবিধাও দিতে হবে। মাঝেমধ্যে এমনও হয়েছে, জিম্বাবুয়ের কোন ক্রিকেটার পুরো বছরে তাঁর ম্যাচ ফি পায়নি! যদি তরুণ কোন ক্রিকেটার তাঁদের টেবিলে খাবার না পায়, আপনার কি মনে হয় তাঁরা জিম্বাবুয়ের হয়ে খেলবে? কখনোই না। আপনাকে আরেকটি কথা বলি, ২০১৭ সালের বেশ কিছু অর্থ এখনো আমি জিম্বাবুয়ে বোর্ড থেকে পাইনি। তাদের আসলে আমাকে পরিশোধ করার মতো অর্থই নেই। হিথ স্ট্রিক বা অন্য যেসব কোচ দল ছেড়েছে, তাঁদের পরিশোধ করার মতো অর্থও নেই।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ ব্যক্তিগত ভাবে কেমন যাচ্ছে আপনার দিন... কর্মব্যস্ততা কি নিয়ে?

টাইবুঃ আমার ছেলেরা যে স্কুলে পড়ে ওখানেই কাজ করি। শীতকালে ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটে আমার, 'তাইবু হাই পারফর্মেন্সে' (তাইবুর নিজস্ব ক্রিকেট কোচিং) কাজ করি। এছাড়া ভারতের বিভিন্ন একাডেমীর সঙ্গে সংযুক্ত আছি আমি। তবে শেষ বছরে আমি অনেক বেশি ব্যস্ত ছিলাম। সামনের বছর আমার অটোবায়োগ্রাফী (আত্মজীবনী) বের হতে যাচ্ছে।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ আপনার আত্মজীবনী সম্পর্কে বলুন...

টাইবুঃ কিপার অফ ফেইথ নামের বই বের হচ্ছে। কিন্তু কে জানে, আমি জীবনে যেসব ধকল পার করে এসেছি তাতে কোন প্রোডাকশন কোম্পানিও (সিনেমা) এর প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে (হাসি...)!