এশিয়া কাপ

ছয় দলের পোস্টমর্টেম

ইনতেছার

ইনতেছার
প্রকাশের তারিখ: 12:37 শনিবার, 08 সেপ্টেম্বর, 2018

আর মাত্র এক সপ্তাহ পরেই শুরু হচ্ছে এশিয়ার ক্রিকেটের সবচাইতে মেগা ইভেন্ট- এশিয়া কাপ। এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের এই লড়াইয়ে অংশ নিবে বাংলাদেশসহ মোট ছয়টি দল।

গুরুত্বপূর্ণ এই আসরে নিজেদের সামর্থ্যের সবটুকুই ঢেলে দিতে চাইবে যেকোনো দল। আর পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে প্রতি দলেই থাকবেন যেকোনো একজন ক্রিকেটার যাকে ঘিরেই মূল পরিকল্পনা থাকবে ওই দলের।

যেমন পাকিস্তানের তুরুপের তাস হতে পারেন তাদের পেস বোলার হাসান আলী। ইতিমধ্যেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের অন্যতম এই নায়ক হুশিয়ার করে দিয়েছেন এশিয়া কাপের দলগুলোকে।

ভারতকে তো বলেই দিয়েছেন, তাদের দশ উইকেট পেলেই ভালো লাগবে তার। এছাড়া আরব আমিরাত পাকিস্তানের হোম কন্ডিশন হিশেবেই পরিচিত। চেনা জানা উইকেট পেলে হাসান আলী কি করেন, সেটাই এখন দেখার।

এছাড়া তরুণ অলরাউন্ডার শাদাব খানের পারফর্মেন্সের দিকে চেয়ে থাকবে দল। আর ম্যাচের সুর বদলে দিতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করতে পারেন ওপেনার ফখর জামান।

এছাড়া অধিনায়ক সরফরাজ খানের ক্ষুরধার নেতৃত্ব অথবা শোয়েব মালিকের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচে সেরাদের কাতারেই থাকবে পাকিস্তান। হতে পারে চ্যাম্পিয়নও! 

রিষ্ট স্পিনে সমৃদ্ধ ভারত। কুলদিপ যাদব এবং যুবেন্দ্র চাহাল-- দু'জনের উপরেই দারুণ ভরসা আছে দলের। লম্বা সময় ধরে ভারতকেও নিজেদের সেরাটা দিয়ে যাচ্ছেন এই দুজন।

যদিও আরব আমিরাতের কন্ডিশন স্পিনারদের অনুকূলে সেভাবে থাকবে না, তাও ভারতের গেম প্ল্যানের অন্যতম কাণ্ডারি এই দুই স্পিনার। আর কোহলিবিহীন ব্যাটিং লাইনআপে ভারতের প্রধান আস্থা অধিনায়ক রোহিত শর্মা।

এছাড়া লোকেশ রাহুল বা শিখর ধাওয়ানের পারফর্মেন্সে গেমপ্ল্যান গড়তে চাইবে এশিয়া কাপের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। এছাড়া হার্ডিক পান্ডিয়ার মতো প্রতিশ্রুতিশীল অলরাউন্ডারও আছেন এই দলে। 

আসরে এবার নতুন যোগ দিচ্ছে হংকং। গ্রুপ পর্বে শক্তিশালী ভারত পাকিস্তানের সঙ্গী তারা। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে এই দুটো দলকে ভড়কে দেওয়ার সামর্থ্য না রাখলেও লড়াকু মানসিকতা আছে হংকংয়ের। 

হংকং ক্রিকেট দলের অধিনায়ক অনসুমান রাথ ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন ওয়ানডে স্ট্যাটাস হারানোর পর তার দলের দেখানোর উচিত ছিল তাদের সামর্থ্য। আর হংকং বাছাইপর্বের বাঁধা অতিক্রম করে সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছে। এবার এশিয়া কাপেও নিজেদের স্পৃহা দেখানোর চেষ্টায় থাকবে তারা। 

আইসিসির প্রতিটি বড় আসরের আগে সেভাবে আলোচিত না হলেও আসরে নিজেদের শক্ত অস্তিত্বের কথা প্রতিবারই জানান দেয় শ্রীলংকা। ওয়ানডে ফরম্যাটে বেশ গোছানো দল তারা। 

গেমপ্ল্যান অনুযায়ী দুই ওপেনার কুশল মেন্ডিস এবং কুশল পেরেরার উপরে অনেকটাই নির্ভর করবে তারা। কেননা এই দুজনের একজন বড় রান পেলেই অর্ধেক কাজ সহজ হয়ে যাবে শ্রীলংকার।

আর বোলিংয়ে আকিলা ধনঞ্জয়ার পাশাপাশি অভিজ্ঞ থিসারা পেরেরা'র দিকেই দায়ভার বেশি থাকবে। শেষ মুহূর্তে চন্দিকা হাথুরুসিংহের গেমপ্ল্যানে যোগ দিয়েছেন অভিজ্ঞ লাসিথ মালিঙ্গা। বলা চলে শেষবার এশিয়া কাপ খেলবেন বিশ্বসেরা এই বোলার।

তাই সামর্থ্যের সবটুকুই উজাড় করে দিবেন তিনি। এদিকে এই আসরে দল হিশেবে খুবই শক্তিশালী বাংলাদেশ। ইনফর্ম ওপেনার তামিম ইকবালের ব্যাটে নির্ভর করছে অনেক কিছু।

আর বোলিংয়ে অধিনায়ক মাশরাফিই হবেন পথ প্রদর্শক। এছাড়া মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিমরা তো ছন্দে আছেনই। তবে দলের এক্স ফ্যাক্টর সাকিব আল হাসান।

সাকিব অবশ্য বলছেন, তিনি ২০-৩০ শতাংশ ফিট, আর অধিনায়ক মাশরাফি বলছেন, সাকিব 'অতটুকু' ফিট থাকলেই হবে! তারমানে বোঝাই যাচ্ছে পুরোপুরি সুস্থ না থাকা সাকিবে কি পরিমাণ বিশ্বাসী অধিনায়ক।

আর এতো বিশ্বাস যার উপরে থাকে, ব্যাটে-বলে তো পরিকল্পনা করা হয় তাকে ঘিরেই!  আসরে স্পিন বৈচিত্র্য নিয়ে হাজির থাকবে রশিদ খানের আফগানিস্তান। 

দলে রিষ্ট স্পিনার, অফ স্পিনার-- সবারই উপস্থিতি আছে, তবে পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে আস্থাবান ব্যাটসম্যান তেমন নেই। আফগানিস্তান নিজেদের কতটুকু মেলে ধরতে পারে সেটাই এখন দেখার।