বিপিএল ২০২৪

রংপুরকে হারিয়ে ফাইনালে কুমিল্লার সঙ্গী বরিশাল

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
Publish Date: 22:07 Wednesday, February 28, 2024

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

মাঠ ও মাঠের বাইরের আলোচনার ফলে বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারের উত্তাপটা ছিল একটু বেশীই। হাই ভোল্টেজ ম্যাচের জয়ী দলই জায়গা করে নেবে ফাইনালে। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি ফরচুন বরিশাল ও রংপুর রাইডার্স। আরও সহজ করে বলতে লড়াইটা ছিল সাকিব আল হাসান বনাম তামিম ইকবালের। আর ফাইনালে জায়গা করে নেয়ার ম্যাচে রংপুরকে ৫ উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিপিএল ফাইনালে জায়গা করে নিল ফরচুন বরিশাল।

এদিন জয়ের জন্য ১৫০ রানের লক্ষ্য পায় বরিশাল। ব্যাটিংয়ে নেমে মেহেদি হাসান মিরাজ ও তামিম ইকবালের ব্যাটে শুরুটা দেখে শুনেই করে দলটি। দেখে শুনে স্কোরবোর্ডে রান যোগ করতে থাকলেও ইনিংসের চতুর্থ ওভারে তামিমকে বিদায় করেন আবু হায়দার রনি। একই ওভারের পঞ্চম বলে মেহেদি হাসানকে লেগ বিফরের ফাঁদেও ফেলেন এই পেসার। 

জোড়া উইকেট হারালেও বরিশালকে চাপে পড়তে দেননি সৌম্য সরকার ও মুশফিকুর রহিম। দুজনকে মিলে পাওয়ার প্লে পার করার পর দলকে টেনে নিতে থাকেন। তবে ১০তম ওভারে মোহাম্মদ নবিকে সামনে এগিয়ে মারতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হন সৌম্য। এই দুজন গড়েন ৪৭ রানের জুটি। সঙ্গী হারালেও কাইল মেয়ার্সকে নিয়ে দলকে ১০০'র ঘরে নিয়ে যান মুশফিক।

নিজেও হাঁটতে থাকেন হাফ সেঞ্চুরির পথে। তবে ১৫ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেলে ফজলহক ফারুকির বিপক্ষে চড়াও হতে গিয়ে উইকেট ছুঁড়ে দেন মায়ার্স। এরপর ক্রিজে এসে মুশফিককে নিয়ে দলকে জয়ের দিকে টেনে নিতে থাকেন ডেভিড মিলার। শেষের দিকে এই দুই ব্যাটার মিলে দলকে হেসেখেলে জয়ের বন্দরে নিয়ে যায়। দলীয় ১৪৬ রানে সাকিবকে ছক্কা হাঁকিয়ে বরিশালের জয় নিশ্চিত করেন মিলার। মুশফিক অপরাজিত থাকেন ৪৭ রানে। 

এর আগে টসের সময় আমের সোহেলের প্রশ্নের জবাবে নুরুল হাসান সোহান জানিয়েছিলেন, প্রথম ৬ ওভার তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ সেই ৬ ওভারেই পুরো এলোমেলো হয়ে গেল রংপুর। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও কাইল মেয়ার্সের সুইংয়ের সঙ্গে পেরে উঠতে পারলেন না রংপুরের ব্যাটাররা। টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় তারা।

সাইফউদ্দিনের গুড লেংথে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে থাকা মুশফিকের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন শেখ মেহেদী। একই ওভারে সাকিব আল হাসানকেও হারায় রংপুর। ডানহাতি এই পেসারের লেংথ ডেলিভারিতে ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে এজ হয়ে মুশফিকের গ্লাভসেই ক্যাচ দিয়েছেন। সাকিব এদিন ফিরেছেন মাত্র ১ রানে। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে রনি তালুকদারকেও ফেরায় বরিশাল।

মেয়ার্সের অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট পিচ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে ডেভিড মিলারকে ক্যাচ দিয়েছেন। রংপুরের ওপেনার আউট হয়েছেন ৮ রানে। এরপর নিশাম ও নিকোলাস পুরান মিলে রংপুরকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত পারেননি। পুরানকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন মিরাজ। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে টাইমিংয়ে গড়বড় করে সৌম্যর হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৩ রান করা পুরান।

দারুণ শুরু করা নিশামও ফিরেছেন একটু পরই। জেমস ফুলারের শর্ট ডেলিভারিতে পুল করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে মুশফিকের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন। গত ম্যাচে অপরাজিত ৯৭ রানের ইনিংস খেলা নিশাম এদিন আউট হয়েছেন ২৮ রানে। এরপর দ্রুতই ফিরেছেন সোহান ও মোহাম্মদ নবি। তাতে মাত্র ৭৭ রানে ৭ উইকেট হারায় রংপুর। এমন সময় একবারের চ্যাম্পিয়নদের হাল ধরেন আবু হায়দার ও শামীম। 

এক প্রান্ত থেকে রীতিমতো তাণ্ডব চালাতে থাকেন শামীম। ওবেদ ম্যাকয়ের করা ১৯তম ওভারে তিন ছক্কা ও দুই চারে ২৬ রান নিয়েছেন। এদিকে মাত্র ২০ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত শামীম অপরাজিত ছিলেন ২৪ বলে ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন। আবু হায়দার অপরাজিত ছিলেন ১২ রানে। তাদের দুজনের ৭২ রানের জুটিতে ১৪৯ রানের পুঁজি পায় রংপুর।