বেশ কিছুদিন ধরেই বিসিবি পাড়ায় রিশাদ হোসেন নামটা সবার মুখে মুখে। ছয় ফুটের বেশি লম্বা ছেলেটি নাকি ভালোই লেগ স্পিন করে। হাইটের সুবিধার কারনে অতিরিক্ত বাউন্স আদায় করে নিতে পারে ছেলেটি।
আর রিশাদের সহজাত গতি নাকি ব্যাটসম্যানদের অস্বস্তিতে ফেলতে বাধ্য। অনেকে রিশাদের বোলিংয়ের গতি বুঝানোর চেষ্টায় ভারতের লিজেন্ড অনিল কুম্বলের নাম নিয়েছিলেন।
রবি স্পিনার হান্ট প্রোগ্রাম থেকে উঠে আসা নীলফামারীর ছেলে রিশাদ হোসেনের বয়স মাত্র ১৭ বছর। স্পিনার হান্ট দিয়ে জাতীয় পর্যায়ে এসেই নির্বাচকদের চোখে আটকে গেলেন এই তরুন লেগি।
কারনটাও অনুমান করা যায়। পুরো বিশ্ব ক্রিকেট যখন লেগ স্পিনারদের আলাদা মর্যাদা দিচ্ছে, তখন বাংলাদেশ ক্রিকেটে লেগ স্পিনারের হাহাকার। এমন সময়েই উত্থান হলো রিশাদের।
অ্যাকুরেসি, ফ্লাইট ও সহজাত গতিতে ক্রিকেট কর্তাদের মুগ্ধ করতে বেশি সময় নেন নি এই তরুন। তাই তো অনূর্ধ্ব-১৯, হাই পারফর্মেন্স প্রোগ্রামের সিঁড়িতে পা মাড়ানোর আগেই রিশাদের জায়গা হয়ে গেল বাংলাদেশ 'এ' দলে।
একাদশে সুযোগ না পেলেও ততদিনে সবার মুখে পৌঁছে গেছে রিশাদ হোসেনের নাম। সম্প্রতি স্বল্পভাষী তরুন লেগ স্পিনার রিশাদের সাথে কথা বলেছে ক্রিকফ্রেঞ্জি.কম। পাঠকদের সুবিধার্থে সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হল।
প্রশ্নঃ লেগ স্পিনের শুরুটা কখন থেকে?
- লেগ স্পিন প্রথম থেকেই শুরু। ক্রিকেট বলে শুরুটাই হয়েছে লেগ স্পিন দিয়ে। আমি কাউকে অনুকরন করি নি। নিজের ভেতর থেকেই এসেছে সব। বল হাতে পেলেই রিস্ট স্পিনেই বল ঘুরাতে ইচ্ছে করে।
প্রশ্নঃ গতি আপনার বোলিংয়ের বড় সম্পদ, এটা কি ন্যাচারাল নাকি ডেভলপ করতে হয়েছে?
- আমি শুরু থেকেই এই স্পিডে বল করি। আমি স্পিড কমাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু স্পিড কমে না। এই স্পিডেই টার্ন হয় সবসময়। আর আমার হাইটের সুবিধার কারনে বল একটু অতিরিক্ত বাউন্স পায়।
প্রশ্নঃ বোলিংয়ে নতুন কিছু যোগ করার চেষ্টা করছেন?
- আমি বেশি কিছু করার চেষ্টা করছি না। লেগ স্পিনের উপর নিয়ন্ত্রনটা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। লেগ স্পিনটা যদি ঠিকঠাক মত হয়, তাহলে বাকি গুলো সময়ের সাথে সাথে হয়ে যাবে। গুগলি আসে আমার। কিন্তু লেন্থ শতভাগ ঠিক থাকে না। ৫০-৬০% বলে লেন্থ ঠিক থাকে। তবে আশা করি শতভাগ হয়ে যাবে।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে লেগ স্পিনারদের টিকে থাকা একটু কঠিন। আপনি বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছেন?
- আসলে কোচরা লেগ স্পিনারদের খেলানোর সাহস পায় না। কন্ট্রোল করে বোলিং করা একটু কঠিন। দুই একটা বাজে বল হলেই কোচরা নারাজ হয়। এক্ষেত্রে আমাদের অ্যাকুরেসি বাড়াতে হবে। হতাশা কাজ করেই। সিনিয়রা এমন করলে তো কিছুটা খারাপ লাগেই। তবে আমাদের চ্যালেঞ্জটা নিতে হবে। আরও ভালো করতে হবে।
প্রশ্নঃ হুট করে 'এ' দলে সুযোগ পাওয়া নিশ্চয়ই বড় ব্যাপার ছিল...
- শুনে তো প্রথমে বিশ্বাস করি নি। পরে যখন জানলাম সত্যিই সুযোগ পেয়েছি তখন অনেক ভালো লেগেছে। মনে মনে পণ করেছিলাম সুযোগ পেলে ভালো করব।
প্রশ্নঃ এখন অনেকেই আপনাকে নিয়ে বড় পরিকল্পনা করছে। সবার আগ্রহের কেন্দ্রে থাকাটা অবশ্যই বড় ব্যাপার।
- তা ঠিক, অনূর্ধ্ব-১৯ দল, 'এ' দলের আগেই জাতীয় দল নিয়ে কথা হচ্ছে। এটা অনেক বড় ব্যাপার।
প্রশ্নঃ 'এ' দলের স্কোয়াডে জাতীয় দলের অনেকেই ছিল। তারা আপনার বোলিং দেখে কি বলেছে?
- উনারা অনেক সাপোর্ট করেছেন। উনারা বলেছে ভালো করতে থাক, সামনে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
প্রশ্নঃ সামনে তো ঘরোয়া মৌসুম শুরু হতে যাচ্ছে, পরিকল্পনা কি?
- বিপিএল, এনসিএল, বিসিএল, যেখানেই সুযোগ পায় না কেন আমি যেটা পারি সেটা করে যেতে চেষ্টা করব।
প্রশ্নঃ ব্যাটিং নিয়ে কাজ করতে দেখলাম আপনাকে...
- আমি ব্যাটিং সাধারনত করি না, সব সময় বোলিং, ফিটসেন ও ফিল্ডিং নিয়েই কাজ করি। এখন এখানে টুকটাক ব্যাটিং করার সুযোগ হচ্ছে।